যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া আলোচনা ও ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা: ইউক্রেন কি কেবল দাবার গুটি?
শফিকুল ইসলাম কাজলের বিশ্লেষণ
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও আলোচনার কেন্দ্রে। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ করতে তিনি মাত্র ২৪ ঘণ্টা সময় চান। এই ঘোষণার পেছনে রয়েছে এক ধরণের রাজনৈতিক অঙ্ক-যেখানে মূল লক্ষ্য শান্তি নয়, বরং নিজেকে একজন কূটনৈতিক রক্ষাকর্তা হিসেবে তুলে ধরা।
তবে প্রশ্ন ওঠে এই চুক্তির মূল্য কাকে দিতে হবে?
ইউক্রেনের স্বাধীনতা কি নিলামে?
ট্রাম্পের কথিত চুক্তি মূলত রাশিয়াকে সন্তুষ্ট করা ও ইউক্রেনকে পরিত্যাগ করার ইঙ্গিত বহন করে। এই অবস্থান কেবল ন্যায়বিচার ও আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করে না, বরং এটি ইউক্রেনের লাখ লাখ নাগরিকের আত্মত্যাগকে অসম্মানিত করে। যারা নিজেদের স্বাধীনতা রক্ষা করতে গিয়ে রক্ত দিয়েছেন, তারা এখন ট্রাম্পের চোখে রাজনৈতিক দর-কষাকষির উপকরণ।
পশ্চিমা ঐক্য ও নিরাপত্তার হুমকি
ট্রাম্পের এই অবস্থান পশ্চিমা জোটের ঐক্যকে দুর্বল করে তুলতে পারে। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে পুতিনকে আরও আগ্রাসী হতে উসকানি দিতে পারে। একইসঙ্গে, এই পদক্ষেপ ইউরোপ জুড়ে নিরাপত্তা হুমকি বাড়াবে এবং যুদ্ধের স্থায়ী সমাধানের পথকে আরও জটিল করে তুলবে।
আসল খেলা কী
ট্রাম্প শান্তির কথা বললেও বাস্তব চিত্র বলছে এটি এক রাজনৈতিক খেলাচক্র। এখানে ইউক্রেন কেবল একটি দাবার গুটি। এই ধরনের সমাধান একদিকে গণতন্ত্রের আদর্শ ধ্বংস করে, অন্যদিকে স্বৈরাচারিক শক্তিকে পুরস্কৃত করে।
কে নির্ধারণ করবে শান্তির মূল্য?
আজকের বিশ্বে শান্তি দরকার, কিন্তু ন্যায়বিচারবিহীন শান্তি, ভূখণ্ড ত্যাগের বিনিময়ে শান্তি, আর গণতন্ত্র বিসর্জনের বিনিময়ে শান্তি কখনোই দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না।
ইউক্রেন কেবল একটি দেশ নয়, এটি এখন একটি প্রতীক-স্বাধীনতা, আত্মত্যাগ, এবং পশ্চিমা মূল্যবোধের। সেই প্রতীকের মূল্য ট্রাম্পের চুক্তির টেবিলে বেঁচে দেওয়া ঠিক হবে কি হবে না সেটাই দেখার অপেক্ষা।