
রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » বাংলাদেশের সংকট: এখনই সময় অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্ব ছাড়ার
বাংলাদেশের সংকট: এখনই সময় অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্ব ছাড়ার
ক্ষ্যাপা পাগলের সত্য বচন ঃমত ভিন্নমত ঃ
বাংলাদেশ এখন এক অতিষ্ঠ উত্তরে দাঁড়িয়ে আছে-অপরাধ, অরাজকতা ও অনিশ্চয়তায় পলল রেভার্টিভ গতি। রাজনৈতিক বিশ্বাসঘাতকতা, সাংবিধানিক সংকট আর আন্তর্জাতিক অবিশ্বাসের কোলাহলে দেশ এগিয়ে যেতে পারছে না। এই অস্থিরতায় একমাত্র সমাধান হল অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার থেকে অবিলম্বে পদত্যাগ, যাতে দলমত নির্বিশেষে নতুন, গণতান্ত্রিক পাটাতনে দেশকে ফের প্রতিষ্ঠিত করা যায়।
প্রথমত, রাজনৈতিক দলে ও জনমতের সঙ্গে ইউনূস সরকারের সংযোগ প্রায় নেই বলে ধারণা বিরোধী শিবিরে প্রবল। ভোটে নয়, রাজপথের চাপেই ক্ষমতায় আসা এই অস্থায়ী সরকার ঘরের বাইরে দলগুলোর অংশগ্রহণ আমন্ত্রণ জানাতে ব্যর্থ হয়েছে। ক্ষমতা যখন কেন্দ্রীয় আর সক্রিয় প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো নীরব কিংবা বিচ্ছিন্ন, তখন জাতীয় ঐক্য ও জনমনোবলের যেকোনো ধারাই সংকুুচিত হয়। এর ফলশ্রুতিতে মব সহিংসতা-এনসিপি, জামায়াত-হেফাজতের ছাত্রদলসহ-ব্রতী হয়ে উঠেছে, যা সহজেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে উড়িয়ে দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে।
দ্বিতীয়ত, সাংবিধানিক দিক থেকে সরকার-ব্যবস্থার ন্যায্যতা প্রশ্নবিদ্ধ। সংবিধানের মৌলিক কাঠামো থেকে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী সংসদ আনা হয়নি, ফলে কোনো সাংবিধানিক আলোচনা-সংস্কারের ভিত্তি তৈরি হয়নি। আইনের শাসন ও বিচারব্যবস্থার স্বায়ত্তশাসন অগ্রাধিকার পায়নি, আর স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনও হয় নি। যখন ক্ষমতার উৎস হতে জনগণের অংশগ্রহণ সরাসরি বিহীন, তখন যে কোনও নীতিনির্ধারণই হয়ে ওঠে অস্থায়ী কায়দায় বাধ্যতামূলক এবং অপূর্ণ।
আরেকটি তীব্র বাস্তবতা হলো আন্তর্জাতিক মহলের সন্দেহ আর অবিশ্বাস। সরকার পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপীয় মঞ্চে গণতান্ত্রিক উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, আর প্রতিবেশী ভারত “সন্ত্রাসের স্বাভাবিকীকরণ” অভিযোগ করে আস্থা দ্বিগুণ দেয়নি। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে অজ্ঞাতসারে অংশগ্রহণ, পশ্চিমা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সঙ্গে দূরত্ব-এসব কাজ করে যাচ্ছে দেশকে দ্বিধাগ্রস্ত ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে। বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশ একদফা অর্জিত সম্মান হারাতে বসেছে, যেখানে স্থিতিশীলতা ও স্বচ্ছতার ওপরই নির্ভরশীল সাধারণ জনগণ, বিনিয়োগ এবং উন্নয়ন সহযোগিতা।
একের পর এক সংকট মোকাবেলায় রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও বুদ্ধিজীবীরা এখন দ্রুত যুক্তরাজ্য, ভারত, চীন বা পশ্চিমা ফোরামের অনুশাসন নয়; নিজেদের মধ্যে জাতীয় সংলাপ গড়ে তুলতে হবে। অবিলম্বে নির্বাচন-যজ্ঞের জন্য একটি সত্যনিষ্ঠ, নিরপেক্ষ নির্বাচনী কমিশন গঠন ও সংবিধান সংস্কার কমিটি গঠন জরুরি। উপযোগী সময়ের মধ্যে স্থানীয় নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করলে নতুন সরকার অর্জন করবে প্রয়োজনীয় গণআশিঢ়, বিধায় জনমনোবল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে।
বাংলাদেশের পথ আর ধাক্কা খাওয়ার অবকাশ নেই। ইতিহাস সাক্ষ্য, সংকট থেকে উত্তরণের জন্য প্রথাগত দলবদ্ধতা নয়, বরং পরিচ্ছন্ন নেতৃত্ব-যে নেতৃত্বই হোক, ক্ষমতার উৎস হবে জনগণ-সেই কাঠামো গড়তে হয়। এজন্য অধ্যাপক ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বের আমলপত্র জমা দেয়া এখনই অবশ্যম্ভাবী। পদত্যাগের মধ্য দিয়ে তাকে নিজ নামে আর দেশের গণতন্ত্রে ঐতিহাসিক অবদান রাখতে হবে, অন্যথায় অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ভার বহন দেশ আর সহনীয় নয়।
শেষে, বিএনপি, জাসদ রব বিপ্লবি বাম জোট , শেখ পরিবার মাইনাস আওয়ামী লিগ থেকে শুরু করে সকল গণতান্ত্রিক দল, নাগরিক সমাজ এবং বুদ্ধিজীবীদের প্রতি আহ্বান-দলীয় স্বার্থ ভুলে জাতীয় ঐক্যের পতাকা উঁচিয়ে দিন। একসঙ্গে দাঁড়িয়ে দেশে গণতন্ত্রের নতুন ভোর, নিশ্চিত করুন যে বাংলাদেশ আর কখনো অন্ধকারের পথে ফিরে যাবে না।