
শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
প্রথম পাতা » অপরাধ | রাজনীতি » সরকার অকার্যকর! বাংলাদেশ কি সামরিক শাসনের পথে নাকি গৃহযুদ্ধের পথে
সরকার অকার্যকর! বাংলাদেশ কি সামরিক শাসনের পথে নাকি গৃহযুদ্ধের পথে
- শফিকুল ইসলাম কাজল লন্ডন থেকে –
ব্যর্থ অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশ এখন কোন পথে যাবে। হাসিনার আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যায়-অত্যাচার পেছনে ফেলে আজ বাংলাদেশ একটি ভয়ঙ্কর শৃঙ্খলা-বিহীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।সামরিক হস্তক্ষেপ না হলে পরিস্থিতি গৃহযুদ্ধের দিকে ধাবিত হতে পারে।রাষ্ট্রের চেয়ারের জন্য ষড়যন্ত্র, বিদেশি হস্তক্ষেপ ও ক্ষমতার লড়াই চলছে।এবং সাধারণ মানুষের প্রশ্ন: এই অবস্থায় কী করা উচিত?
আমি এই জটিল বাস্তবতাকে তিন ভাগে বিশ্লেষণ করেছি
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির সারসংক্ষেপ
বিশৃঙ্খলার রূপ:রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যত পক্ষপাতদুষ্ট বা অকার্যকর।দলীয় সহিংসতা, ইসলামী উগ্রতা, ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন বেড়েছে।জনগণ দিশেহারা-কাকে বিশ্বাস করবে, কোথায় যাবে তা জানে না।
সরকার অকার্যকর:
ক্ষমতায় যারা আছে, তারা হয়ত আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ।বিচারব্যবস্থা, পুলিশ, প্রশাসন-সবই দুর্বল ও বিভক্ত।
কি সামরিক হস্তক্ষেপই একমাত্র উপায়?
বাস্তবতা:সেনাবাহিনী একমাত্র “discipline ও command structure” বজায় রাখতে পারে-এই ধারণা বহু দেশে প্রয়োগ হয়েছে (মিশর, পাকিস্তান ইত্যাদি)।তবে সামরিক শাসন মানেই গণতন্ত্রের মৃত্যু, বাকস্বাধীনতার হ্রাস, এবং দীর্ঘমেয়াদে রাষ্ট্রের ক্ষতি।
সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাব্য সুবিধা:অস্থায়ীভাবে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা হতে পারে।দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোর প্রভাব কমতে পারে।
বিপদ:দীর্ঘস্থায়ী সেনাশাসন গঠনতান্ত্রিক শূন্যতা তৈরি করে।আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা, অর্থনৈতিক পতন, ও নতুন দ্বন্দ্ব জন্ম নেয়।
সাধারণ মানুষের করণীয় - যখন রাষ্ট্র অকার্যকর হয়ে পড়ে:
সচেতনতা বৃদ্ধি ও সংঘবদ্ধতা:
নির্দলীয় সামাজিক শক্তি গঠন করা - যেমন নাগরিক ফোরাম, মানবাধিকার সংগঠন, নিরপেক্ষ যুব প্ল্যাটফর্ম।মিডিয়া ও ডিজিটাল মাধ্যমে সত্য প্রচার করে জনমত গঠন।
সাংবিধানিক দাবি তোলা (Peaceful Mobilization):
অন্তর্বর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনের দাবি।স্বচ্ছ ও জাতীয় ঐকমত্য ভিত্তিক নির্বাচন।
বিদেশি হস্তক্ষেপের বিপক্ষে জাগরণ:বিদেশি NGO বা রাষ্ট্রীয় এজেন্ডাকে অন্ধভাবে বিশ্বাস না করা।জাতীয় স্বার্থে জনগণের জাগরণই একমাত্র ভরসা।
যদি এই পরিস্থিতি চলতেই থাকে, তাহলে কী হবে?
দিক সম্ভাব্য পরিণাম
আইন-শৃঙ্খলার অবনতি গৃহযুদ্ধ, বিচ্ছিন্নতাবাদ, সন্ত্রাসবাদ মাথা তুলে দাঁড়াবে
রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র একাধিক পক্ষ রাষ্ট্র দখলের চেষ্টা করবে
অর্থনীতি বিনিয়োগকারীরা পালাবে, জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে হয়ে পড়তে পারে
শেষ কথা:
বাংলাদেশ এখন এক ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক সংকটের সন্ধিক্ষণের সামনে দাঁড়িয়ে।
যদি সাংবিধানিক শূন্যতা, দলীয় বিভাজন, ও বিচারহীনতা চলতেই থাকে - তাহলে সত্যিই সামরিক শাসন বা গৃহযুদ্ধের মতো বিপর্যয় ঘটতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে সাধারণ জনগণের করণীয়:বিভ্রান্ত না হয়ে সংগঠিত হওয়া,শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়া,এবং জাতীয় ঐক্যের নেতৃত্ব খুঁজে বের করা, যা দলে নয়, মানুষের কল্যাণে কাজ করে।
চলবে—-