জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি: ফিরে দেখা ১ জুলাই
প্রথম পাতা | জাতীয় | ১ জুলাই ২০২৫ কোটা সংস্কার থেকে রাষ্ট্র রূপান্তরের পথে-একটি ঐতিহাসিক দিনের স্মরণ
নিজস্ব প্রতিবেদক আজ ১ জুলাই, বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি। ২০২৪ সালের এই দিনে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে শুরু হয় সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। এই আন্দোলন পরবর্তীতে রূপ নেয় একটি রাষ্ট্র রূপান্তর আন্দোলনে, যার ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে দেশের প্রতিটি প্রান্তে।
আন্দোলনের সূচনা: রাজু ভাস্কর্য থেকে শাহবাগ
১ জুলাই সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে থাকেন হাজারো শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশী। সেখান থেকে মিছিল বের হয়ে ঘুরে আসে কলাভবন, মল চত্বর, মাস্টারদা সূর্য সেন হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও বসুনিয়া তোরণ হয়ে ফিরে আসে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে। সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ঘোষণা দেওয়া হয়-৪ জুলাই পর্যন্ত সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করা হবে। একই সঙ্গে শাহবাগ মোড় অবরোধসহ তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনের মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম।
দাবির মূল বিষয়: কোটা সংস্কার ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা
আন্দোলনকারীরা দাবি করেন-
২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল করতে হবে।
ভবিষ্যতে কোটাব্যবস্থা নিয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত কমিশন গঠন করে নিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হল, গ্রন্থাগার ও মেডিকেল সুবিধা বন্ধ করা যাবে না।
প্রত্যয় স্কিমের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের দাবির প্রতি সংহতি জানানো হয়।
দেশজুড়ে প্রতিক্রিয়া
ঢাকা ছাড়াও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্তত ১১টি স্থানে একযোগে আন্দোলন হয়। ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ ব্যানারে আরও ছয়-সাতটি জায়গায় সমাবেশ হয়, যা আন্দোলনের সংগঠিত ও বিকেন্দ্রীকৃত চরিত্র তুলে ধরে।
নেতৃত্ব ও সংগঠন
মাঠপর্যায়ে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সকল ছাত্র সংগঠন কিন্তু দুর্ভাগ্যজঙ্ক হলেও নাহিদ আসিফ লুকায়িত শিবির আন্দোলনের গতিপথ পরিবর্ত্নের সাথেই পুরা হাসিনা পতনের ক্রেডীট হাইজ্যাক করে নিয়ে যায় মাহফুজ আসিফ সংগঠক নাহিদ ইসলাম বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব
এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার, গৃহীত হয় সংবিধান সংস্কারের উদ্যোগ। ২০২৫ সালে এই দিনটি স্মরণে মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় প্রার্থনা, শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বলন, এবং জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
সম্পাদকীয় মন্তব্য: ১ জুলাই কেবল একটি আন্দোলনের সূচনা নয়-এটি ছিল গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও রাষ্ট্র সংস্কারের পথে জনগণের প্রত্যাবর্তনের দিন। এই দিনটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সংগঠিত ছাত্র-জনতা চাইলে ইতিহাস বদলে দিতে পারে।