
সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | বিশ্ব সংবাদ » যুদ্ধের ছায়ায় হরমুজ: ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ও আমাদের অনিশ্চিত বিশ্ব
যুদ্ধের ছায়ায় হরমুজ: ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ও আমাদের অনিশ্চিত বিশ্ব
কাজল.ঃ
পরমাণু আক্রমণ, স্লিপার সেল আতঙ্ক, এবং মানবতার প্রশ্ন-একটি ভূরাজনৈতিক সংঘাত কীভাবে রূপ নিচ্ছে বৈশ্বিক সঙ্কটে।
পর্দার আড়ালে যুদ্ধ: শুরুটি
২২ জুন, যুক্তরাষ্ট্রের বোমা হামলায় ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনার ধ্বংসের খবর যেন বিদ্যুতের মতো ছড়িয়ে পড়ে। ট্রাম্প প্রশাসনের ‘বাংকার বাস্টার’ বোমার ঘোষণা-আর তারপরে আয়াতুল্লাহ খামেনেই-এর প্রতিক্রিয়া, “আমরা আত্মরক্ষার সব অধিকার সংরক্ষণ করি”-দু’পক্ষের দিক থেকেই স্পষ্ট বার্তা দেয়: যুদ্ধ থেমে নেই, সে কেবল রূপ বদলাচ্ছে।সন্ত্রাসের সম্ভাব্য ছায়া: স্লিপার সেল সক্রিয়?জটিলতা বাড়িয়েছে বিশ্লেষকদের আশঙ্কা-ইরান তার সন্ত্রাসী ‘স্লিপার সেল’ নেটওয়ার্ক সক্রিয় করতে পারে। এসব গোপন সংগঠন পশ্চিমা দেশগুলোতে বসবাসকারী ইরানি সহানুভূতিশীলদের অন্তর্ভুক্ত করতে পারে বলে ধারণা। যুদ্ধের ময়দান ছেড়ে এ যেন শহরের অলি-গলিতে শঙ্কার ছায়া বিস্তার।
অর্থনীতি ও জ্বালানি নিরাপত্তা: হুমকির মুখে বিশ্ব
হরমুজ প্রণালী দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২১ মিলিয়ন ব্যারেল তেল পরিবাহিত হয়। যুদ্ধের উত্তেজনা এই জ্বালানি প্রবাহ থামিয়ে দিতে পারে, যার প্রভাব পড়বে টোকিও থেকে টরন্টো অবধি। এর পরিণতি-তেলের দাম বৃদ্ধি, বাজারে অস্থিরতা, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক চাপ।
মানবতা: যুদ্ধে কে হারায় বেশি?
প্রতিটি বোমা হামলা মানে শুধু সামরিক ক্ষয়ক্ষতি নয়, মানে-পিতৃহীন শিশু, উচ্ছেদ হওয়া পরিবার, গৃহহীন বয়স্ক মানুষ। যুদ্ধ কখনও বিজয় আনে না; সে কেবল মানুষকে আরও দূরে সরিয়ে দেয় একে অপরের থেকে।
আন্তর্জাতিক আইন ও কূটনীতি: কোথায় দাঁড়াচ্ছে ন্যায়?
ইরান অভিযোগ করেছে, এই হামলা আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের পরিপন্থী। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপকে বৈশ্বিক নিরাপত্তার নামে সঠিক বলে দাবি করছে। এই দোদুল্যমান অবস্থায় জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বিশ্বের অন্য শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর দায়িত্ব এখন আরও বেশি।
শেষ কথা: আমরা কোন পথে?বিশ্ব এখন এক চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে-একদিকে যুদ্ধ, অন্যদিকে শান্তিপূর্ণ সমঝোতা। আমরা কি আরেকটি রক্তপাতময় অধ্যায় রচনা করব, নাকি ইতিহাসে জায়গা করে নেব একটি কূটনৈতিক বিজয়ে?এখনই সময়-বুদ্ধি, বিবেক ও মানবিকতা দিয়ে সঠিক পথ বেছে নেওয়ার।