
সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | রাজনীতি » সামাজিক ব্যবসার আড়ালে নতুন সাম্রাজ্যবাদ আধিপত্য বিস্তার নব্য অপশাসনের ফ্যাসিবাদ
সামাজিক ব্যবসার আড়ালে নতুন সাম্রাজ্যবাদ আধিপত্য বিস্তার নব্য অপশাসনের ফ্যাসিবাদ
লন্ডন থেকে কাজল -সামাজিক ব্যবসার নামধারী উদ্যোগ আজ যেন রাষ্ট্রীয় কাঠামো নাড়ে দিচ্ছে। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে শুরু করে নানা এনজিওয়ের হাত ধরে জনগণকে “স্বনির্ভর” বানানোর অঙ্গীকার করে আসছেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কিন্তু এই “নবধারা” বিপরীতে দালাল-বণিকতন্ত্রেরই বিকরূপ, যেখানে দরিদ্রকে রাষ্ট্রের সেবা-সুবিধার বাইরে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এনজিওর দাসত্বে।
মার্কিন এজেন্টের চোখে এডজাস্ট করা কৌশল
আমেরিকার কূটনীতি শেষ দিনে “নন-প্রফিট” বা “সামাজিক ব্যবসা” জারি করে সার্বভৌম রাষ্ট্রের নীতি-নির্ধারণে হস্তক্ষেপের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে।
বিদেশি তহবিলের লবিং বোঝায়, রাষ্ট্রিক দায়িত্ব থেকে বঞ্চিত দরিদ্র শ্রেণীকে এনজিওয়ের স্বেচ্ছাসেবীর কাছে পণ্য হিসেবে তুলে ধরা।
সামাজিক ব্যবসা ব্র্যান্ডিংয়ে বিনিয়োগ করে ইউনিয়ন কাউন্সিল থেকে শুরু করে জাতীয় সরকার পর্যন্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সংবাদ, সভা, প্রকল্পের প্রভাব বিস্তার করা।
নতুন ফ্যাসিবাদীর মুখোশ
ইউনুস-গোষ্ঠীর আঁচড়ে ধরা “সামাজিক” প্রকল্প শুধু অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণও রূপ নেয়।
অংশগ্রহণ ও স্বচ্ছতার অভাবে গ্রামীণ ব্যাংক, নাগরিক সেবা ছত্রে একচেটিয়া আধিপত্য গড়ে তোলা।
স্থানীয় প্রশাসন, ইউনিয়ন পর্যায় থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রণালয় পর্যন্ত কার্যক্রমে নীরব মান সম্পন্ন পরামর্শদাতা দল বসিয়ে রাখা।
এমন ধরণের “অন্তর্বর্তী সরকার” গণতন্ত্রের অস্তিত্বই প্রশ্নবিদ্ধ করে। সামাজিক ব্যবসার প্রযুক্তিতে পৃষ্ঠপোষক বিদেশি গোষ্ঠী, বিশাল অর্থনীতি-সামর্থের আড়ালে নতুন সাম্রাজ্যবাদের অঙ্গীকার রত।
নিস্ব প্রতিবাদী থেকে দাসত্বের শিকার
একদিকে ভাষা, হাটে-বাজারে, ইউনিয়ন অফিসে দাওয়াতি প্রকল্প চালিয়ে আনছে “নির্ভরতা” ফিরিয়ে দেওয়ার নামমতে অনাচার; অন্যদিকেদুর্বল দের রাষ্ট্রের বিনামূল্যে সেবা থেকে বঞ্চিত রেখে আওয়াজ তুলতে বাধ্য।
স্বাস্থ্য, শিক্ষা, দুর্যোগ-প্রতিষেধক সব সুবিধা আজ বিতরণের দায় শুধু এনজিওর ক্রীড়নিতিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সাহায্যবাণিজ্যে স্বল্পালোভকারী মানুষ সরাসরি দাসত্বে আবদ্ধ হচ্ছে, যার শাস্তি গণতন্ত্রের লোমশ অবলােআ শক্ত হয়ে দাঁড়ায়।
রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন ও জনআস্থার প্রাথমিক ব্যারিকেড হলো-রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা, স্থানীয় অংশগ্রহণ ও নিবন্ধন।
সামাজিক ব্যবসার নিবন্ধন পদ্ধতি শক্তিশালী করতে হবে; বার্ষিক প্রকাশানো আর্থিক নিরীক্ষা বাধ্যতামূলক করে তুলতে হবে।
স্থানীয় প্রশাসন, ইউনিয়ন, উপজেলা থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে-সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাসেবী খাতকে একচেটিয়াভাবে নীতিনির্ধারণ থেকে সরিয়ে নিতে হবে।
দরিদ্র মানুষের ভোটযোগ্য সরকারী সেবা থেকে বঞ্চনা রোধে সরকারের সরাসরি উদ্যোগ পুনর্বহাল করতে হবে।
সামাজিক ব্যবসার নব্য সাম্রাজ্যবাদী ফাদ হতে মুক্তি পেতে চাইলে আজই এই প্রয়াস চালু করতে হবে। আর না হলে সামাজিক ব্যবসা হয়ে উঠবে মানুষের মুক্তির নয়, অপশাসনের নতুন শেকল।