ঢাকার জন্য ওয়াশিংটনের নতুন সংকেত
পক্ষকাল ডেস্ক প্রকাশিত: ০৬ জুলাই ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান মন্তব্য করেছেন যে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনকালীন প্রশাসন বাংলাদেশে গণতন্ত্র পরবর্তী Nation building বা জাতি গঠনে বিনিয়োগ করতে “খুব একটা উৎসাহী” নয়। বর্তমানে ওয়াশিংটন ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ককে মূলত বাণিজ্য ও বড় শক্তি প্রতিযোগিতার আলোচনায় বেঁধে দেখছে।
কুগেলম্যানের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনের সাউথ এশিয়া ব্রিফ বিভাগে, যেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ মুহাম্মদ ইউনূস ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সাম্প্রতিক টেলিফোনালাপের প্রসঙ্গ টেনে বলেন যে, আলোচনায় দুই সরকার মূলত অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা ঠেকাতে অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। মার্কিন অভ্যন্তরে এ ধরনের নিরাপত্তা ব্যাখ্যা হচ্ছে চীন মোকাবিলার কৌশল হিসেবে।
এই দুই কৌশলই ঢাকা পরিচালনায় বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে, মত কুগেলম্যানের। তিনি নিদের্শ করেন যে, যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বচ্ছ বাণিজ্য চুক্তি না হয়, তাহলে বাংলাদেশকে আমদানি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক সহ্য করতে হবে। অন্যদিকে, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি নিরপেক্ষ অবস্থান এবং সব প্রধান শক্তির সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে।
সোমবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মার্কো রুবিওর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন; এই সংলাপকে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে ঢাকার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের স্বরূপ বুঝতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। কুগেলম্যান বলেন, এই ফোনালাপ ভবিষ্যতে দুই দেশের কূটনৈতিক পথে নতুন দিক নির্ধারণে সহায়তা করবে।
ফোনালাপের পর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে জানান, দুই নেতা অর্থনৈতিক বন্ধন মজবুত করা এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বাড়ানোর বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন।
এর আগে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে অধ্যাপক ইউনূস আমেরিকার শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় শীর্ষ বিশেষজ্ঞ ও সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছিলেন। তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসন ‘পারস্পরিক শুল্ক’ নীতির আওতায় বাংলাদেশের আমদানিতে ৩৭ শতাংশ কর আরোপের ঘোষণা দিয়েছিল।
সরকার আশা করছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনা-সমঝোতার ফলে শুল্কের সমস্যা সমাধান হবে। এ প্রসঙ্গে পরবর্তী রাউন্ড বৈঠক ৮ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে সরকার।