
বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
প্রথম পাতা » রাজনীতি » ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতির নির্দেশ: উত্তেজনার নতুন পর্ব
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতির নির্দেশ: উত্তেজনার নতুন পর্ব
ঢাকা, ৯ জুলাই ২০২৫ - অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা করেছেন যে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে। নির্দেশনাটি প্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক অঙ্গনে এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মধ্যে তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে।
ইউনূস বলেন, “এবারের প্রস্তুতি গত কয়েক নির্বাচনের চেয়ে অনেক বেশি সুসংগঠিত ও স্বচ্ছ হবে।” কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের অভিজ্ঞতা থেকে তৈরি মানদণ্ড মেনে নেওয়া হলে ভোটগ্রহণে যে কোনও ধরনের অনিয়ম বা বিলম্ব এড়ানো যাবে বলে তিনি দাবি করেন।
প্রস্তুতি কর্মসূচিতে মোট ৮ লাখ সদস্যের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ, আনসার, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের পাশাপাশি ১৭ হাজার নতুন কর্মী নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের পরিকল্পনাও প্রণীত হয়েছে। নিরাপত্তা বিভাগের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, “৪৭ হাজার ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৬ হাজার কেন্দ্রে সিসিটিভি এবং বডি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত ভোটগ্রহণকে আরও মনিটরযোগ্য করবে।”
নির্দেশনায় ১৮-৩২ বছর বয়সী তরুণ ভোটারদের জন্য পৃথক বুথ স্থাপনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের তরুণ বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, “যুবসমাজের অংশগ্রহণের হার বৃদ্ধি করতে না পারলে নির্বাচনের ফলাফলকে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা দেবে বলে আশা করা শক্ত।”
নিরপেক্ষতা রক্ষায় পূর্ববর্তী তিন নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের এবার কোনো নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে নির্বাচন শুরুর সাত দিন পূর্বে ও শেষের সাত দিন শাসন সম্প্রসারণ বাহিনী মাঠে থাকবে। সরকারের সূত্রে জানা গেছে, এই ব্যবস্থা ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও সাংগঠনিক জটিলতা কমাবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে এগিয়ে আসা হলেও মূলের ভোটযুদ্ধ ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এ হতে পারে। বিশ্লেষক দেবাশীষ মিত্র মনে করেন, “ডিসেম্বরের মধ্যে প্রস্তুতি শেষের নির্দেশনা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর আনুপাতিক শক্তি পরিমাপ ও সময়সূচি ঠিক করতে নতুন ধাক্কা পাওয়া যাবে।”
এই নির্দেশনা সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং সম্ভাব্য সহিংসতা ও গোলযোগ কমানোর নিমিত্তে আনা হলেও রাজনৈতিক মহলে কেউ কেউ এটিকে কৌশলগত অবস্থান বলেও মনে করছেন। তরুণ ভোটারদের জন্য পৃথক বুথের ধারণা দেশীয় সদস্যপদে তাদের ভূমিকা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনার প্রতীক- একটি সংকেত যা আগামী দিনের নেতৃত্বে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।