
শুক্রবার, ২ মে ২০২৫
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | রাজনীতি » দেশে রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি-বাংলাদেশ জাসদ
দেশে রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি-বাংলাদেশ জাসদ
মে দিবসের সংবাদ-
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ক্ষমতার পালাবদল হলেও শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি। দেশের মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশ, প্রায় ৬০ শতাংশ, নিম্নবিত্ত শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ। তাদের বাদ দিয়ে দেশে কোনো প্রকৃত পরিবর্তন সম্ভব নয় ।
পোশাক শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক প্রভাব, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং শিল্পের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোর সমন্বয়। মালিকপক্ষের অভিযোগ— কিছু শ্রমিক সংগঠন এবং রাজনৈতিক শক্তি এই খাতকে অস্থিতিশীল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে, অন্যদিকে শ্রমিকরা বকেয়া বেতন না পেয়ে বিক্ষোভে উত্তেজিত হচ্ছেন [2] ।
এই পরিস্থিতিতে, দেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন কার্যকর শ্রম সংস্কার এবং শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা। শ্রম সংস্কার কমিশনে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে শ্রমিকদের মতামত গ্রহণ এবং তাদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি ।
সার্বিকভাবে, রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তন তখনই অর্থবহ হবে, যখন তা শ্রমজীবী মানুষের জীবনে বাস্তব পরিবর্তন আনবে। তাদের অধিকার, জীবনমান এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে কোনো রাজনৈতিক পরিবর্তনই টেকসই হতে পারে না
দেশে রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (বাংলাদেশ জাসদ) শ্রমিক সংগঠন বাংলাদেেশ জাতীয় শ্রমিক জোট ।
বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক জোটের নেতারা বলেছেন, রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তনের পর বিভিন্ন শিল্প এলাকায় বকেয়া মজুরি পরিশোধ ও ন্যায্য মজুরির দাবিতে শ্রমিকদের ন্যায়সংগত আন্দোলনে গুলি চালিয়ে ও লাঠিপেটা করে শ্রমিকদের মারা হয়েছে। শ্রমিক আন্দোলন ও ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনকে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে বন্ধ করা হয়েছে।
মহান মে দিবসে আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর তোপখানা মোড়ে লাল পতাকা সমাবেশ করে শ্রমিক জোট বাংলাদেশ । সেখানে সংগঠনটির নেতারা নানা অভিযোগ করেন।
উক্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের হাওলাদার এবং সভা পরিচালনা করেন বাংলাদেশের জাতীয় শ্রমিক জোটের কেন্দ্রীয় নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল ইসলাম বাবু।
বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশের জাতীয় শ্রমিক জোটের সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা বাদল খান, শ্রমিক নেতা আব্দুল আজিজ, মিজানুর রহমান মিজান, হেলাল উদ্দিনসহ শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
মহান মে দিবসে শ্রমিক অধিকারের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ সর্বজনাব মুশতাক হোসেন, করিম সিকদার, মঞ্জুর আহমেদ মঞ্জু, কেন্দ্রীয় নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ, ইসমাইল চৌধুরী প্রমুখ।
বাংলাদেশ জাসদ নেতৃবৃন্দ ১৩৯ বছর আগে মে মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, “বাংলাদেশে কলকারখানা শ্রমিক কর্মচারীরা লড়াই করে কিছু অধিকার আদায় করতে পারলেও ছোট মাঝারি শিল্প কারখানা ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক কর্মচারীরা ন্যায্য অধিকার আদায়ে অনেক পিছিয়ে আছে। তাদেরকেও বৃহত্তর শ্রমিক কর্মচারীদের কাতারে ঐক্যবদ্ধ করে দাবি আদায় করতে হবে। শ্রম সংস্কার কমিশন ও নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অবিলম্বে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিতে হবে।”
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশে রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মজীবী–শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। বরং রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তনের পর বিভিন্ন শিল্প এলাকায় বকেয়া মজুরি পরিশোধ ও ন্যায্য মজুরির দাবিতে শ্রমিকদের ন্যায়সংগত আন্দোলনে গুলি চালিয়ে ও লাঠিপেটা করে শ্রমিকদের মারা হয়েছে। শ্রমিক আন্দোলন ও ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনকে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে বন্ধ করা হয়েছে।
বকেয়া মজুরি পরিশোধ ও ন্যায্য মজুরির দাবি তুললেই কলকারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। তাঁরা বলেন, রাজনৈতিক হিংসা-প্রতিহিংসার কারণেও শত শত কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। হাজার হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। শ্রমিকদের চাকরি ও কাজের নিশ্চয়তা স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে কমে গেছে। শ্রমিক-কর্মচারী-শ্রমজীবী-মেহনতি মানুষের ন্যায্য দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।
ন্যূনতম জাতীয় মজুরি ঘোষণা ও বাস্তবায়ন, সব ক্ষেত্রে ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করা, শ্রমিক-কর্মচারীদের চাকরি ও কাজের নিশ্চয়তা এবং নিরাপত্তার দাবিতে শ্রমিক-কর্মচারীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানানো হয়। এই সমাবেশ থেকে পরবর্তীতে মিছিল করে স্কপের সমাবেশে যোগ দেয়