
শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর | রাজনীতি » টেকনাফে পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদদের দুই পুত্র গ্রেপ্তার, জনমনে অশান্তির ঢেউ
টেকনাফে পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদদের দুই পুত্র গ্রেপ্তার, জনমনে অশান্তির ঢেউ
স্টাফ রিপোর্টার :
কক্সবাজারের টেকনাফে শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রাতে মডেল থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মো: আলীর দুই পুত্রকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ (৫০) এবং কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক তারেক মোহাম্মদ রনি (৩৭)।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে টেকনাফ মডেল থানার ওসি গিয়াস উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অভিযানে মোট ছয়জন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে জুলাই অভ্যুত্থান সংক্রান্ত মামলায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অধ্যাপক মো: আলী ছিলেন কক্সবাজারের রাজনীতিতে সততা, নীতি ও পরিচ্ছন্নতার প্রতীক। ব্যক্তিজীবনে সাদাসিধে, স্বল্পভাষী এই রাজনীতিবিদের উত্তরসূরি হিসেবেও তার দুই ছেলে মানুষের আস্থা অর্জন করেছিলেন। দলীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও ব্যক্তিস্বার্থে কখনো আপস না করায় এলাকায় তারা পরিচিত ছিলেন “অন্যরকম” রাজনীতিক হিসেবে।
তবে হঠাৎ করেই চিত্র পাল্টে যায়। গেল শুক্রবার বিকেলে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম শাহাদাতবার্ষিকী ও ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে একটি দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান শেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি প্রচারিত হলে রাতেই হ্নীলাস্থ নিজ বাসা থেকে তাদেরকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এ ঘটনায় টেকনাফ ও কক্সবাজারজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। স্থানীয় প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম তারা আজীবন সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি হয়ে থাকবেন। তাদেরকে এমন মামলায় জড়িয়ে দেখা আমাদের জন্য কষ্টকর।”
অধ্যাপক আলীর পরিবারও এ ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত। তার স্ত্রী গণমাধ্যমকে জানান, “আমার স্বামী আজীবন নীতির পথে থেকেছেন। সন্তানদেরও সততা শিখিয়েছেন। যদি সত্যিই তিনি অপরাধী প্রমাণিত হন, তবে আমরা বিস্মিত হবো। তবে আমি বিশ্বাস করি, তিনি নির্দোষ।”
বর্তমানে পরিবারসহ সমর্থকরাও দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। গ্রামীণ চায়ের দোকান থেকে শুরু করে শহরের আড্ডা—সর্বত্র আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এখন অধ্যাপক আলীর পরিবার ও তাদের গ্রেপ্তার।