
শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
প্রথম পাতা » রাজনীতি » “নব্য-স্বৈরতন্ত্রের নতুন রূপ: ইউনুসের মব-সন্ত্রাসে গণতন্ত্র হুমকির মুখে”
“নব্য-স্বৈরতন্ত্রের নতুন রূপ: ইউনুসের মব-সন্ত্রাসে গণতন্ত্র হুমকির মুখে”
মত ভিন্নমত
শফিকুল ইসলাম কাজল : “নব্য-স্বৈরতন্ত্রের নতুন রূপ: ইউনুসের মব-সন্ত্রাসে গণতন্ত্র হুমকির মুখে”
গত কয়েক মাসে আমরা দেখেছি, ছোট-খাটো গোষ্ঠী না হয়ে উঠে উঠছে সংগঠিত মব -দলীয় স্বৈরতন্ত্রের আধুনিক অস্ত্র। তার কুণ্ডলী প্রধান কারও নন, ঈশ্বরপুত্র ইউনুস-যিনি নিজের রাজনৈতিক আদেশপালা হিসেবে মব -সন্ত্রাস মদদ দিয়েছেন ইশারায় কোন দল তাঁর মিথ্যা আদেশ মানতে না চাইলে ভাঙচুর, হামলা, সন্ত্রাস-এই নতুন নজির স্থাপন করেছেন তিনি।
কিংস শাসকদল যখন নিজের ছাত্র ও যুব সংগঠনকে ভঙ্গুর গণতন্ত্রের বদলে বন্দোবস্ত করা বাহিনীতে পরিণত করে, তখন সাধারণ মানুষের নাগরিক জীবন অনিশ্চিত হয়। মোব-সন্ত্রাস আজ আর ইচ্ছেমত ‘অভিযোজনস্যস্থার’ বাহন নয়-এটি সরকারকে ক্ষমতাসীন রাখা, বিরোধীদের চেপে রাখা, আর দায়িত্বশীল গণমাধ্যমকে দমন করার অত্যাধুনিক কৌশল।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশেই নীরব দর্শকের ভূমিকায়-গণপিটুনিকে থামাতে না পেরে বা অবস্থা আরও খারাপ করার ভয়ে পদক্ষেপ না নিয়ে রাজপথেই নতুন ‘অনুচিত আইন’ প্রয়োগ করা হচ্ছে। এটা স্বীকার করতে হবে: আইন না থাকলেও মব আছে; নিষেধাজ্ঞা নেই, অপরাধ তোলপাড় করে।
ইউনুসের মব-সন্ত্রাস কেবল রাজনৈতিক লক্ষ্য হাসিলের হাতিয়ার নয়, এটি জনমতের বিরুদ্ধে মঞ্চস্থ এক ভয়ঙ্কর বার্তা: যারা সত্য বলবে, তাদের পোড়ানো হবে। সরকারের উচ্চপদস্থ নেতারা মঞ্চে ‘গণতন্ত্র’ শব্দ উচ্চারণ করলেও পেছনে মবস্টারের পদার্পণে গণতন্ত্র ধষিত হচ্ছে।
সুশাসন তখনই প্রতিষ্ঠিত হবে, যখন বিচারহীনতা বন্ধ হবে। কিন্তু এখন বিচারহীনতার অবলুপ্তপ্রায় রাজ প্রথা আবার নতুন সাজে ফিরে এসেছে-দুর্নীতিবাজ, চোর-মদপেয়ায়ীদের রেহাই; নিষ্ঠুর সন্ত্রাসীর বুদ্ধিদীপ্ত উদারতা। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে নির্বাচনও মিথ্যার প্রতিযোগিতা হয়ে দাঁড়াবে।
আমরা চেয়েছি, দেশে অবাধ নির্বাচন, শক্তিশালী বিরোধী দল, স্বাধীন মিডিয়া-কিন্তু মবের আতঙ্কে মাঠ ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতান্বেষী নেতারা যদি প্রত্যন্ত গ্রামেও মবের ঝাঁপি পাঠাতে পারেন, তাহলে বিশ্ব বাঙালি গণতন্ত্রের মর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন করবে।
সমাধান একটাই: মব-সন্ত্রাসকে অপরাধ হিসাবে স্বীকৃতি দিতে হবে, যারা মব করেছে তাদের কে সরাসরি শাস্তি দিতে হবে এবং আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকারের অঙ্গীকার হলো-আইনচর্চা, বিচারবহির্ভূত শাস্তি নয়; বিচারিক প্রক্রিয়া চালু করে দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো। পুলিশ-প্রসিকিউশন-আদালত সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা বজায় রেখে কাজ করবে-তখনই মব-সন্ত্রাস ঠেকানো যাবে।
শেষে, স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে গণতন্ত্র হালকা-ফুলকা ভাষণে গড়ে ওঠে না। সেটি তৈরি হয় কাঠখড় পোড়ানো মবের বিরুদ্ধে সাহসী ‘না’ বলে-।আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। ইউনুসের ইউনুসের মব-সন্ত্রাস আজকে হুমকি হয়ে দণ্ডায়মান আছে; কালকে তা হবে শাসকের নিজস্ব পলিসি। যদি নগ্ন স্বৈরতন্ত্রের আলোচিত এই রূপকে বাঁচতে দেই, তবে আগামী দিনে ‘গণতন্ত্র’ শব্দটিই ফাঁকা শ্লোগান হয়ে যাবে।