
শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | রাজনীতি » “নতুন সামাজিক চুক্তি” বাংলাদেশ ২০৩০ এর স্বপ্ন ও বাস্তবতার সংমিশ্রণ
“নতুন সামাজিক চুক্তি” বাংলাদেশ ২০৩০ এর স্বপ্ন ও বাস্তবতার সংমিশ্রণ
শফিকুল ইসলাম কাজলঃ
“নতুন সামাজিক চুক্তি” বাংলাদেশ ২০৩০ এর স্বপ্ন ও বাস্তবতার সংমিশ্রণ
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তিনটি বিষয়ের ওপর:
সার্বভৌম কূটনীতি-যেখানে ভারত বা অন্য কোনো শক্তির প্রভাব নয়, বরং বাংলাদেশের স্বার্থই হবে মুখ্য।জনগণের অংশগ্রহণমূলক শাসন-যেখানে সিদ্ধান্ত হবে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে, বিদেশি চাপ না
সংবিধানিক সংস্কার ও জবাবদিহিতা-যাতে কেউই ক্ষমতার অপব্যবহার করতে না পারে।
একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে লক্ষ্য রাখছি-একটি নতুন সামাজিক চুক্তি, যা নিশ্চিত করবে সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ভারসাম্য। এটি থাকবে জনমতে গড়া, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক, যাতে বাংলাদেশ কোনো একপক্ষের বন্দিত্বে না পড়েই নিজস্ব গতিতে এগিয়ে যেতে পারে।
২. মূলনীতি
সার্বভৌমত্ব ও ন্যায্য কূটনীতি প্রতিবেশীর সঙ্গে বন্ধুত্ব, তবে সিদ্ধান্ত নেবে জনগণের স্বার্থেই।
মানবকেন্দ্রিক ন্যায়নীতিবোধ
দুর্নীতি, বঞ্চনা ও বৈষম্য হ্রাস করে সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করা।
সর্বস্তরের অংশগ্রহণমূলক শাসন
কেন্দ্র থেকে ইউনিয়ন পরিষদ-সবার মতামত নীতি প্রণয়নে প্রতিবিম্বিত হবে।
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা
সব সরকারি বাজেট, চুক্তি, প্রকল্প অনলাইনে মুক্তভাবে প্রকাশ।
৩. প্রস্তাবিত কাঠামো ও নীতি
৩.১ সংবিধানিক ও বিচারিক সংস্কার
-নির্বাচন কমিশন আধিকারিক**: ৭০% সদস্য হবেন নিরপেক্ষ নাগরিক-আইনজীবী, শিক্ষাবিদ, মানবাধিকার কর্মী।
- **দুর্নীতি মেড়ার উচ্চতর আদালত**: ৬ মাসে প্রতিটি অভিযোগ শুনানি ও নিষ্পত্তি বাধ্যতামূলক।
৩.২ প্রশাসনিক সংস্কার
“সার্ভিস অডিট”: তিন বছরে একবার, প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ের কার্যকারিতা, বাজেট ব্যবহার, ও জনসেবা মান যাচাই।
স্বয়ংক্রিয় মামলার ট্র্যাকিং সিস্টেম: নাগরিকরা আদালতে তাদের মামলার স্থিতি অনলাইনে দেখতে পারবে।
৩.৩ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য নীতি
বহুখাতীয় বাণিজ্য চুক্তি: ভারত, চীন, ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সমান গুরুত্ব।
স্মল-মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ (SME) উৎসাহ: বছরের শুরুতে করছাড়, সেকেন্ড হস্তান্তরী ঋণ-সহায়তা।
“সবুজ প্রবেশদ্বার”: নবায়নযোগ্য শক্তি, কৃষি ও জলের টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য ট্যাক্স ইনসেনটিভ।
৩.৪ সামাজিক সুরক্ষা ও কল্যাণ
ইন্টিগ্রেটেড ওয়েলফেয়ার পোর্টাল: প্রতিবন্ধী, বয়োবৃদ্ধ, আত্মকর্মসংস্থানপ্রার্থী-সবাই এক প্ল্যাটফর্মে।
আর্থিক অন্তর্ভুক্তি: ডিজিটাল মাইক্রোইনস্যুরেন্স, পেনশন পরিকল্পনা-গ্রামীণ এবং শহরে সমান ভাবে প্রয়োগ।
৩.৫ নাগরিক অংশগ্রহণ ও প্রযুক্তি
“ডিজিটাল পল্লী” হ্যাকাথন: স্থানীয় টেক স্টার্টআপদের আবেদন ভিত্তিক সমস্যা সমাধানে পুরস্কার।
পিয়ার-টু-পিয়ার বাজেট প্ল্যানিং: ইউনিয়ন/পৌরসভা পর্যায়ে জনসভার পর বাজেট প্রস্তাবনা-অনলাইনে ভোটিং সুবিধা।
৪. রোডম্যাপ ও বাস্তবায়ন
| পর্যায় | সময়সীমা | প্রধান কাজ |
|——-|———-|——————————————-|
| ১ | ২০২৫ Q4 | সংবিধানিক সংশোধনী প্রস্তাবপত্র প্রস্তুত |
| ২ | ২০২৬ Q2 | জাতীয় “জনসংলাপ ফোরাম” এবং কমিশন গঠন |
| ৩ | ২০২৭ Q1 | প্রশাসনিক ও বিচারিক সংস্কার কার্যক্রম শুরু |
| ৪ | ২০২৮ Q3 | ডিজিটাল প্লাটফর্ম ও সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা চালু |
| ৫ | ২০২৯ Q4 | সার্বিক অডিট এবং মূল্যায়ন রিপোর্ট প্রকাশ |
| ৬ | ২০৩০ | পূর্ণাঙ্গ “নতুন সামাজিক চুক্তি” কার্যকর
৫. তদারকি ও জবাবদিহিতা
জাতীয় স্বচ্ছতা কমিশন: প্রতি তিন মাসে অগ্রগতি রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীর এনডিসি (ND C) ওয়েবসাইটে প্রকাশ।
সাইবার ও সিভিল মনিটরিং ফোরাম: ১০ সদস্য-৩ জন নাগরিক সমাজ, ২ জন প্রযুক্তিবিদ, ৫ জন নির্বাচিত সংসদ সদস্য।
ক্রস-বর্ডার অডিট: প্রতিবেশী দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্বারা সাফল্য যাচাই; প্রতিবেদন পাবলিক ডোমেনে মুক্তি।
৬. পরবর্তী পদক্ষেপ
এই “নতুন সামাজিক চুক্তি” তৈরি নয় মাত্র একটি নীতিগত চুক্তি; এটা হবে
নাগরিক ও রাষ্ট্রকর্তাদের মধ্যে নতুন বিশ্বাস। প্রতিটি ধাপে, আপনার মতামত-আপনার এলাকার গণঅবদান-ই হবে প্রকৃত পরিবর্তন।
পরবর্তী প্রস্তাব: “New Bangladesh Day” এর পর ৭ দিনব্যাপী *রাষ্ট্র-নাগরিক সংলাপ।
Pilot Zone: ১০ ইউনিয়নে ১ বছরের জন্য তরল বাজেট ও ডিজিটাল ট্র্যাকিং পরীক্ষামূলক প্রয়োগ।
চলুন-নির্ভীকভাবে, স্বচ্ছভাবে, সবাই মিলেমিশে গড়ে তুলি ২০৩০ সালের বাংলাদেশকে।