
শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » বিশ্ব সংবাদ » আট বছরেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ
আট বছরেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের গণবিস্থাপনের আট বছর পর তাদের পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। শুক্রবার সংস্থাটির একজন মুখপাত্র জানান, মিয়ানমারের ভেতরে থাকা এবং বিদেশে নির্বাসিত উভয় রোহিঙ্গারাই দিন দিন এক ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, ‘রাখাইন রাজ্য থেকে জোরপূর্বক গণবিস্থাপনের আট বছর পরও মিয়ানমারের ভেতরে ও বাইরে থাকা রোহিঙ্গারা তাদের চরম দুর্দশার মধ্যে আরও অবনতির সম্মুখীন হচ্ছেন’।
তিনি জানান, চলমান সহিংসতার কারণে আরও বেশি রোহিঙ্গা দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। তাদের অনেকেই বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছেন, যেখানে ইতোমধ্যে মিয়ানমার থেকে যাওয়া ১১ লাখের বেশি মানুষ বসবাস করছেন। ডুজারিক সতর্ক করে বলেন, এই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ থেকে রোহিঙ্গাদের জোর করে ফেরত পাঠানো বা সীমান্তে বাধা দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে, যা আন্তর্জাতিক ‘অ-প্রতিপ্রেরণ নীতি’ লঙ্ঘনের গুরুতর উদ্বেগ তৈরি করছে এবং আশ্রয়ের সুযোগ সংকুচিত করছে।
তহবিল সংকটের কারণে শিক্ষা, খাদ্য সহায়তা, স্বাস্থ্যসেবা, জীবনধারণের সুযোগ এবং সুরক্ষা পরিষেবাগুলো মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ডুজারিক জানান, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আন্তর্জাতিক মানবাধিকার, মানবিক ও শরণার্থী আইন অনুযায়ী সব বেসামরিক নাগরিককে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। এ বছরের শুরুতে কক্সবাজার সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মহাসচিব সেখানে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সহনশীলতা দেখেছেন এবং আন্তর্জাতিক সংহতি জোরদার ও সমর্থন বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, এই সংকটের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করে একটি ব্যাপক রাজনৈতিক সমাধানের পথে হাঁটতে হবে, যেখানে রোহিঙ্গাদের অর্থপূর্ণ অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা যায়।
গুতেরেস আশা প্রকাশ করেন, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের নির্দেশনায় আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সংখ্যালঘু বিষয়ে যে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, তা একটি স্থায়ী সমাধানের প্রয়োজনীয়তার দিকে বিশ্বের মনোযোগ ফেরাতে সাহায্য করবে।
জাতিসংঘের মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত সহিংসতা বন্ধের লক্ষ্যে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি মিয়ানমারের নেতৃত্বে একটি কার্যকর রাজনৈতিক প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন, যা রোহিঙ্গাদের ‘স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদার সঙ্গে এবং টেকসই প্রত্যাবর্তন’ নিশ্চিত করবে।