
শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » তারেক রহমানের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রীত্ব এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক হিসাব-নিকাশ
তারেক রহমানের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রীত্ব এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক হিসাব-নিকাশ
সম্পাদকীয়: নতুন নেতৃত্বের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ - তারেক রহমানের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রীত্ব এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক হিসাব-নিকাশ
শফিকুল ইসলাম কাজল:
বাংলাদেশ আবারো এক বড় রাজনৈতিক বাঁকের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। জাতীয় রাজনীতির চোরাবালিতে যখন জনসাধারণ ক্লান্ত, হতাশ আর আস্থাহীনতায় জর্জরিত, তখন “রহমান” নামটি নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে। প্রশ্ন উঠেছে- *রহমান কি প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন?যদি হয়, তাহলে সেই নেতৃত্ব দেশের জন্য কী বার্তা বহন করবে?
জনগণের মনোভাব: আশার আলো নাকি সংশয়ের ছায়া?
দেশের সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি ও সুশাসনের অভাবের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। তারা একটি কার্যকর, স্বচ্ছ ও জনবান্ধব সরকার চায়। রহমানের আবির্ভাবে কিছু মানুষ আশার আলো দেখছে-বিশ্বাস করছে, নতুন নেতৃত্ব হয়তো গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে এবং জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধারের পথ তৈরি করবে।
কিন্তু একই সঙ্গে অনেকে সন্দিহান। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে জনগণের একটি বড় অংশ আশঙ্কা করছে-নতুন মোড়কে পুরনো শাসনের পুনরাবৃত্তি কি আবার শুরু হবে না?
রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রতিক্রিয়া: প্রস্তুতি ও পুনর্বিন্যাস
রহমানের সম্ভাব্য উত্থান দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কাঁপন ধরিয়েছে। একদিকে কিছু দল নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় তার সঙ্গে মিতালী গড়ার চেষ্টা করছে।নঅন্যদিকে কিছু দল নতুন জোট গঠনের পরিকল্পনা করছে, রহমানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য প্রতিরোধ গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে।
দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এখন নিজেদের অবস্থান নির্ধারণে ব্যস্ত-কারণ তারা জানে, রাজনৈতিক ক্ষেত্র দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে এবং দেরি করলে তারা ছিটকে পড়তে পারে।
আন্তর্জাতিক মহলের হিসাব-নিকাশ: কে কি চায়?
বাংলাদেশের রাজনীতির এই অস্থির সময়ে বিশ্বশক্তিরাও নীরবে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে।
ভারত:বাংলাদেশে স্থিতিশীল ও ভারতের স্বার্থবান্ধব সরকার চায়। রহমানের নেতৃত্বে তারা কিছুটা ইতিবাচক সম্ভাবনা দেখলেও, সাবধানতাও অবলম্বন করছে।
চীন:মেগা প্রকল্প ও অর্থনৈতিক বিনিয়োগ টিকিয়ে রাখতে যে কোনো সরকারকেই গ্রহণ করতে প্রস্তুত, যদি তাদের বাণিজ্যিক স্বার্থ অক্ষুন্ন থাকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা বিশ্ব:* মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং মুক্ত সংবাদমাধ্যমের বিষয়গুলোতে রহমানের অবস্থান দেখবে। সাম্প্রতিক ভূ-রাজনৈতিক চাপের মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্র চাইবে বাংলাদেশ যেন চীনের অতিরিক্ত প্রভাব থেকে সুরক্ষিত থাকে।
মধ্যপ্রাচ্য:প্রধানত শ্রমবাজার এবং রেমিট্যান্সের স্বার্থে বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা কামনা করছে, তাই তারা নিরপেক্ষ থেকেও স্বার্থবান্ধব অবস্থান বজায় রাখবে।
তারেক রহমানের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ: জনগণের আস্থা, সুশাসন, এবং ভারসাম্য
প্রধানমন্ত্রী হলে রহমানকে সামনে রাখতে হবে তিনটি প্রধান দায়িত্ব:
১. জনগণের হারানো আস্থা ফিরিয়ে আনা। ২. রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অবসান ঘটিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা।
৩. আন্তর্জাতিক কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রেখে দেশের স্বার্থ রক্ষা করা।
অর্থনীতি চাঙা করা, শিক্ষা-স্বাস্থ্যখাতে আমূল সংস্কার আনা, এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা-এসবও জরুরি কাজের তালিকায় থাকবে।
নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন তখনই সফল হবে, যদি রহমান নেতৃত্বে আসার পর বাস্তবিক পরিবর্তন আনতে পারেন। শুধু মিছিল, স্লোগান আর ওয়াদা দিয়ে নয়-কাজের মধ্য দিয়ে।*
শেষ কথা:
বাংলাদেশের সামনে এখন দুটি পথ:
একটি পথ - পরিবর্তনের মাধ্যমে উন্নয়নের অভিযাত্রা।
অন্যটি নতুন মোড়কে পুরনো ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি।
এই মুহূর্তে জনগণের, রাজনীতিকদের এবং আন্তর্জাতিক মহলের চোখ বাংলাদেশে। সময় এখন পরীক্ষার। সময় এখন সিদ্ধান্তের।
আপনার মতামত কী? রহমান প্রধানমন্ত্রী হলে আপনি কি আশাবাদী?কমেন্ট করুন, আপনার মতামত গুরুত্বপূর্ণ।