
সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » বাংলাদেশ সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ৯-১০ জুলাই রামু ক্যান্টনমেন্ট ও টেকনাফ ক্যাম্পে থাকবেন
বাংলাদেশ সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ৯-১০ জুলাই রামু ক্যান্টনমেন্ট ও টেকনাফ ক্যাম্পে থাকবেন
জাতিসংঘ প্রস্তাবিত ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে বিতর্কিত পরিকল্পনা পিছনের সারিতে চলে যাওয়ার পর রামু ও টেকনাফে এটি হবে জেনারেল জামানের প্রথম সফর।
চন্দন নন্দী
নির্বাচিত প্রতিবেদন | ৭ জুলাই, ২০২৫
এমন সময়ে যখন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে একটি “মানবিক করিডোর” চালুর পরিকল্পনা কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে, তখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান আগামী ৯ জুলাই রামুতে অবস্থিত ১০ম পদাতিক ডিভিশনের সদরদপ্তর এবং ১০ জুলাই টেকনাফ সেনা ক্যাম্প সফর করবেন বলে নর্থইস্ট নিউজ প্রাপ্ত নথিতে জানা গেছে।
জেনারেল জামানের সঙ্গে অন্তত ২০ জন সেনা কর্মকর্তা থাকবেন, যাদের মধ্যে কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়জুর রহমান, আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের জিওসি লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর রহমান, ২৪তম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মীর মুশফিকুর রহমান (ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ) সহ একাধিক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, লেফটেন্যান্ট কর্নেল ও মেজর রয়েছেন।
জেনারেল জামান ৯ জুলাই ঢাকার তেজগাঁও থেকে সেনাবাহিনীর ‘আর্মি এভিয়েশন গ্রুপ’-এর CASA পরিবহন বিমানে করে কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন, আর অন্য কর্মকর্তারা সড়কপথে রামু পৌঁছাবেন।
এটি রামুতে জেনারেল জামানের প্রথম সফর, যা জাতিসংঘ প্রস্তাবিত মানবিক করিডোর নিয়ে বিতর্কের পর হচ্ছে। এই প্রস্তাবের পক্ষে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এপ্রিলে মত দিলেও, জেনারেল জামান মে মাসে এর বিরোধিতা করেন।
১০ জুলাই তিনি টেকনাফ সেনা ক্যাম্প সফর করবেন, যেখানে তাকে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে ব্রিফিং দেওয়া হবে, যদিও বিষয়বস্তু প্রকাশ করতে উৎসগুলি অনিচ্ছুক।
তবে অন্য কিছু সূত্র জানিয়েছে, রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সম্ভাব্য হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে রামু ও টেকনাফের মাঝের এলাকাটি সুরক্ষিত করতে সেনাবাহিনী প্রস্তুতি নিচ্ছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জেনারেল জামান টেকনাফের উত্তরে ৩০ কিমি দূরে সিলখালি মৌজা পরিদর্শন করেন, যেখানে একটি ‘বেস ক্যাম্প’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল, যা রাখাইনের আরাকান আর্মির জন্য সরবরাহ বিতরণ কেন্দ্রে পরিণত হতো।
এই সফর এমন সময়ে হচ্ছে, যখন মানবিক করিডোর ও বান্দরবান-কক্সবাজারের মধ্যবর্তী অঞ্চলকে ‘সেনা অভিযানের এলাকা (MOZ)’ হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব আলোচিত হচ্ছে।
MOZ বাস্তবায়নের প্রস্তাবিত পর্যায়ে বলা হয়েছিল, সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) সীমান্ত থেকে সরে এসে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সুযোগ করে দেবে।
তবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এই MOZ কবে কার্যকর হবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কিছু জানানো হয়নি।
সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে মানবিক করিডোর প্রসঙ্গ আর সামনে আনা হবে না, তবে আরাকান আর্মিকে সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মিয়ানমার সীমান্ত অতিক্রম করবে না।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, সীমান্তের নির্দিষ্ট পয়েন্টে সকল রসদ ও সরবরাহ পৌঁছে দেওয়া হবে, সেখান থেকে আরাকান আর্মি সেগুলো তাদের সীমানার মধ্যে নিয়ে যাবে।
মে মাসে নির্বাচিত কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মধ্যে প্রচারিত একটি নীতিপত্রে বলা হয়েছে, “চলমান সীমান্ত নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, একটি স্থিতিশীল মানবিক করিডোর বজায় রাখা এবং বিজিবির উপর থেকে চাপ কমাতে সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তকে একটি সেনা অভিযানের এলাকা (MOZ) ঘোষণা করা।”
এতে বলা হয়েছে, এর ফলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সীমান্তের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে, রসদ সুষ্ঠুভাবে বিতরণ করা যাবে এবং বিজিবিকে ভারতের সীমান্তসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা কাজে ব্যবহার করা যাবে।