পক্ষকাল জাতীয় সংবাদ | ২ জুলাই ২০২৫
্বিশেষ প্রতিনিধি মাইকেল ঃ লোকজনের ভিড়, ক্যামেরার চাপ-বাড়ি ছাড়লেন মুরাদনগরের নির্যাতিত নারী
সাক্ষাৎকারের নামে হয়রানি, নিরাপত্তাহীনতায় পরিবার; পুলিশের সহায়তায় অন্যত্র আশ্রয়
নিজস্ব প্রতিবেদক, কুমিল্লা কুমিল্লার মুরাদনগরে ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হওয়া এক নারী অবশেষে নিজ বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন। ঘটনার পর থেকে প্রতিদিন অসংখ্য সাংবাদিক, ইউটিউবার, রাজনৈতিক কর্মী ও কৌতূহলী মানুষের ভিড়ে তিনি ও তাঁর পরিবার চরম মানসিক চাপে পড়েন। একপর্যায়ে পুলিশের সহায়তায় তিনি দুই সন্তানসহ অন্যত্র আশ্রয় নেন।
সাক্ষাৎকার’ যেন নতুন নির্যাতন
ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, ঘটনার পর থেকে প্রতিদিন কেউ না কেউ এসে সাক্ষাৎকার নিতে চেয়েছেন। কেউ কেউ অনুমতি ছাড়াই ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন। এতে তাঁর পরিচয় ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে তিনি নিজ বাড়িতে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ায় চলে যেতে বাধ্য হন।
ঘটনার পটভূমি
২৬ জুন রাতে স্থানীয় ফজর আলী নামের এক ব্যক্তি ওই নারীর ঘরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। পরে স্থানীয় কয়েকজন তাঁকে বিবস্ত্র করে মারধর করেন এবং সেই দৃশ্য ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তদন্ত ও গ্রেপ্তার
পুলিশ জানায়, ধর্ষণের অভিযোগে ফজর আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিডিও ধারণ ও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। ভিডিওটি কোথা থেকে ছড়িয়েছে, তা শনাক্তে মোবাইল ফোন ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
নিরাপত্তাহীনতায় পরিবার
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, ভুক্তভোগী নারী ও তাঁর পরিবার বর্তমানে নিরাপদ স্থানে রয়েছেন। তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ কাজ করছে। তবে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক কৌতূহল ও রাজনৈতিক নেতাদের আগমন পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
মানবাধিকারকর্মীদের উদ্বেগ
স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, এই ঘটনায় শুধু অপরাধ নয়, বরং অপরাধ-পরবর্তী সামাজিক প্রতিক্রিয়াও ভুক্তভোগীর জন্য এক ধরনের নির্যাতনে পরিণত হয়েছে। তাঁরা ভুক্তভোগীর পরিচয় গোপন রাখা এবং তাঁর মানসিক পুনর্বাসনের জন্য রাষ্ট্রীয় সহায়তা দাবি করেছেন।
সম্পাদকীয় মন্তব্য: এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, নির্যাতনের শিকার ব্যক্তির পাশে দাঁড়ানো মানে কেবল প্রতিবাদ নয়-তাঁর গোপনীয়তা, সম্মান ও নিরাপত্তা রক্ষা করাও আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
আপনি চাইলে এই প্রতিবেদনটি PDF বা প্রিন্ট লেআউট আকারে তৈরি করে দিতে পারি। অথবা চাইলে একটি অনুসন্ধানমূলক ফলো-আপ প্রতিবেদনও তৈরি করা যায়-যেমন: “সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুক্তভোগীর পরিচয় ফাঁস: আইনি দৃষ্টিকোণ”। কোনটা আগ্রহী?