
রবিবার, ৪ মে ২০২৫
প্রথম পাতা » বিশ্ব সংবাদ | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » মিজোরামে সম্প্রতি আটক হওয়া দুই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিককে নিয়ে নতুন তথ্য
মিজোরামে সম্প্রতি আটক হওয়া দুই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিককে নিয়ে নতুন তথ্য
শফিকুল ইসলাম কাজল–
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মিজোরামে সম্প্রতি আটক হওয়া দুই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিককে নিয়ে নতুন তথ্য উঠে এসেছে। গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, তারা মিজোরামের রাজধানী আইজলে পৌঁছে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর শীর্ষ নেতা নাথান লনচেও বমের সঙ্গে সাক্ষাতের পরিকল্পনা করেছিল। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে সক্রিয় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগাযোগেরও অভিযোগ রয়েছে।
কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও নাথান বম
কেএনএফ, যা বম পার্টি নামেও পরিচিত, ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সশস্ত্র শাখা কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি স্বতন্ত্র কুকি-চিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে। নাথান লনচেও বম, একজন বম রাজনীতিবিদ ও সশস্ত্র নেতা, এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং কেএনএ-এর নেতা। বর্তমানে তার অবস্থান অজানা, তবে ধারণা করা হয় তিনি মিজোরাম বা মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে আত্মগোপনে রয়েছেন ।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সন্দেহ করে যে এই মার্কিন নাগরিকরা কেএনএফ-এর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে চেয়েছিল। তাদের আটক করে মিজোরাম থেকে বহিষ্কার করে দিল্লিতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনা ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, কারণ এটি পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ইঙ্গিত দেয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামে কেএনএফ-এর কার্যক্রম
কেএনএফ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় সক্রিয়, যেমন বাঘাইছড়ি, বরকল, বিলাইছড়ি, জুরাইছড়ি, রুমা, থানচি, আলীকদম ও রোয়াংছড়ি। তারা স্থানীয় যুবকদের সংগঠনে যুক্ত করছে এবং অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী কেএনএফ-এর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে, তবে সংগঠনটি এখনও সক্রিয় রয়েছে।
আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ প্রেক্ষাপট
এই ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয় যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ রয়েছে, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি। ভারত ও বাংলাদেশকে এই ধরনের সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া।
এই পরিস্থিতি পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও কঠোর নজরদারির মাধ্যমে এই ধরনের হুমকি মোকাবিলা করা সম্ভব।