জামাত রাজনীতির বিষফোড়া
-আহমেদ ফজলুর রহমান মুরাদ —————————————-
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সজ্ঞায় পরিস্কার উল্লেখ করা হয়েছে আমাদের দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা কারী দল জামাতে ইসলামি ও তাদের সৃষ্ট রাজাকার আল বদর আল-শামস বাহিনী। জামাতে ইসলামি শুধু আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে থেমে থাকে নি তারা ১৯৭১ এর পরবর্তী সময়ের থেকে দেশের বিরুদ্ধে দেশের বাইরে বিদেশেও দেশ বিরোধী প্রচার চালিয়েছে।আর দেশের অভ্যন্তরে শুরু থেকেই দেশের রাজনীতিকে অস্থিতিশীল করতে নানামুখী প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে আসছে। ১৯৭২ এর থেকেই তারা দেশের প্রথম বিরোধী রাজনৈতিক দল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাথে যুক্ত থেকে নানাভাবে রাজনীতিকে অস্থির করতে সহায়তা শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সাধারণ ক্ষমার সুযোগে ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী আমলা ও পাকিস্তান ফেরত সেনা বাহিনীকে চাকরির অবসান না করে তাদের পূনরায় চাকরিতে পূনর্বাসনের সুযোগ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধু, জাতীয় চারনেতা জেনারেল জিয়াউর রহমান কর্নেল তাহের মেজর জেনারেল মঞ্জুর ও ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফকেও হত্যা করে।
১৯৭৫ এর পটপরিবর্তনের পরে জিয়াউর রহমানের বহু দলীয় গনতন্ত্রের সুযোগ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী যুদ্ধাপরাধী জামাতের রাজনীতিতে ফিরে আসার সুযোগ সৃষ্টি হলেও জিয়াউর রহমানের বিরোধিতায় তারা স্বনামে রাজনীতিতে ফিরতে না পেরে আইডিএল নামে রাজনীতিতে পূনর্বাসীত হয়।জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পরে আওয়ামী লীগের পূনর্বাসনের সুযোগ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেও পাকিস্তান প্রত্যাগত সেনাবাহিনী দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে নেয়।আর ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে নিয়ে জামাতে ইসলামি স্বনামে রাজনীতি করার সুযোগ নিয়ে স্বৈরাচার এরশাদের সামরিক শাসনের বৈধতা দিতে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে। গোলাম আযমের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেওয়া হয়। আর এখান থেকেই শুরু হয়েছে আমাদের দেশের রাজনীতির চরম অস্থিরতা। জামাত কখনো আওয়ামী লীগের সাথে কখনো বিএনপির সাথে থেকে দেশের রাজনীতিকে করে তুলেছে প্রতিহিংসার রাজনীতির পরাকাষ্ঠা। আর আমাদের দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জামাতের চালে পড়ে নিজেরাই শেষ করেছে দেশের রাজনীতির গনতান্ত্রিক কেন্দ্রীকতা।
জামাত শিবির এদুটো দলকে একে অপরের প্রতিপক্ষ বানিয়ে দিয়ে দীর্ঘদিন রাজনৈতিক সুবিধা ভোগ করে আসছে। দেশের রাজনীতির সকল বড়বড় অপরাধ সংঘটিত করেছে জামাত কিন্তু আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অপরকে দোষারোপ করে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করেছে। দশ ট্রাক অস্ত্র, গ্রেনেড হামলা, ৫০০ জায়গায় বোমা হামলা ২০১৩ সালের আগুন লাগিয়ে মানুষ হত্যা এসকল ঘটনায় আওয়ামী লীগ ঢালাওভাবে বিএনপিকে দায়ী করে মামলা দিয়ে দীর্ঘ পনের বছর কি প্রতিহিংসা চরিতার্থ করেছে সেটা সবার জানা কিন্তু এসকল ঘটনায় আসলেই অভিযুক্ত কারা সেটা সবাই জানে।। আওয়ামী লীগে লুকিয়ে অনুপ্রবেশ করে কিভাবে দেশের রাজনীতি কলুষিত করেছে সেটা এখন সবার সামনে প্রকাশিত হয়েছে।
আওয়ামী লীগ আগে বুঝতে না পারলেও পরবর্তী সময়ে বুঝতে পেরে জামাতের বিচার করে যুদ্ধপরাধীদের ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে।আর হাল আমলে বিএনপিও জামাতের রাজনীতি বুঝতে শুরু করেছে।আশা করি এবার আওয়ামী লীগ আর জামাতকে কোলে টেনে নিয়ে লুঙ্গির তলে জায়গা দিবে না। বিএনপিও যখন বুঝতে পারছে তখন তারাও আর জামাতকে প্রশ্রয় দিয়ে কাছে টেনে নিবেনা। এবার সুযোগ এসেছে বিষবৃক্ষ মুক্ত রাজনৈতিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার।আসুন আমরা সবাই মিলে তাতে সহায়তা করি।।