শিরোনাম:
ঢাকা, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

Daily Pokkhokal
শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | বিশ্ব সংবাদ » নতুন যুগে ভারত-যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক, স্টারমার বললেন, ‘বড় বিজয়’
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | বিশ্ব সংবাদ » নতুন যুগে ভারত-যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক, স্টারমার বললেন, ‘বড় বিজয়’
৬ বার পঠিত
শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

নতুন যুগে ভারত-যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক, স্টারমার বললেন, ‘বড় বিজয়’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
---
যুক্তরাজ্য ও ভারত বৃহস্পতিবার একটি গুরুত্বপূর্ণ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এই দিনটিকে ‘ঐতিহাসিক’ এবং ‘ব্রিটেনের জন্য একটি বড় বিজয়’ বলে অভিহিত করেছেন।
নরেন্দ্র মোদি ও কিয়ার স্টারমার
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর দেওয়া এক বক্তব্যে স্টারমার বলেন, এই চুক্তি যুক্তরাজ্যজুড়ে কর্মসংস্থান বাড়াবে, ব্যবসায়িক সুযোগ প্রসারিত করবে এবং দেশের প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে।
তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের যুগান্তকারী বাণিজ্য চুক্তিটি ব্রিটেনের জন্য একটি বড় বিজয়। এটি যুক্তরাজ্যজুড়ে হাজার হাজার ব্রিটিশ কর্মসংস্থান তৈরি করবে, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নতুন সুযোগ উন্মুক্ত করবে এবং দেশের প্রতিটি প্রান্তে প্রবৃদ্ধি আনবে, যা আমাদের পরিবর্তনের পরিকল্পনারই অংশ।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘আমরা কঠোর পরিশ্রমী ব্রিটিশ নাগরিকদের আয় বাড়াতে এবং জীবনযাত্রার ব্যয় মোকাবেলায় সহায়তা করছি এবং আমরা অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে ও যুক্তরাজ্যজুড়ে জীবনযাত্রার মান বাড়াতে আরও দ্রুত ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
স্টারমারের মতে, ব্রেক্সিটের পর এটিই ব্রিটেনের সবচেয়ে অর্থনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তি।
অন্যদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাজ্য ও ভারতকে ‘স্বাভাবিক অংশীদার’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, দুই দেশ তাদের যৌথ ইতিহাসে ‘একটি নতুন অধ্যায় রচনা করছে’।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, যুক্তরাজ্য থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ভারতের গড় শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে কমে ৩ শতাংশে নেমে আসবে। এর ফলে কোমল পানীয়, প্রসাধনী থেকে শুরু করে গাড়ি ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পর্যন্ত বিভিন্ন ব্রিটিশ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারতীয় বাজারে উন্নত প্রবেশাধিকার পেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে লাভবান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই চুক্তির অন্যতম বড় সুবিধাভোগী হলো হুইস্কি উৎপাদকরা। চুক্তি অনুযায়ী, ব্রিটিশ হুইস্কির ওপর আরোপিত শুল্ক অবিলম্বে ১৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭৫ শতাংশ করা হবে। পরবর্তী দশ বছরে তা আরও কমিয়ে ৪০ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে, যা ব্রিটিশ উৎপাদকদের বৈশ্বিক প্রতিযোগীদের তুলনায় একটি বড় সুবিধা দেবে।
যুক্তরাজ্য সরকারের এক বিবৃতি অনুযায়ী, এই চুক্তির ফলে প্রায় ৬০০ কোটি পাউন্ড (৮০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি) নতুন বিনিয়োগ ও রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে এবং এর মাধ্যমে ২,২০০টিরও বেশি ব্রিটিশ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। ভারতীয় সংস্থাগুলো যুক্তরাজ্যে তাদের কার্যক্রম প্রসারিত করার পাশাপাশি ব্রিটিশ সংস্থাগুলোও ভারতে নতুন ব্যবসার সুযোগ পাবে।
বাণিজ্য চুক্তির পাশাপাশি, দুই দেশ একটি নবায়িত ব্যাপক ও কৌশলগত অংশীদারিত্বে স্বাক্ষর করেছে। এর ফলে প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, জলবায়ু, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের মতো খাতে গভীরতর সহযোগিতার পথ প্রশস্ত হলো।
যুক্তরাজ্য ও ভারত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে দুর্নীতি, সংগঠিত অপরাধ, গুরুতর জালিয়াতি এবং অনিয়মিত অভিবাসন মোকাবেলায় নতুন করে মনোযোগ দেওয়া হবে। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে এবং সঠিক নজরদারি তালিকা বজায় রাখতে যৌথ প্রচেষ্টা জোরদার করার লক্ষ্যে অপরাধীদের তথ্য বিনিময়ের একটি চুক্তি চূড়ান্ত করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
যুক্তরাজ্য বর্তমানে ভারত থেকে বছরে ১,১০০ কোটি পাউন্ডের পণ্য আমদানি করে। চুক্তির আওতায় কম শুল্কের ফলে উন্নত উৎপাদন শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালসহ ভারতীয় রপ্তানি পণ্যের দাম কমবে। একইভাবে, ভারতীয় উৎপাদকরাও বৈদ্যুতিক এবং হাইব্রিড গাড়ির জন্য যুক্তরাজ্যের বাজারে প্রবেশাধিকার পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এই চুক্তিটি চলতি সপ্তাহের শুরুতে ভারতীয় মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে, তবে এটি এখনও যুক্তরাজ্যের সংসদে অনুমোদন পায়নি এবং এটি কার্যকর হতে অন্তত এক বছর সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।



আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)