
বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
প্রথম পাতা » বিশ্ব সংবাদ » বিচার ও সংস্কারের আগে নির্বাচন নয়-গণতন্ত্রের জন্য এক গুরুতর হুমকি
বিচার ও সংস্কারের আগে নির্বাচন নয়-গণতন্ত্রের জন্য এক গুরুতর হুমকি
মতামত: বিচার ও সংস্কারের আগে নির্বাচন নয়-গণতন্ত্রের জন্য এক গুরুতর হুমকি
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) যে ঘোষণা দিয়েছে-”বিচার ও সংস্কারের আগে কোনো নির্বাচন নয়”-এটি একটি গা-জ্বালানো রাজনৈতিক অবস্থান, যা গণতন্ত্রের মূল স্তম্ভকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এটি ভোটের অধিকার, আইনানুগ প্রক্রিয়া এবং জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে অবজ্ঞা করার একধরনের প্রচেষ্টা বলেই মনে হয়।
ভোটই গণতন্ত্রের হৃদস্পন্দন
নির্বাচন শুধু একটা রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়-এটি নাগরিকদের সর্বোচ্চ অভিব্যক্তি, যেখানে তারা তাদের ভবিষ্যতের পথচিহ্ন আঁকে। সংস্কার ও বিচার ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ হলেও, তা কখনোই নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে আটকে দেওয়ার অজুহাত হতে পারে না। কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার দাবি, রাজনৈতিক শত্রুদের ফাঁসিতে ঝোলানোর আহ্বান-এগুলো গণতান্ত্রিক চর্চার সম্পূর্ণ বিপরীত।
বিচার নয়, প্রতিশোধের রাজনীতি
আইনের শাসন মানে বিচারালয়, সাক্ষ্য ও যুক্তির ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত। দলীয় মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিচার দাবি করলে সে বিচার আর নিরপেক্ষ থাকে না। এটি হয়ে ওঠে প্রতিশোধমূলক রাজনীতির হাতিয়ার।
সংস্কারের মোড়কে ক্ষমতা দখলের ছলনা
“সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয়”-এই অবস্থান ক্ষমতা অর্জনের ছদ্মবেশ কিনা তা প্রশ্নবিদ্ধ। প্রকৃত সংস্কার আসে অংশগ্রহণের মাধ্যমে, যেখানে সব পক্ষের স্বর থাকে। একপক্ষীয় দাবি মানে গণতন্ত্রের দরজায় তালা দেওয়া।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে নেতিবাচক বার্তা
প্রতিবেশী ও আন্তর্জাতিক নেতাদের প্রতি আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্য অশনি সংকেত। বাংলাদেশের অবস্থান আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গুরুত্বপূর্ণ, তাই সংযত ও দায়িত্বপূর্ণ ভাষা প্রয়োজন।
সংলাপই হোক পথ, সংঘাত নয়
এনসিপি’র অবস্থান গণতন্ত্রের পথে অন্তরায়। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন-এই তিনটি স্তম্ভকে পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী না বানিয়ে, পরিপূরক করে গড়ে তুললেই সম্ভব একটি টেকসই, অংশগ্রহণমূলক রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ।