
বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
প্রথম পাতা » রাজনীতি | শিক্ষা ও ক্যারিয়ার » বিশ্বের শীর্ষ ১০ গণতন্ত্রের দেশে কোথাও তরুনদের আলাদা কোন ভোট বুথ নাই
বিশ্বের শীর্ষ ১০ গণতন্ত্রের দেশে কোথাও তরুনদের আলাদা কোন ভোট বুথ নাই
তরুণ ভোটারদের জন্য আলাদা বুথ: কেন বিশ্বজুড়ে সম্মিলিত সমর্থন পায়নি
লন্ডন থেকে ২৯ জুলাই ২০২৫ - বাংলাদেশে ১৮-৩২ বছর বয়সী ভোটারদের জন্য পৃথক ভোটবলয় চালুর প্রস্তাব রাজনৈতিক তত্ত্বাবধানে এবং নাগরিক আন্দোলনে সমানমতো বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। যদিও এই ধারণা কিছু ক্ষেত্রে পাইলট পরীক্ষায় নেওয়া হয়েছে, জাতীয় পর্যায়ে крупных গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে এটি এখনও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
বিশ্বের শীর্ষ ১০ গণতন্ত্রের মধ্যে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকা, রাশিয়া, চীন ও ব্রাজিলে যুব ভোটারদের জন্য স্বতন্ত্র বুথ কোনো উৎসব বা নির্বাচনী নির্দেশনায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন, প্রজন্মভিত্তিক ভেদাভেদের ঝুঁকি এবং প্রশাসনিক জটিলতা এই ধারণার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা বাধাগ্রস্ত করছে।
“একটি অভিন্ন ভোটকেন্দ্র সামাজিক সংহতির প্রতীক,” বলে মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিভাগীয় অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ। “যদি আলাদা বুথের মাধ্যমে ভোটার গোষ্ঠী পৃথক করা হয়, তাহলে বহুজাতিকতা ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার সে স্পেস সংকুচিত হতে পারে।”
প্রশাসনিক পর্যায়ের হিসাব অনুসারে, প্রতিটি বুথে পৃথক তালিকা তৈরি, অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ ও অতিরিক্ত সরঞ্জাম-সিসিটিভি, বডি ক্যামেরা-সহ ব্যয় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে। তুই এই বাড়তি খরচ ছাপ ফেলতে পারে রাজস্বব্যয়ে, যা অপেক্ষাকৃত উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে সংবেদনশীল ইস্যু।
নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সংগঠন “ভোটপ্রণয়” বলেছে, “অবৈজ্ঞানিক জিওগ্রাফিক্যাল বিভাজন ভোটারদের বিভ্রান্তি বাড়ায়; অনেক ক্ষেত্রেই ভোটার বুঝতে পারেন না কারা কোন বুথে ভোট দেবে।” সংগঠনটির সমীক্ষায় দেখা গেছে, তথ্যের অভাবে পর্যাপ্ত ধারণা না থাকলে ভোটারদের অংশগ্রহণের হার কিছুটা পতিত হয়।
কিছু সমালোচক যারা অভিযোগ করেছেন যে, আলাদা বুথ বরাদ্দ করলে তরুণদের ‘অনভিজ্ঞ’ বা ‘গুরুত্বহীন’ হিসেবে ব্র্যান্ডিং হয়ে যেতে পারে। রাজনৈতিক মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক কুমুদ বিশ্বাস জানালেন, “যুবসমাজের শক্তি স্বীকৃতি দেয়ার বদলে এরকম পদক্ষেপ তাদের বৈশিষ্ট্যগত কারণে দ্বিতীয় শ্রেণির ভোটার হিসেবে চিহ্নিত করার ঝুঁকি নেয়।”
অপরদিকে, ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত অভিজ্ঞ কর্মী না থাকায় প্রথমবারের ভোটারদের জন্য প্রয়োজনীয় তদারকি ও সহায়তা দিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে, যেখানে ভোটকেন্দ্রের দূরত্বই অনেকের জন্য সরকারি স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ ব্যয় বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
তবে সমালোচনার মাঝেও অনেকে মনে করেন, তরুণ ভোটারদের সক্রিয় করে তোলা নির্বাচনের স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি। “আলাদা বুথের বদলে সমন্বিত প্রয়াসে-যেমন ক্যাম্পাসে স্থায়ী ভোটদানের ব্যবস্থা, ডিজিটাল শিক্ষণ কর্মসূচি-আরো বেশি ফলপ্রসূ হতে পারে,” সূচনা করেন সিইসিআই-এর নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কবির।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের উন্নয়নশীল গণতন্ত্রগুলো জ্ঞানভিত্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নিয়ে যুব ভোটারদের আকৃষ্ট করতে পারে। পৃথক বুথের তুলনায় সমন্বিত শিক্ষা, সহজ প্রক্রিয়া ও তথ্যভিত্তিক প্রচারণাই বাস্তবসম্মত বিকল্প হিসেবে অধিক কার্যকর হবে।