
মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » বিশ্ব সংবাদ | ব্রেকিং নিউজ » আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট এবং বাংলাদেশে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট এবং বাংলাদেশে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ
সম্পাদকীয় মতামত :
নেপালের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অশান্তি কেবল একটি দেশীয় ঘটনা নয়; এটি আসলে বৃহত্তর এশিয়ান ও বৈশ্বিক শক্তি সমীকরণের একটি পরীক্ষামূলক ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। নেপালের উদাহরণ দেখিয়েছে যে, ভারত ও চীনের যৌথ প্রভাব, সঠিক কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক উদ্যোগের মাধ্যমে, কোনো দেশকে মার্কিন সমর্থিত নীতি ও প্রভাব থেকে সরানো সম্ভব।
এবারের নজর কেড়েছে যে, নেপালে চীনের প্রথম দ্বিধা এবং ভারতের উদ্যোগ একত্রে কাজ করে মার্কিন “পন্থার” সম্ভাব্য প্রভাবকে প্রতিহত করেছে। এই যৌথ কৌশল দুই দেশের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে:
- ভারত-চীনের ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদার হচ্ছে।
- দুটি দেশই বৃহত্তম জনসংখ্যার বাজারে স্থিতিশীলতা পাচ্ছে।
- নেপালের সেনা ও সরকার মার্কিন সমর্থিত শক্তি থেকে দূরে সরানো সম্ভব হয়েছে।
নেপালের ঘটনা ইঙ্গিত দেয় যে, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ হতে পারে পরবর্তী “পরীক্ষার ক্ষেত্র”। বর্তমান সময়ে:
- চীনের সামরিক উপস্থিতি বঙ্গোপসাগরে বাড়ছে।
- ভারতের সেনারা মায়ানমারে মহড়া দিচ্ছে।
- উভয় দেশই এ অবস্থায় চুপ রয়েছে, যা প্রমাণ করে যে এটি একটি যৌথ পরিকল্পনার অংশ।
এখন আসি বাংলাদেশ প্রসঙ্গে:
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামরিক পরিস্থিতি
বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, সেনাবাহিনীর ভূমিকা এবং মার্কিন আগ্রাসনের সম্ভাবনা আন্তর্জাতিক নজর কাড়ছে।রাজনৈতিক অস্থিরতা: ভোট সংক্রান্ত অস্পষ্টতা, ক্ষমতা কেন্দ্রীকরণ এবং ভিন্ন রাজনৈতিক গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত সম্ভব।সেনাবাহিনী: বাংলাদেশের সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরে ‘মার্সেনারি’ বা নির্দিষ্ট শক্তির প্রভাবিত বাহিনী হিসেবে পরিচিত। এই সেনাবাহিনীর ভূমিকা আন্তর্জাতিক কৌশলগত খেলায় প্রভাব ফেলতে পারেমার্কিন আগ্রাসন ও চীনা প্রতিক্রিয়া:অতীতে চীন কোনো দেশেই মার্কিন আগ্রাসনের বিপরীতে এত সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করেনি
- বর্তমানে চীন সম্ভবত বাংলাদেশে মার্কিন আগ্রাসন প্রতিহত করার জন্য প্রস্তুত, কারণ এটি তাদের কৌশলগত স্বার্থের সঙ্গে যুক্ত
ভারতের নীরবতা বা সক্রিয় না থাকাও ইঙ্গিত দেয় যে, তারা চীনের সঙ্গে যৌথভাবে অবস্থান করছে।
কৌশলগত বিশ্লেষণ
- মার্কিন গভীর চক্রান্ত: মার্কিনিরা বাংলাদেশকে একটি কৌশলগত ফাঁদে পরিণত করতে চায়। সম্ভাব্য লক্ষ্য: ভারত-চীন যৌথতা ভাঙা এবং বঙ্গোপসাগরে প্রভাব বজায় রাখা।
- চীন-ভারতের যৌথ প্রতিক্রিয়া: নেপালের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়, যৌথভাবে কৌশল গ্রহণ করলে মার্কিন প্রভাবকে প্রতিহত করা সম্ভব।
- অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব: বাংলাদেশে ভোট বা রাজনৈতিক অস্থিরতা শুধু দেশীয় সমস্যা নয়; এটি বহুপাক্ষিক শক্তির ভারসাম্যকে প্রভাবিত করবে।
আন্তর্জাতিক মতামত
১. বাংলাদেশ সম্ভবত নেপালের মতো পরীক্ষার ক্ষেত্র হতে চলেছে, যেখানে মার্কিন পন্থা, চীনের প্রতিক্রিয়া এবং ভারতের নীরব কৌশল একসঙ্গে পরীক্ষা হবে।
২. নেপালের শিক্ষা: দেশের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা মোকাবেলায় শক্তিশালী দেশগুলোর যৌথ পদক্ষেপই চূড়ান্ত ফলাফল নির্ধারণ করতে পারে।
3. ভবিষ্যত দিকনির্দেশনা:
- ভারত ও চীনের যৌথ কৌশল শুধু ব্রিকসকে শক্তিশালী করবে না, বরং একটি মাল্টিপোলার বিশ্বব্যবস্থার সম্ভাবনাও বাড়াবে।
- বাংলাদেশের পরিস্থিতি একইভাবে একটি আন্তর্জাতিক “স্ট্র্যাটেজিক ল্যাবরেটরি” হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
- মার্কিন আগ্রাসন, দেশীয় সেনা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির মিলিত প্রভাব বিশ্বরাজনীতির ভারসাম্যকে প্রভাবিত করবে।