
রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫
প্রথম পাতা » » ঐকমত্যের পথে বাধা: ফখরুলের হতাশা ও শঙ্কা
ঐকমত্যের পথে বাধা: ফখরুলের হতাশা ও শঙ্কা
পক্ষকাল ডেস্ক ৬ জুলাই ২০২৫
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রস্তাবগুলোতে বিএনপি–র সমর্থন সত্ত্বেও নতুন নতুন ইস্যুতে আলোচনায় এসেছে অন্তর্বিরতি, যা দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তীব্র হতাশা ও শঙ্কার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তিনি দাবি করেন, কমিশনের আলোচনায় বিএনপি–র ‘ছাড়ের হাত বাড়ানো’ সত্ত্বেও অবাঞ্ছিত প্রস্তাবের কারণে কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যে পথচলা শুরু হয়েছিল, তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছে বিএনপি।
বিএনপি–র ভূমিকা ও ছাড়ের স্বপক্ষপুষ্টি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেনবিএনপি সংবিধান ও জনপ্রশাসন সংক্রান্ত কমিশনে সমস্ত বা আংশিক প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছে।৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্দিষ্টকরণের মতো বিতর্কিত ইস্যুতেও দলটি ঐকমত্যের স্বার্থে ছাড় দিয়েছে।
বিচার বিভাগ, দুদক সংস্কার ও নির্বাচনী সুশাসন কমিশনের সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।পুলিশ সংস্কার নিয়ে প্রাথমিক-level এ সম্মত থাকলেও র্যাব বিলুপ্তি ইত্যাদি বিষয় এখনো আলোচনায় আসেনি
ছয়টি কমিশনে বিএনপি–র সম্মতি বনাম আপত্তি
কমিশন | মোট সুপারিশের সংখ্যা | সমর্থিত (পুরো/আংশিক) | আপত্তিজনিত প্রস্তাব |
---|---|---|---|
সংবিধান সংস্কার কমিশন | 70 | 68/2 | নতুন প্রদেশ সৃষ্টি |
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন | 208 | 187/5 | চাকরিতে পদোন্নতির নিয়ম |
বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন | 89 | 62/9 | আইনি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ |
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) | 47 | 46/1 | দুদকের ক্ষমতা সংক্রান্ত একটি |
নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার | 243 | 141/14 | কমিশনের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ |
পুলিশ সংস্কার কমিশন | 50 | 48/– | র্যাব বিলুপ্তি (আলোচনায় নেই) |
প্রধান আপত্তি ও উদ্বেগ
ফখরুল বলেন, নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলো ‘রাষ্ট্রের মূল কাঠামোর’ জন্য ক্ষতিকর অথবা বাস্তবায়নযোগ্য নয়নতুন প্রদেশ সৃষ্টির প্রস্তাবসরকারি চাকরিতে পদোন্নতির নির্দিষ্টকরণ
- বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ সম্ভাব্য সাব-শর্ত
- দুদকের অতিরিক্ত ক্ষমতা সংক্রান্ত একক সুপারিশ
এই প্রস্তাবগুলো সময়ানুবর্তী না হলে কমিশনের কার্যক্রম “গভীর স্থবিরতা” দেখা দেবে।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ও জনমনের প্রতিক্রিয়া
- মির্জা ফখরুলের মতে, ঐকমত্যের নামে নতুন ইস্যু উত্থাপনের ফলে জনগণে আশা ও উদ্বেগ দুটোই তৈরি হয়েছে।
- স্থায়ী সমাধানের জন্য কমিশনকে কেন্দ্রীয় বক্তব্য পরিষ্কার করতে হবে এবং অগ্রাধিকারসূচি নির্ধারণ করতে হবে।
- নীতি-নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন পর্যায়ে সিদ্ধান্ত-গ্রহণে জনগণের অংশগ্রহণ বাড়ানো না হলে সরকারি কাঠামোর বৈধতা প্রশ্নের সম্মুখীন হবে।
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মির্জা ফখরুল আগামী দিনের কর্মসূচি ও সম্ভাব্য বৈকল্পিক পথ নিয়েও শীঘ্রই ঘোষণা করবেন বলে জানান।