শিরোনাম:
ঢাকা, বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮ ভাদ্র ১৪৩২

Daily Pokkhokal
মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » অপরাধ | অর্থনীতি » বিআইডব্লিউটিএ’র দুর্নীতিবাজ পরিচালক শাজাহান কি আইনের ঊর্ধ্বে?
প্রথম পাতা » অপরাধ | অর্থনীতি » বিআইডব্লিউটিএ’র দুর্নীতিবাজ পরিচালক শাজাহান কি আইনের ঊর্ধ্বে?
৫৬ বার পঠিত
মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বিআইডব্লিউটিএ’র দুর্নীতিবাজ পরিচালক শাজাহান কি আইনের ঊর্ধ্বে?

---


বিশেষ প্রতিনিধিঃ


নিজ নামে, স্ত্রী লিমা তাবাসসুমের নামে ও নিকট আত্মীয়ের নামে সাভার, কেরানীগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসা-বানিজ্যসহ ফ্ল্যাট, জমিজমা, দোকানপাট ও বহুতল একাধিক ভবন রয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য দুইশত কোটি টাকার উপরে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) যেন টাকার খনি। এই প্রতিষ্ঠানে যারাই চাকুরী করেন তারাই কোটিপতি বনে যান। চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারি থেকে শুরু করে প্রকৌশলী, প্রধান প্রকৌশলী ও পরিচালকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা যে যেভাবে পারছেন প্রতিষ্ঠানটির রক্ত চুষে খাচ্ছেন। তারা একেকজন প্রায় ১০/১২ বছর বা তারাও অধিক সময় ধরে বিআইডব্লিউটিএর প্রধান কার্যালয়ের এক একটি শাখায় কর্মরত থাকার সুবাদে অনিয়াম ও দুর্নীতি ও নিজস্ব সিন্ডিকেট ঠিকাদারদের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ব্যবসার মাধ্যমে কাড়ি কাড়ি টাকা হাতিয়ে নিয়ে দেশে-বিদেশে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ঘুষ অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিআইডব্লিউটিএ এর

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আস্থাভাজন ও সুবিধাভোগী বিআইডব্লিউটিএর নৌসংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের পরিচালক মোঃ শাহজাহান সিন্ডিকেট তৈরি করে ব্যাপক দূর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে হয়ে উঠেছিলেন বেপরোয়া। তার সিন্ডিকেট বিভিন্ন নামে-বেনামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুলে শতশত কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। এমনকি ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তবে ৫-ই আগষ্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর কিছুদিন গা ঢাকা দিলেও সম্প্রতি ঘুরে দাঁড়িয়েছেন শাহজাহান। এমনকি বর্তমানে কিছু প্রভাবশালীকে অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে পূর্বের মতোই চালিয়ে যাচ্ছেন তার অপকর্ম। এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে দুদকে একাধিক অভিযোগ জমা হলেও ব্যবস্থা নেই শাহজাহানের বিরুদ্ধে। দূদক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বিআইডব্লিউটিএর সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারির মাঝে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। এমনকি এ ধরনের অপরাধী অপকর্মের মাধ্যমে শতকোটি টাকার মালিক হয়েও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় নিন্দার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পরিচালক শাহজাহান ও অতিরিক্ত পরিচালক(নাবিক) মোঃ আব্দুর রহিম মোটা অংকের অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে বিআইডব্লিউটিএর কর্তৃপক্ষের অধীনে সিএন্ডপি আরিচা শাখায় জ্বালানি সরবরাহের জন্য গত ১২/০৯/২৪ ইং তারিখে মেসার্স পটুয়াখালী এজেন্সি ৩৫ নং সিরাজুদ্দৌলা রোড নামক প্রতিষ্ঠানটিকে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের জন্য ডিজেল, মবিল, কেরোসিন তেল, অকটেন, পেট্রোল, গ্রীজ, হাইড্রোলিক ওয়েল ইত্যাদি ১,৫৯,৪৮,৭৩৫/- (এক কোটি উনষাট লাখ আটচল্লিশ হাজার সাতশত পঁয়ত্রিশ) টাকায় জ্বালানি সরবরাহ করার কার্যাদেশ (NOA) প্রদান করেছেন। ০৩/১১/২০২৪ তারিখে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ তারিখে আংশিক মাসের জন্য জাহাজ ও পল্টুন সমূহে বিলের জন্য অনুমোদন পাঠানো হয়। পরবর্তীতে ১১/১১/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে ঐ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিআইডব্লিউটিএর, আরিচা অফিসে কমিটির স্বাক্ষর নিয়ে ৯ লাখ ২৯ হাজার ৮৮৬ টাকার বিল দাখিল করেন যা ঢাকা প্রধান কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে অবৈধ অর্থ লেনদেনের বিনিময়ে অনুমোদন করেছে হিসাব বিভাগ। অতঃপর আরিচা অফিস বিলটি চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করেছে। বর্তমানে আই বাসের মাধ্যমে বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক হিসাব দপ্তর থেকে ঐ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে সরাসরি বিল জমা হচ্ছে। অথচ দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী জ্বালানি সরবরাহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আরিচা নৌ-বন্দর এলাকায় কোন অফিস নেই। এছাড়া জ্বালানি সরবরাহকারী ট্যাংক, লরি, ট্যাংকার ও মজুদকৃত গুদাম কোন কিছুই তাদের নেই। এছাড়াও বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক জাহাজ বাদ্রিং করার কোন অনুমোদন নেই। অপরদিকে কমিটির উপস্থিতিতে বিআইডব্লিউটিএর আরিচা শাখায় তিনজন অফিসারসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন ও মাস্টার ড্রাইভারদের উপস্থিতিতে জ্বালানি গ্রহণের সময় লগ, ইনভয়েস স্বাক্ষর করার কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোন লোকজনই সরেজমিনে কখনোই উপস্থিত থাকেন না। শুধুমাত্র বিআইডব্লিউটিএর অনুমোদিত অফিসারগণ কোন প্রকার যাচাই-বাছাই না করেই অবৈধ অর্থের বিনিময়ে অফিসে বসেই লগ, ইনভয়েস স্বাক্ষর করে যাচ্ছেন। এসব বিষয়ে ইতিপূর্বে তিনবার তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও এতে কোন প্রকার সুরাহা হয়নি। তদন্ত কর্মকর্তার সাথে পরস্পর যোগসাজশে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তদন্তের প্রাক্কালে জাহাজ নিয়ে এসে আবার ঐদিনই চলে যায়। অপর একটি অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শাহজাহানের যোগ্যতা না থাকলেও বিআইডব্লিউটিএ-তে অবৈধভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন। এমনকি অবৈধভাবে একাধিক প্রমোশনও পেয়েছেন তিনি। এছাড়া শাহজাহানের নিজ এলাকার নিকটতম আত্নীয় ঠিকাদার মোঃ বাহারকে দিয়ে একাধিক নামে-বেনামে প্রতিষ্ঠান তৈরি করে ঐ প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে বিল তৈরি করে লুটপাট করে চলেছেন। কলসি বয়া একটি প্রজেক্ট তৈরি করে তানিয়া এন্টারপ্রাইজের নামে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা যার বর্তমানে কোন অস্তিত্ব নেই। অথচ এই কলসি বয়াগুলো ১০ বছরের সিকিউরিটি রয়েছে। বয়া বিকন বাতি যা প্রজেক্ট তৈরি করে বিদেশ থেকে আমদানি করে থাকেন বাহারের কোম্পানির নামে। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে বাহারের কোম্পানির নামে ভূয়া বিল বানিয়ে লুটপাট করেন সরকারি অর্থ। আখি এন্টারপ্রাইজের নামে টিপি-১৩৫ ভূয়া বিল ৭,৭২,০০০/- (সাত লাখ বাহাত্তর হাজার) টাকা। তানিয়া এন্টারপ্রাইজের নামে এমপি-১২ এর ভূয়া বিল ৬,৮১,০০০/- (ছয় লাখ একাশি হাজার) টাকা। তানজিল ডগ ইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসের নামে টিপি-৮০ এর ভূয়া বিল ৭,১৩,৩৫২/- (সাত লাখ তের হাজার তিনশত বায়ান্ন) টাকা ও টিপি-১৭৩ এর ৯,৩৬,০০০/- (নয় লাখ ছত্রিশ হাজার) টাকা। তানিয়া এন্টারপ্রাইজের নামে স্পিডবোট-১ এর মেরামতের ভূয়া বিল ৮,৮৪,১০০/- (আট লাখ চুরাশি হাজার একশত) টাকা। আলিফ এন্টারপ্রাইজের নামে টিপি-৪৫ এর ভূয়া বিল ৪,৯৮,১৫১/- (চার লাখ আটানব্বই হাজার একশত একান্ন) টাকা। পি সি পোল মার্কা যা বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়, এসব মার্কা কোন হিসাব দিতে হয় না শুধুমাত্র নদীর মাটি পলি ভেঙ্গে নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এমন কথা বলে শাহজাহান প্রত্যেক বছরের বাজেটে কয়েক কোটি টাকা লোপাট করে থাকেন। এভাবেই শাজাহান সরকারি কোষাগার থেকে হরিলুট করেছেন শতশত কোটি টাকা। নিজ নামে, স্ত্রী লিমা তাবাসসুমের নামে ও নিকট আত্মীয়ের নামে সাভার, কেরানীগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসা-বানিজ্যসহ ফ্ল্যাট, জমিজমা, দোকানপাট ও বহুতল একাধিক ভবন রয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য দুইশত কোটি টাকার উপরে। শাহজাহানের কোটি কোটি টাকা লোপাট ও আনুমানিক দুইশত কোটি টাকার মালিক হওয়ার ব্যাপারে দূদকে একাধিক অভিযোগের পরেও ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় অপরাধ বিশ্লেষকদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, দূদক ব্যবস্থা না নেয়া রহস্যজনক। দূদকের উচিত বিষয়টি আমলে নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এ ধরনের অপরাধী পার পেলে দূর্নীতি উৎসাহিত হবে। বিভিন্ন অভিযোগের ব্যাপারে শাহজাহানের মুটো ফোনে ফোন করলে তিনি পরিচয় পেয়ে ফোন রেখে দেন। পরবর্তীতে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি। একাধিক অভিযোগের ব্যাপারে জানতে দূদক কার্যালয়ে যোগাযোগ করলে তারা দুই/তিন পর বিস্তারিত জানাবেন বলে প্রতিবেদককে জানান।



এ পাতার আরও খবর

ডাকসুর নারী প্রার্থীকে গণধর্ষণের হুমকি, অভিযুক্ত শিবির নেতা আলী হোসেন ডাকসুর নারী প্রার্থীকে গণধর্ষণের হুমকি, অভিযুক্ত শিবির নেতা আলী হোসেন
কুড়িগ্রামের সাংবাদিক রিগানকে নির্যাতন: সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীনকে জেল হাজতে প্রেরণ কুড়িগ্রামের সাংবাদিক রিগানকে নির্যাতন: সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীনকে জেল হাজতে প্রেরণ
মালয়েশিয়ায় অর্থপাচারের মাস্টার মাইন্ড কুখ্যাত নূর আলী মালয়েশিয়ায় অর্থপাচারের মাস্টার মাইন্ড কুখ্যাত নূর আলী
গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী বাংলাদেশ: চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও মব সংস্কৃতির পুনরুত্থান-ড. কামাল হোসেন গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী বাংলাদেশ: চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও মব সংস্কৃতির পুনরুত্থান-ড. কামাল হোসেন
থেমে নেই প্রধান প্রকৌশলী (মেরিন)আতাহার’র কমিশন বাণিজ্য থেমে নেই প্রধান প্রকৌশলী (মেরিন)আতাহার’র কমিশন বাণিজ্য
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তিন দলের বৈঠক: কূটনীতি না কি গোপন রাজনৈতিক সমন্বয়? পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তিন দলের বৈঠক: কূটনীতি না কি গোপন রাজনৈতিক সমন্বয়?
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের রায় ৪ সেপ্টেম্বর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের রায় ৪ সেপ্টেম্বর
বিশ্লেষণ প্রতিবেদন পাকিস্তানি সংবাদপত্রে ‘পূর্ব পাকিস্তান’ পুনরুদ্ধারের দাবি: বিশ্লেষণ প্রতিবেদন পাকিস্তানি সংবাদপত্রে ‘পূর্ব পাকিস্তান’ পুনরুদ্ধারের দাবি:
জামিন, গ্রেফতার ও প্রশাসনিক পক্ষপাতিত্ব নিয়ে উত্তাল রাজনীতি — পদত্যাগ দাবি চার শীর্ষ কর্মকর্তার জামিন, গ্রেফতার ও প্রশাসনিক পক্ষপাতিত্ব নিয়ে উত্তাল রাজনীতি — পদত্যাগ দাবি চার শীর্ষ কর্মকর্তার

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)