
মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
প্রথম পাতা » রাজনীতি » অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার ব্যর্থতা ও অরাজকতার ছায়া জনবিচ্ছিন্নতার বিপদে বাংলাদেশ
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার ব্যর্থতা ও অরাজকতার ছায়া জনবিচ্ছিন্নতার বিপদে বাংলাদেশ
ঢাকা, ১৫ জুলাই ২০২৫ - অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে রাষ্ট্র সংস্কারের যে উচ্চাকাঙ্ক্ষী যাত্রা শুরু হয়েছিল, তা আজ জনবিচ্ছিন্নতা, সিদ্ধান্তহীনতা এবং ক্রমবর্ধমান অরাজকতার ছায়ায় ঢেকে যাচ্ছে। বিশিষ্টজনেরা সতর্ক করছেন: “এই সরকারের সকল সংস্কার আজ হোক, কাল হোক-ভেস্তে যাবে।” কারণ, জনগণের সঙ্গে সংযোগহীন কোনো প্রশাসনিক কাঠামো অতীতে টেকেনি, ভবিষ্যতেও টিকবে না।
সংস্কারের নামে প্রতিশ্রুতি, বাস্তবে স্থবিরতা
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর ছয়টি খাতে সংস্কার কমিশন গঠিত হলেও বাস্তবায়নের গতি প্রশ্নবিদ্ধ।
আহত বিপ্লবীদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন এখনও অসম্পূর্ণ
নির্বাচনের রূপরেখা অনিশ্চিত ,জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে শুদ্ধি অভিযান থমকে আছে
বিশ্লেষকরা বলছেন, “সংস্কার যদি জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া হয়, তা কেবল কাগজে থাকবে-জমিনে নয়।”
অরাজকতা ও নিরাপত্তাহীনতা: আতঙ্কে সাধারণ মানুষ
গত কয়েক সপ্তাহে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও দখলবাজির ঘটনা বেড়েছে। জাতীয় পার্টির মহাসচিব কাজী মামুন বলেন, “দেশ অন্ধকারে আটকে পড়েছে। জনগণের জানমাল নিরাপদ নয়।”
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
পুলিশ বাহিনী এখনও বিপ্লবের ট্রমা কাটিয়ে উঠতে পারেনি
আদালত ও প্রশাসনে ফ্যাসিস্ট প্রেতাত্মাদের প্রভাব রয়ে গেছে
জনবিচ্ছিন্নতা: সরকারের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে ছাত্র-জনতার প্রতিনিধি থাকলেও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংলাপ, অংশগ্রহণ বা প্রতিনিয়ত যোগাযোগের অভাব প্রকট।
বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণহীন
চাকরির বাজার স্থবির
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয়হীনতা
আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপ তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, “জনগণের সমর্থন ধরে রাখতে প্রয়োজন ‘দ্রুত সাফল্য’।”
ভবিষ্যতের গতিপথ: দলবিভাজন ও মতবিভ্রান্তি রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন দলে দলে মতবিভাজন, সংজ্ঞাহীন জোট, এবং নেতৃত্বহীনতা স্পষ্ট।
সংস্কার বিলম্বিত হলে জনগণের হতাশা বাড়বে
রাজনৈতিক শূন্যতা নতুন অস্থিরতা তৈরি করবে
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গ্রহণযোগ্যতা হারাবে, যদি বিচার ও প্রশাসন মব বিচারের পথে চলে
বিশিষ্টজনেরা বলছেন, “এই সরকার যদি জনগণের মাথায় সংস্কার চাপিয়ে দেয়, তা টিকবে না-অতীতেও টেকেনি, ভবিষ্যতেও টিকবে না।”
সম্পাদকীয় মন্তব্য
বাংলাদেশ আজ এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। অন্তর্বর্তী সরকার যদি জনগণের সঙ্গে সংযোগ না গড়ে, যদি সংস্কার হয় জনবিচ্ছিন্ন কাগজে কলমে, তাহলে তা টিকবে না। অরাজকতা রোধ করতে হলে দরকার- জনসম্পৃক্ত সংস্কার প্রক্রিয়াস্বচ্ছ, সময়নির্ধারিত নির্বাচন রূপরেখা আহত বিপ্লবীদের পূর্ণ পুনর্বাসন ও স্বীকৃতি
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জবাবদিহিতা ও সংস্কার
এই মুহূর্তে প্রয়োজন নেতৃত্বের সাহস, প্রশাসনিক দক্ষতা এবং জনগণের সঙ্গে সত্যিকারের সংলাপ। নইলে ইতিহাসের এই অধ্যায়ও ব্যর্থতার খাতায় লেখা হবে।