
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
প্রথম পাতা » অপরাধ » বেনজির ও মেয়ের নামে থাকা দুবাই এ একটি ফ্লাট দুটি ব্যাংক হিসাব জব্দ
বেনজির ও মেয়ের নামে থাকা দুবাই এ একটি ফ্লাট দুটি ব্যাংক হিসাব জব্দ
নিজস্ব সংবাদ :দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক সম্পদ পুনরুদ্ধারের পদক্ষেপ
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, ঢাকার একটি আদালত সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের কন্যা তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে থাকা একটি ফ্ল্যাট জব্দ এবং দুটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছে। এই আদেশের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্পদ পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণের প্রতিফলন ঘটেছে।
মামলার পটভূমি ও অভিযোগ
২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর, দুদক বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জিশান মির্জা, এবং তাদের দুই কন্যার বিরুদ্ধে ৭৪ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে চারটি মামলা দায়ের করে। মামলায় উল্লেখ করা হয়, বেনজীর আহমেদ ৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, তার স্ত্রী ৩১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, বড় মেয়ে ফারহীন রিশতা ৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, এবং মেজো মেয়ে তাহসিন রাইসা ৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
আদালতের আদেশ ও সম্পদের বিবরণ
দুদকের উপপরিচালক জয়নাল আবেদীনের আবেদনের ভিত্তিতে, ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব ২০২৫ সালের ৮ মে এই আদেশ প্রদান করেন। আদেশে বলা হয়, তাহসিন রাইসার নামে দুবাইয়ে থাকা একটি ফ্ল্যাট, যার মূল্য প্রায় ৪০ লাখ দিরহাম (বাংলাদেশি মুদ্রায় আনুমানিক ১৩ কোটি ২২ লাখ টাকা), জব্দ করা হবে। এছাড়াও, আমিরাত এনবিডি ব্যাংকে তাহসিন রাইসার নামে থাকা দুটি ব্যাংক হিসাব, যার মোট ব্যালেন্স ১ লাখ ৪৩ হাজার ৪৯৭ দিরহাম, অবরুদ্ধ করা হয়েছে। [2]
আন্তর্জাতিক সম্পদ পুনরুদ্ধার ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
দুদক সূত্রে জানা যায়, এই আদেশের কপি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে, যাতে তারা ফ্ল্যাটটি জব্দ এবং ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে। এটি বাংলাদেশের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এবং বিদেশে সম্পদ অর্জনের ঘটনা বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। তবে, এই ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ এবং আন্তর্জাতিক সম্পদ পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়ায় সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে।