
শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » যার মজুমদার সর্বহারা শ্রেনির মুক্তি অনন্ত অনুপ্রেরণা কাজল ফকির
যার মজুমদার সর্বহারা শ্রেনির মুক্তি অনন্ত অনুপ্রেরণা কাজল ফকির
কাজল ফকির : চারু মজুমদার (১৫ মে ১৯১৮ - ২৮ জুলাই ১৯৭২) ছিলেন ভারতের একজন বিপ্লবী কমিউনিস্ট নেতা, যিনি নকশালবাড়ি আন্দোলনের অন্যতম প্রধান সংগঠক এবং ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী)-এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি “হিস্টোরিক এইট ডকুমেন্টস” নামে পরিচিত আটটি প্রবন্ধের মাধ্যমে ভারতের বিপ্লবী আন্দোলনের তাত্ত্বিক ভিত্তি স্থাপন করেন ।
চারু মজুমদারের বিপ্লবী দর্শন
চারু মজুমদার বিশ্বাস করতেন যে, শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সশস্ত্র সংগ্রাম অপরিহার্য। তিনি বলেছিলেন, “অস্ত্র ছাড়া ক্ষমতা দখলের চিন্তা নিছক অলীক কল্পনা” [2] । তার মতে, ভারতের রাষ্ট্রব্যবস্থা একটি বুর্জোয়া প্রতিষ্ঠান, যা কৃষক ও শ্রমিকদের শোষণ করে। তিনি মনে করতেন যে, ভারতের প্রধান কমিউনিস্ট দলগুলি সংশোধনবাদে লিপ্ত হয়ে সংবিধানের কাঠামোর মধ্যে কাজ করে, যা প্রকৃত বিপ্লবের পথে বাধা সৃষ্টি করে [1] ।
নকশালবাড়ি আন্দোলন ও কৃষক বিদ্রোহ
১৯৬৭ সালে দার্জিলিং জেলার নকশালবাড়ি গ্রামে কৃষক বিদ্রোহের মাধ্যমে চারু মজুমদার তার বিপ্লবী কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করেন। এই আন্দোলন ভারতের মাওবাদী আন্দোলনের সূচনা করে এবং “নকশাল” শব্দটি বিপ্লবীদের সমার্থক হয়ে ওঠে। এই বিদ্রোহের মাধ্যমে তিনি কৃষকদের জমির অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং শোষণমুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে সশস্ত্র সংগ্রামের আহ্বান জানান [3] ।
হিস্টোরিক এইট ডকুমেন্টস” ও বিপ্লবী তাত্ত্বিক ভিত্তি
চারু মজুমদারের “হিস্টোরিক এইট ডকুমেন্টস” ভারতের মাওবাদী আন্দোলনের তাত্ত্বিক ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। এই প্রবন্ধসমূহে তিনি ভারতের রাষ্ট্রব্যবস্থাকে বুর্জোয়া প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনের আহ্বান জানান।
চারু মজুমদার ছিলেন একজন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বিপ্লবী, যিনি শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। তার চিন্তা ও আদর্শ আজও বিপ্লবী আন্দোলনের পথপ্রদর্শক হিসেবে বিবেচিত হয়। বর্তমান সময়ে, যখন সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন চারু মজুমদারের দর্শন আমাদের নতুন করে ভাবতে শেখায়। তার আদর্শ অনুসরণ করে আমরা একটি শোষণমুক্ত, সমতা ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের পথে এগিয়ে যেতে পারি।