
বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » “সাম্রাজ্যবাদের পুতুল নয়, প্রকৃত জনগণের সরকার চাই”-বামপন্থী নেতা মোশরেফা মিশু
“সাম্রাজ্যবাদের পুতুল নয়, প্রকৃত জনগণের সরকার চাই”-বামপন্থী নেতা মোশরেফা মিশু
আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই — বামপন্থীরা কখনোই ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে ক্ষমতায় বসায়নি, বসাতেও পারে না। যারা এই অপপ্রচার চালাচ্ছেন, তারা আসলে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাতে চাইছেন।
২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টে দেশের তরুণ–ছাত্র–জনতার তীব্র গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শাসনের পতন ঘটে। শেখ হাসিনা গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছাড়েন। কিন্তু এর পরপরই, ৫ আগস্ট বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিছু নেতার মুখে শুনলাম—ড. ইউনুসকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে। তখনই আমরা প্রশ্ন তুলেছিলাম—কে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কোন জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে নিয়েছে?
বামপন্থীরা স্পষ্টতই জানে: ড. ইউনুস কোনোভাবেই জনগণের পক্ষে দাঁড়ানো নেতা নন। তাঁর অতীত, তাঁর ভূমিকা, তাঁর আন্তর্জাতিক অবস্থান—সবকিছুই সাম্রাজ্যবাদী অর্থনৈতিক শক্তির সঙ্গে যুক্ত। তিনি দারিদ্র্য বিমোচনের নামে মুনাফাভিত্তিক মাইক্রোক্রেডিটের যে জাল বিস্তার করেছেন, তা শ্রমজীবী মানুষকে আরও ঋণের ফাঁদে ফেলেছে।
এই বাস্তবতায়, তাঁকে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে বসানো মানে জনগণের আন্দোলনের আত্মত্যাগকে বিক্রি করা।
তাহলে প্রশ্ন আসে—বামপন্থীরা কেন প্রতিবাদ করেনি?
কারণ আমরা তখন রক্তপাত চাইনি। আমরা চেয়েছিলাম আন্দোলনের অর্জন যেন অরাজকতা বা গৃহযুদ্ধে পরিণত না হয়। প্রতিপক্ষ তখন সংগঠিত ও সশস্ত্র ছিল। সেই পরিস্থিতিতে প্রগতিশীল শক্তির ওপর দমন নেমে আসা নিশ্চিত ছিল। তাই আমরা সাময়িক নীরবতা অবলম্বন করি, যাতে দেশ আবার অস্থিরতার দিকে না যায়।
কিন্তু নীরবতা মানে সম্মতি নয়।
আজ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে—ইউনুস সরকারের কর্মকাণ্ড দেশের বন্দর, সম্পদ ও নীতি বিদেশি স্বার্থের কাছে সমর্পণের পথে এগোচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদী হস্তক্ষেপ আরও গভীর হচ্ছে, আর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক শক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এটা আমরা মেনে নিতে পারি না, নেবও না।
আমরা স্পষ্ট করে জানাতে চাই:
বাংলাদেশের বামপন্থী, শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র, নারী ও দেশপ্রেমিক জনগণ একসাথে নতুন গণআন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে—যে আন্দোলন সাম্রাজ্যবাদ, মৌলবাদ, যুদ্ধাপরাধী ও পুঁজিবাদী লুটেরাদের বিরুদ্ধে।
আমরা চাই একটি প্রকৃত স্বাধীন, সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ—যেখানে রাষ্ট্রের সম্পদ জনগণের মালিকানায় থাকবে, আর সরকারের ক্ষমতা আসবে শ্রমজীবী মানুষের ম্যান্ডেট থেকে, বিদেশি পরামর্শ থেকে নয়।
দেশের মানুষ আর কোনো ‘বিশ্বস্ত অনুচর’ নয়, প্রকৃত গণপ্রতিনিধির হাতে নেতৃত্ব চায়।
আমরা জনগণের সরকার চাই, পুতুল সরকার নয়।
— মোশরেফা মিশু
সাধারণ সম্পাদক, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি
সভাপতি, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐ