শিরোনাম:
ঢাকা, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২

Daily Pokkhokal
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪
প্রথম পাতা » খেলাধুলা » সাবেক ক্রিকেটারদের মিলনমেলা
প্রথম পাতা » খেলাধুলা » সাবেক ক্রিকেটারদের মিলনমেলা
৪২০ বার পঠিত
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

সাবেক ক্রিকেটারদের মিলনমেলা

---

পক্ষকাল (ক্রীড়া) প্রতিবেদক

সাইফুল ইসলামের বল অফ স্ট্যাম্পের সামান্য বাইরে দিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে কাট করেন হাবিবুল বাশার। বিদ্যুত গতি না থাকলেও পয়েন্টে দাঁড়ানো হাসানুজ্জামান ঝড়ুকে পরাস্থ করতে কোনো সমস্যা হয়নি বলটির। ঝড়ুকে ঠায় দাঁড় করিয়ে বলটি চলে যায় সীমানার বাইরে। বাউন্ডারি দড়ি পার হতেই সাইফুলকে ইঙ্গিত করে কিছু একটা বলেন বাশার। চকিত ঘুরে পাল্টা জবাব দেন সাইফুল। পরের বলটি বাউন্সার মারেন। বাশার পুল না খেলে মাথা নামিয়ে নেন। উইকেটরক্ষক জাহাঙ্গীর গ্লাভসবন্দী করতেই সাইফুল আক্রমণাত্মক ভঙ্গীতে কিছু বলেন বাশারকে। বিজয় দিবস উপলক্ষে শহীদ জুয়েল ও শহীদ মুস্তাক একাদশের কালকের প্রীতি ম্যাচের খণ্ড চিত্র এটা। প্রীতি ম্যাচ হলেও জাতীয় দলের সাবেক দুই ক্রিকেটারের শারীরিক ভাষা স্পষ্ট করেছে, ক্রিকেট ক্যারিয়ারে মাঠে প্রতিপক্ষ হিসেবে যে আচরণ করতেন, সেটার কোনো কমতি ছিল না। সেই ঝাঁজ, সেই শারীরিক ভাষা সবই ছিল কাল। প্রীতি ম্যাচ, আবেদন থাকবে বন্ধুত্বপূর্ণ; কিন্তু কাল মাঠের লড়াইয়ে কেউ কাউকে ছাড় দেননি। সাবেক ক্রিকেটারদের মিলন মেলায় পরিণত হওয়া ম্যাচটিকে শহীদ জুয়েল একাদশ কাল ৪৯ রানে হারায় শহীদ মুস্তাক একাদশকে।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই মুক্তিযোদ্ধা ক্রিকেটার শহীদ আব্দুল হালিম চৌধুরী জুয়েল ও সংগঠক শহীদ মুস্তাক আহমেদের নামে দুটি দল প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে। কাল খেললেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটাররা। বিজয় দিবসের আগে ম্যাচগুলো হতো ধানমন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। এবারই প্রথম হলো মিরপুরে। ম্যাচ খেলতে দেশের বাইরে থেকে এসেছেন হালিম শাহ, জিয়াউর রশীদ রূপম। বাস্তব জীবনে ব্যস্ত সময়ের মাঝেই মাঠে উপস্থিত ছিলেন আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, হাবিবুল বাশার, মো. রফিক, হাসিবুল হোসেন শান্ত, এনামুল হক মনিরা। খেলেছেন সবাই। একজন ব্যাটিং করেছেন তো, অন্যজন করেছেন ফিল্ডিং। এভাবেই সবাই উপভোগ করেছেন বিজয় দিবসের প্রীতি ম্যাচটি। প্রীতি ম্যাচে পুরনো বন্ধুদের ফিরে পেয়ে আপ্লুত সাবেক অধিনায়ক ও প্রধান নির্বাচক ফারুক, ‘বিজয় দিবস আমাদের দেশের সেরা একটি দিন। মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ জুয়েল ও শহীদ মুস্তাকের অবদানের কথা ভোলার নয়। এমন দিনে এই প্রীতি ম্যাচটি আমাদের পুরনো দিনে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। প্রীতি ম্যাচ হলেও প্রতিন্দ্বন্দ্বিতার কমতি ছিল না। আমরা সবাই চেষ্টা করেছি নিজেদের সেরাটা খেলতে।’ ২০ ওভারের ম্যাচে শহীদ জুয়েল একাদশ প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৩২ রান করে। দুই ওপেনার হাবিবুল বাশার ও জাভেদ ওমর বেলিম গুল্লু ১২.৪ ওভারে ৯৬ রান যোগ করে দলকে শক্ত ভিত দেন। গুল্লু ২৪ বলে ২৪ রান করলেও বাশারের ব্যাট থেকে বেরিয়েছে সর্বোচ্চ ৫২ রানের ইনিংস। ৪৪ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৭টি চার। দুই স্পিনার সাইফুল্লাহ জেম ও নাইমুর নেন ৩টি করে উইকেট। টার্গেট ১৩৩। জুয়েল একাদশের দুই পেসার শফিউদ্দিন বাবু ও আলমগীর কবিরের দুরন্ত বোলিংয়ে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পরে শহীদ মুস্তাক একাদশ। এক পর্যায়ে ৩৩ রানে খুইয়ে বসে ৬ উইকেট। তখনই নিশ্চিত হয়ে যায় হার। তারপরও সাজ্জাদ আহমেদ শিপন দৃষ্টিনন্দন কিছু ড্রাইভ খেলে ৩৫ রান করায় মান সন্মান বাঁচে মুস্তাক একাদশের। শিপনের দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত শহীদ মুস্তাকের ইনিংস থামে ১৬.৫ ওভারে ৮৩ রানে। ৩টি করে উইকেট নেন শফি বাবু ও রূপম। দুই মুক্তিযোদ্ধাকে স্মরণ করার প্রীতি ম্যাচ শেষে ক্রিকেটারদের পুরস্কৃত করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। উপস্থিত ছিলেন বিসিবি সহ সভাপতি মাহাবুব আনাম, ইসমাইল হায়দার মলি্লকসহ আরও কয়েকজন বিসিবি পরিচালক। বিশেষ অতিথি ছিলেন শহীদ জুয়েলের বোন। সকাল থেকেই মাঠে উপস্থিত ছিলেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ও এনামুল হক বিজয়। এছাড়া খেলা দেখেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুল।



পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)