
শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » অপরাধ | অর্থনীতি | জেলার খবর | পোশাক শিল্প » চট্টগ্রাম বন্দর’র নিয়ন্ত্রক ট্রাফিক বিভাগ’র পরিচালক অপারেশন এনামুল করিম সুমন
চট্টগ্রাম বন্দর’র নিয়ন্ত্রক ট্রাফিক বিভাগ’র পরিচালক অপারেশন এনামুল করিম সুমন
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
এনামুল করিমের মায়ের সাথে আ স ম আবদুর রবের সাথে সুসম্পর্ক ছিল। আব্দুর রব ৯৬ সালে নৌ পরিবহণমন্ত্রী থাকাকালে মায়ের অনুরোধে চাকুরি হয় এনামুলের। তাতেই কপাল খোলে তার। এরপর ক্ষমতার পটপরিবর্তনের হলে নিজের রাজনৈতিক পরিচয় গোপন করে নানান অপকর্ম করতে থাকে।
গত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে নিজেকে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচয় দিতেন। বর্তমানে নিজেকে জামায়াত এবং বিএনপি’র সমর্থক হিসেবে পরিচয় দেন।
১৭ বছর ধরে বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পথে থেকে বন্দরের পরিবহণ সংক্রান্ত সকল অবৈধ লেনদেনের নিয়ন্ত্রণ করেন।
বন্দরে যত শ্রমিক কর্মচারী নিয়োগ হয় সবগুলোর নিয়োগের নেপথ্যে রয়েছেন এনামুল। প্রতি নিয়োগ থেকে তিনি ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা ঘুষ নেন। এ নিয়োগ প্রক্রিয়া তার তিনি তার বিশ্বস্ত এজেন্টের মাধ্যমে করেন। তারা হলেন বন্দর শ্রমিক কর্মচারী লীগ (রেজিস্ট্রেশন) ২৭৪৭ সভাপতি মীর নওশাদ, সাধারণ সম্পাদক মো আলমগীর এবং সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল চৌধুরীর মাধ্যমে।
বন্দরের অকশন ইয়ার্ডের অংশীদার রয়েছে এনামের। যা বেনামে রয়েছে।
জেটিতে উঠা-নামা করা সকল কন্টেইনারের নির্দিষ্ট অংকের টাকা যায় এনামুলের পকেটে। এই আলাদা টাকা না দিলে নানা মারপ্যাচে আটকে রাখা হয় কন্টেইনার।
বন্দরের আসা প্রায় প্রত্যেকটি ফাইল নিজেই তদারকি করেন। প্রতি ফাইলের ছাড়পত্রের জন্য তিনি জন্য সর্বনিম্ন ৫ হাজার থেকে শুরু করে কোটি টাকা পর্যন্ত। এসব তদারকি করেন তার ব্যক্তিগত পিএস সুজন। এ সুজনের বাড়ি গোপালগঞ্জে। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির লোক হিসেবে দাপট দেখাতেন। এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে তিনি।
আবুল খায়ের গ্রুপে বড় বিনিয়োগ রয়েছে এনামের। তিনি বিভিন্ন সময় ঘনিষ্টজনদের বলে বেড়ান চাকুরী থেকে অবসরের পর তিনি আবু খায়ের গ্রুপের ডিরেক্টর হিসেবে যুক্ত হবে। আগামী ২০২৬ সালে এনাম অবসরে যাবেন।
চট্টগ্রাম বন্দরের কুতুবদিয়া, বহির্নোঙর ও অন্যান্য বিশেষায়িত জেটিতে শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর সংক্রান্ত ২৩ টি লাইসেন্স প্রদান করে বিগত আওয়ামীলীগ সরকার। তার মধ্যে একটি লাইসেন্স নেন এনামুল করিম। এ লাইসেন্সর একটি অংশের মালিকানা রয়েছে আরসাদুল আলম বাচ্চুর। এ বাচ্চু সাবেক হুইপ শামসুল হকের ছেলে শারুনের ব্যবসায়ীক পার্টনার।
বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে বাচ্চু কন্টেইনারে করে সোনা ও অবৈধ পণ্যের চালান আনতো বলে অভিযোগ রয়েছে। তার এ কাজে সহযোগীতা করতো এনাম। সহায়তার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ নিতেন।
গোয়েন্দা সংস্থার দাবি আটশো থেকে ১ হাজার কোটি টাকার মালিক এনামুল করিম সুমন। বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন। আমেরিকায় তার বাড়ি এবং বিনিয়োগ রয়েছে। দেশেও নামে এবং বেনামে প্রচুর সম্পত্তি এবং ব্যবসা রয়েছে।
নজিরবিহীন অনিয়ম দুর্নীতি ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের বিষয় জানতে চট্টগ্রাম বন্দর ট্রাফিক বিভাগের পরিচালক (অপারেশন) এনামুল করিম সুমন’র ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ’র চেষ্টা করেও নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।