পক্ষকাল সংবাদঃ
আমেরিকার সুপ্রিম কোট সম্প্রতি একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার ফলে ট্রাম্প প্রশাসন এখন অভিবাসীদের তাদের নিজ দেশ নয়-এমন তৃতীয় কোনো দেশে ফেরত পাঠাতে পারবে।
এই সিদ্ধান্তটি এসেছে এমন এক সময়, যখন অভিবাসন নীতিতে কঠোরতা আরোপের জন্য ট্রাম্প প্রশাসন ব্যাপক পদক্ষেপ নিচ্ছে। আদালতের এই রায় একটি নিম্ন আদালতের আদেশকে স্থগিত করেছে, যা অভিবাসীদের এই ধরনের প্রত্যাবাসনের আগে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের সুযোগ দেওয়ার কথা বলেছিল।
এই মামলায় যেসব অভিবাসী জড়িত ছিলেন, তারা মিয়ানমার, ভিয়েতনাম ও কিউবার মতো দেশ থেকে এসেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে গুরুতর অপরাধে দণ্ডিত হয়েছেন। তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব না হওয়ায়, ট্রাম্প প্রশাসন তাদের দক্ষিণ সুদানের মতো তৃতীয় দেশে পাঠানোর চেষ্টা করে।
তবে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের তিনজন লিবারেল বিচারপতি তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন। বিচারপতি সোনিয়া সোটোমায়োর বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত হাজার হাজার মানুষকে নির্যাতন বা মৃত্যুর ঝুঁকিতে ফেলবে এবং এটি “আইনের প্রতি অবজ্ঞার পুরস্কার” দেয়।
এই রায়ের ফলে যুক্তরাষ্ট্র এখন এমন দেশগুলোতে অভিবাসীদের পাঠাতে পারবে, যেগুলোর সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই, এমনকি যদি সেই দেশগুলোতে মানবাধিকার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয় তবুও।
এই বিষয়গুলো আরও বিশ্লেষণ করে বললে:
কে এই অভিবাসীরা? এরা মূলত মিয়ানমার, কিউবা, ভিয়েতনাম, হন্ডুরাস, ইকুয়েডর ও গুয়াতেমালার মতো দেশ থেকে আসা মানুষ, যারা যুক্তরাষ্ট্রে গুরুতর অপরাধে দণ্ডিত হয়েছেন। তাদের নিজ দেশ ফিরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানানোয়, ট্রাম্প প্রশাসন তাদের দক্ষিণ সুদান বা লিবিয়ার মতো তৃতীয় দেশে পাঠাতে চায়2।
কেন বিতর্কিত? এই অভিবাসীদের অনেকেই দাবি করেছেন, তৃতীয় দেশে পাঠানো হলে তারা নির্যাতন, নিপীড়ন বা মৃত্যুর মুখোমুখি হতে পারেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, এখন তাদের সেই আশঙ্কা প্রকাশের সুযোগ না দিয়েই পাঠানো যাবে3।
বিচারপতিদের মতবিরোধ: তিনজন লিবারেল বিচারপতি-সোনিয়া সোটোমায়োর, এলেনা কাগান ও কেটানজি ব্রাউন জ্যাকসন-এই রায়ের বিরোধিতা করেছেন। সোটোমায়োর বলেছেন, এটি “আইনের প্রতি অবজ্ঞা” এবং “হাজার হাজার মানুষকে নির্যাতনের ঝুঁকিতে ফেলবে”3।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতিক্রিয়া: National Immigration Litigation Alliance-এর নির্বাহী পরিচালক বলেছেন, এই রায়ের “ভয়াবহ পরিণতি” হতে পারে এবং এটি “প্রয়োজনীয় আইনি সুরক্ষা কেড়ে নিচ্ছে”।
বর্তমান অবস্থা: কিছু অভিবাসীকে ইতিমধ্যে দক্ষিণ সুদানে পাঠানোর চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু আদালতের হস্তক্ষেপে তাদের একটি মার্কিন নৌঘাঁটিতে (Djibouti) রাখা হয়েছে। সেখানে তারা এবং নিরাপত্তারক্ষীরা কঠিন পরিবেশে আছেন