প্রধান প্রকৌশলী নাসির উদ্দিনের দুর্নীতি
পায়রা বন্দরে নাম সর্বস্ব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সর্বনিম্ন দরদাতা ঘোষণা
এম ডি এন মাইকেলঃ
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এবং ব্যয়বহুল গভীর সমুদ্র বন্দর হিসেবে খ্যাত পায়রা বন্দরের প্রধান প্রকৌশলী (সিভিল) নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ০২ শিপ টু শোর ক্রেন/কুইয়ে জেন্ট্রি ক্রেন ক্রয়ের দরপত্রে
নজিরবিহীন অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে গিয়ে জানা যায়,ডালিয়ান হুয়ারুই হেভি ইন্ডাস্ট্রি ইন্টারন্যাশনাল কোং লিমিটেড এর পক্ষে আঃ মালেক নামের জনৈক ব্যক্তি উল্লেখিত দরপত্রে দেশের অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহারের লক্ষ্যে শিপ টু শোর ক্রেন/কুইয়ে জেন্ট্রি ক্রেন ২টি ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা ও পর্যালোচনা করার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বরাবর একটি লিখিত আবেদন জমা দেওয়া হয়। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের রিসিভ করানো উক্ত আবেদনের কপি দৈনিক পক্ষকাল পত্রিকার সংরক্ষণে রয়েছে।
পায়রা পোর্ট এর ঢাকা অফিস গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ইং তারিখে ২টি শিপ টু শোর ক্রেন/কুইয়ে জেন্ট্রি ক্রেন ক্রয় করার জন্য দরপত্র আহ্বান করেন। উক্ত আহবানকৃত দরপত্র ৩টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে এবং ৩টি প্রতিষ্ঠানকে কারিগরি ভাবে যোগ্য ঘোষণা করা হয়। এরপর ২৭ মার্চ ২০২৫ ইং তারিখে আর্থিক প্রস্তাব উন্মোচন করা হয়। তাতে এইচপি- এনজে(জেভি) (নানজিং পোর্ট) সর্ব নিম্ন দরদাতা পাওয়া যায়। কিন্তু এইচপি- এনজে(জেভি) (নানজিং পোর্ট) সর্ব নিম্ন দরদাতা হলেও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অযোগ্যতা তার পরিলক্ষিত হয়েছে।
এদিকে তার গুরুত্বপূর্ণ অযোগ্যতা গুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো- এইচপি- এনজে(জেভি) (নানজিং পোর্ট) কারিগরি ভাবে যোগ্য ঘোষণা করা হলেও প্রকৃতপক্ষে এইচপি- এনজে(জেভি) (নানজিং পোর্ট) কারিগরি ভাবে যোগ্য নয়, কারণ পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়ম অনুযায়ী ১৫টি শিপ টু শোর ক্রেন/কুইয়ে জেন্ট্রি ক্রেন আন্তর্জাতিক বাজারে সরবরাহের ও ব্যবহারকারীর নিকট থেকে সন্তোষজনক সনদপত্র দরপত্রের সাথে জমা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু এইচপি- এনজে(জেভি) (নানজিং পোর্ট) এর ১৫টি শিপ টু শোর ক্রেন/কুইয়ে জেন্ট্রি ক্রেন আত্মর্জাতিক বাজারে (চায়না ব্যতিত) সরবরাহের কোনো সঠিক তথ্য ও বৈধ সনদপত্র জমা দেয়া হয়নি বা নেই বলে প্রতীয়মান হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে- এইচপি-এনজে(জেভি) (নানজিং পোর্ট) এর কারিগরি যোগ্যতা প্রমান করণে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ নাসির উদ্দিন সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে,নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নিরপেক্ষ তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে থলের বিড়ালের।
অপর দিকে শিপ টু শোর ক্রেন/কুইয়ে জেন্ট্রি ক্রেন একটি স্থায়ী ও গুরুত্বপূর্ণ মেশিন যার রক্ষণাবেক্ষণ ও সার্ভিসিংয়ের জন্য এইচপি- এনজে(জেভি) (নানজিং পোর্ট) এর বাংলাদেশে নিজস্ব কোনো সার্ভিস সেন্টার নেই এবং তারা যাকে লোকাল এজেন্ট দেখিয়েছে তাদেরও কোন সার্ভিস সেন্টার নেই। এইচপি- এনজে(জেভি) (নানজিং পোর্ট) এর বাংলাদেশে পূর্বে কোন ভারী মেশিন সরবরাহের ক্ষেত্রে কোন রেকর্ড নেই। এইচপি- এনজে(জেভি) (নানজিং পোর্ট) কর্তৃক শিপ টু শোর ক্রেন/কুইয়ে জেন্ট্রি ক্রেন o২টি জমা করলে তা ভবিষ্যতে অকেজো হয়ে যেতে পারে, যা ভবিষ্যতে দেশের জন্য আর্থিক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
শুধু তাই নয় পায়রা বন্দর বাংলাদেশের একটি ব্যয়বহুল প্রকল্প এবং এই বহুল প্রকল্পের কেনাকাটায় অনিয়ম দুর্নীতির কারণে প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন দেশের সংশ্লিষ্ট মহল উদ্বিগ্ন। ঠিক সেই মুহূর্তে কারিগরির দিক দিয়ে অযোগ্য এইচপি- এনজে(জেভি) (নানজিং পোর্ট) থেকে শিপ টু শোর ক্রেন/কুইয়ে জেন্ট্রি ক্রেন ০২ টি ক্রয় করলে ভবিষ্যতে দেশ বৃহত্তর আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে বলে পায়রা বন্দর সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ মহল ধারণা করছেন।
অভিজ্ঞ মহলের মতে- যদি এসটিএস ক্রয়ের ক্ষেত্রে সঠিক মূল্যায়ন করা হয়, তবে সেইসব প্রতিষ্ঠান/কোম্পানি থেকে শিপ টু শোর ক্রেন/কুইয়ে জেন্ট্রি ক্রেন ০২ টি ক্রয় করা যেতে পারে, যাদের পূর্বে বাংলাদেশে পোর্ট ইকুইপমেন্ট সরবরাহের অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং যাদের নিজস্ব লোকাল এজেন্টন্ট এবং সার্ভিস সেন্টার রয়েছে। এছাড়াও যারা পূর্বে সরকারি/বেসরকারি প্রকল্পে পোর্ট ইকুইপমেন্ট সরবরাহ করেছে, তাদের মাধ্যমে সরবরাহ করা যেতে পারে।
মজার ব্যাপার হলো- এইচপি- এনজে(জেভি) (নানজিং পোর্ট) যে কোম্পানিকে লোকাল এজেন্ট হিসেবে দেখিয়েছে, ওই কোম্পানি ও পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে পূর্বেও পায়রা বন্দরের বিভিন্ন কেনাকাটায় দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। প্রধান প্রকৌশলী নাসির উদ্দিনের পূর্বের অনিয়ম দুর্নীতি সজনপ্রীতি ও সেচ্ছাচারিতার বিষয় নিয়ে পূর্বেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও অদৃশ্য শক্তির ইশারায় বারংবার তিনি থেকে গেছেন শপদে।এহেন দুর্নীতিবাজ দেশ ও জাতির শত্রু।
পরবর্তীতে পায়রা বন্দরের কেনাকাটায় আহ্বানকৃত দরপত্রে অনিয়ম দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতার বিষয়ে জানতে প্রধান প্রকৌশলী(সিভিল)নাসির উদ্দিনের ব্যবহৃত মুঠো ফোনে ফোন ও খুঁদে বার্তা পাঠানো হলেও কোন প্রকার সাড়া পাওয়া যায়নি।