শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

Daily Pokkhokal
বৃহস্পতিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০১৫
প্রথম পাতা » সম্পাদক বলছি » পোশাক শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে উৎকণ্ঠায় মালিকরা
প্রথম পাতা » সম্পাদক বলছি » পোশাক শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে উৎকণ্ঠায় মালিকরা
৩২৪ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার, ১৫ জানুয়ারী ২০১৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

পোশাক শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে উৎকণ্ঠায় মালিকরা

---পক্ষকাল প্রতিবেদক: চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বর্তমানে পোশাকশিল্পে জড়িতদের মধ্যে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এই শিল্প আজ বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে বলে মনে করছেন তারা। এ পরিস্থিতিতে পোশাক শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা, সেই সঙ্গে অর্থনীতিকে সচল রাখা হয়ে পড়েছে দুষ্কর।

বিদেশি ক্রেতাদের অনেকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তারা এ দেশ থেকে পোশাক নেবেন না। ফলে এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে উল্টো পথে হাঁটতে হবে সবাইকে। ক্রেতারা এ দেশে না আসলে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের প্রতিনিধিদের অর্ডার আনতে যেতে হবে ক্রেতাদের দেশে।

পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে গত ১২ দিনে পোশাকশিল্পে ক্ষতি হয়েছে ৪৫০ কোটি টাকা। আর একদিন অবরোধ বা হরতাল থাকলে ৬৯৫ কোটি টাকার পোশাক রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হয়। গত বছর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে বিজিএমইএকে ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকার পোশাক এয়ার শিপমেন্ট করতে হয়েছে। আর ৯ হাজার কোটি টাকার পণ্য ডিসকাউন্ট হয়েছে।

বিজিএমইএ জানায় , ২০১৪-১৫ অর্থবছরে আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার, যা টাকার অংকে প্রায় ২ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকা। আর প্রতিদিন এই শিল্পে প্রকৃত উৎপাদনের মূল্যমান হচ্ছে প্রায় ৪৩০ কোটি টাকা। যদি হরতাল-অবরোধের কারণে উৎপাদন ৫০ শতাংশও বিঘিœত হয়, তাহলে প্রতিদিন লোকসান হয় অন্তত ২১৫ কোটি টাকা।

বিজিএমইএ সূত্রে আরো জানা গেছে, বিজিএমইএর সদস্য সংখ্যা ৫ হাজার ৮৭৬ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২২২টিতে। রাজনৈতিক অচলাবস্থা অব্যাহত থাকলে এ সংখ্যাও কমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বর্তমানে রুগ্ন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪৩৯টি (আগের ২৭৯, নতুন ১৬০টি)।

চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিজিএমইএর সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি না হলে অর্থনীতির চাকা সচল রাখা কঠিন হবে। পোশাকশিল্পের অধিকাংশ পণ্য লোকালে থাকে না, এটা আন্তর্জাতিক ব্যবসা। ক্রেতারা এমন পরিস্থিতি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। এভাবে চলতে থাকলে ক্রেতারা অন্য দেশে চলে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। যদি কেউ মনে করেন ক্রেতারা অন্য দেশে যাবেন না, তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পোশাকশিল্প। এটি রুগ্ন শিল্পে পরিণত হবে। আমাদের উৎপাদন খরচ দিনে দিনে বাড়ছে, অন্য দেশে কমে যাচ্ছে। গত বছরের উৎপাদন ধরে রাখতে এখন কষ্ট হচ্ছে। আমরা ক্রেতাদের এ দেশে আসতে বললেও তারা অবরোধের কারণে আসতে অনিচ্ছা প্রকাশ করছেন। ফলে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো থেকে এ মাসে নতুন কোনো অর্ডার পাওয়া যায়নি ।

এখন প্রয়োজনে ক্রেতাদের কাছে গেলেও অর্ডার পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন বিজিএমইএর সভাপতি।

পোশাকশিল্পের কথা ভাবার আহ্বান জানিয়ে রাজনীতিকদের উদ্দেশে আতিকুল ইসলাম বলেন, পোশাকশিল্পের ঘাড়ে পা দিয়ে রাজনীতি করবেন না। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করুন।

বিজিএমইএর সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম দৈনিক পক্ষকালকে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার দায়িত্ব রাজনীতিকদের। এখন আমরা ক্রেতাদের কাছে গেলেও তারা এ দেশের চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থার কথা চিন্তা করে অর্ডার দেবে কিনা তা বলা যাচ্ছে না। কারণ তারা একটি বিষয় চিন্তা করবে এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে যদি বাংলাদেশকে অর্ডার দেওয়া হয়, তাহলে সময়মতো পণ্য সরবরাহ করতে পারবে না।

সাসকো গ্রুপের কর্ণধার ও ব্লু ব্র্যান্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিজিএমইএর প্রাক্তন পরিচালক এস কে আতিয়ার রহমান দিপু দৈনিক পক্ষকালকে বলেন, গত এক বছরে রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে ক্রেতারা পিছু হটছে। এই এক বছরে ক্রেতারা পরিস্থিতি  পর্যবেক্ষণ  করেছে। মাঝখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ক্রেতা আসতে শুরু করেছিল, এখন আবার অস্থিরতা। তাহলে ক্রেতারা কেন আসবে এ দেশে?

তিনি আরো বলেন, ‘ক্রেতাদের আবার বাংলাদেশমুখী করতে বিজিএমইএ এবং এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি দল পাঠানো হবে। কিন্তু প্রতিনিধি পাঠালেই তো আর হবে না। রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে বাইরে গিয়ে আলোচনা করলেই যে অর্ডার পাওয়া যাবে সে নিশ্চয়তাটুকুও নেই। কারণ এই অস্থিতিশীল সময়ে সময়মতো উৎপাদন করে আদৌ আমরা নির্দিষ্ট সময়ে পণ্য সরবরাহ করতে পারব কিনা সে নিয়ে তারা সন্দিহান। তাই সবার আগে যেকোনো মূল্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে। প্রয়োজনে আইন করে হরতাল-অবরোধ বন্ধ করতে হবে। তা না হলে পোশাকশিল্প টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে।



এ পাতার আরও খবর

অবৈধ  সরকার করিডোর দেয়ার মত নীতিগত সিদ্ধান্ত নেবার কে অবৈধ সরকার করিডোর দেয়ার মত নীতিগত সিদ্ধান্ত নেবার কে
বাংলাদেশের পানির নিচে লুকিয়ে থাকা সম্পদ - ভবিষ্যতের সম্ভাবনা না কি নতুন উপনিবেশের ফাঁদ বাংলাদেশের পানির নিচে লুকিয়ে থাকা সম্পদ - ভবিষ্যতের সম্ভাবনা না কি নতুন উপনিবেশের ফাঁদ
যুদ্ধের ছায়ায় উপমহাদেশ কাশ্মীর হামলার পর আমরা কোন পথে ? যুদ্ধের ছায়ায় উপমহাদেশ কাশ্মীর হামলার পর আমরা কোন পথে ?
গণতন্ত্রের মুখোশে বন্দী একটি জাতি: ২০২৫ সালের বাংলাদেশ গণতন্ত্রের মুখোশে বন্দী একটি জাতি: ২০২৫ সালের বাংলাদেশ
“বুর্জোয়া রাষ্ট্রযন্ত্রের সংস্কার: অর্থনৈতিক ভিত্তি বদল না করলে গুণগত পরিবর্তন অসম্ভব “বুর্জোয়া রাষ্ট্রযন্ত্রের সংস্কার: অর্থনৈতিক ভিত্তি বদল না করলে গুণগত পরিবর্তন অসম্ভব
ফাতিমা হাসসুনা: একটি ক্যামেরা, একটি জীবন, একটি কণ্ঠস্বর যা চিরকাল প্রতিধ্বনিত হবে ফাতিমা হাসসুনা: একটি ক্যামেরা, একটি জীবন, একটি কণ্ঠস্বর যা চিরকাল প্রতিধ্বনিত হবে
পহেলা বৈশাখের ইতিহাস পহেলা বৈশাখের ইতিহাস
ইজরায়েল ও ফিলিস্তিনে সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ইজরায়েল ও ফিলিস্তিনে সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
প্রসঙ্গঃ-মানুষ মারার সাম্রাজ্যবাদী, পোশাকিভদ্রতা ও মেকিসভ্যতার উন্নয়ন আমরা চাই না! প্রসঙ্গঃ-মানুষ মারার সাম্রাজ্যবাদী, পোশাকিভদ্রতা ও মেকিসভ্যতার উন্নয়ন আমরা চাই না!

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)