
শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » » ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছে যুদ্ধের অনুমতি চাওয়া - জম্মু ও কাশ্মীর হামলার পর উত্তপ্ত দিল্লি
ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছে যুদ্ধের অনুমতি চাওয়া - জম্মু ও কাশ্মীর হামলার পর উত্তপ্ত দিল্লি
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫*
কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগামে সাম্প্রতিক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতের জাতীয় রাজনীতিতে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। হামলার ঘটনার পরপরই ভারতের রাষ্ট্রপতি *দ্রৌপদী মুর্মু*-র সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী *অমিত শাহ* এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী *এস. জয়শঙ্কর*। রাষ্ট্রপতির কাছে তারা দুটি লাল রঙের ফাইল জমা দিয়েছেন-যা নিয়ে দেশজুড়ে নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম *আনন্দবাজার পত্রিকা* এবং *এনডিটিভি*-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই দুই মন্ত্রী রাষ্ট্রপতির কাছে যে দুটি লাল ফাইল জমা দিয়েছেন, তা যুদ্ধ সংক্রান্ত অনুমতি এবং দেশের সর্বোচ্চ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করার অনুরোধ হতে পারে বলে অনেকেই ধারণা করছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন,
> “এটি নিছক কোনো চুক্তি বা ব্যবসায়িক ফাইল নয়। একটি ফাইল যুদ্ধ শুরুর জন্য, অন্যটি জরুরি পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ প্রতিরক্ষা ব্যবহারের অনুমতির জন্য।”
সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি ও সর্বদলীয় বৈলকাশ্মীর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় সংসদে একটি *সর্বদলীয় বৈঠক* আহ্বান করেছে ভারত সরকার। প্রতিরক্ষামন্ত্রী *রাজনাথ সিং* এই বৈঠকের সভাপতিত্ব করবেন। মূল আলোচ্য বিষয় হবে জম্মু ও কাশ্মীরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং সম্ভাব্য সামরিক প্রতিক্রিয়া।
ভারতীয় সরকার ইতিমধ্যেই হামলার পেছনে ‘বিদেশি মদতপুষ্ট সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’র ইঙ্গিত দিয়েছে। ফলে প্রতিবেশী দেশের (পাকিস্তান) প্রতি কঠোর অবস্থান গ্রহণের সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে।
ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিক্রিয়া
কাশ্মীরের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে *অল ইন্ডিয়া সুফি সাজ্জাদানাশিন কাউন্সিল*। সংগঠনের চেয়ারম্যান *সৈয়দ নাসিরউদ্দিন চিশতী* বলেছেন, ইসলামে নিরীহ মানুষ হত্যার কোনো স্থান নেই। যারা এ ধরনের হামলা চালিয়েছে, তারা মানবতা এবং ধর্ম উভয়েরই শত্রু। পাকিস্তানকে তার দায়িত্ব বোঝা উচিত।”
—
বিরোধী দলের প্রশ্ন
এদিকে কংগ্রেস* নেতা কেসি বেনুগোপাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন,
পহেলগাম অঞ্চলে তিনস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে এমন হামলা কীভাবে ঘটল, তা নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা একটি এলাকায় এ ধরনের ঘটনা সরকারের ব্যর্থতার ইঙ্গিত দেয়।”
তিনি আরও বলেন, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।
হামলার এলাকা পহেলগাম, অনন্তনাগ, জম্মু ও কাশ্মীর | সরকারি প্রতিক্রিয়া রাষ্ট্রপতির কাছে লাল ফাইল পেশ |
সম্ভাব্য পদক্ষেপ যুদ্ধের অনুমতি বা সর্বোচ্চ প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি |
সর্বদলীয় বৈঠক বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা, সংসদ ভবন |
ধর্মীয় প্রতিক্রিয়া সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অল ইন্ডিয়া সুফি পরিষদের নিন্দা |
| বিরোধী প্রশ্ননিরাপত্তা ব্যবস্থায় গাফিলতির তদন্ত দাবি |
শেষ কথা
কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি শুধু কাশ্মীর বা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের বিষয় নয়, বরং পুরো দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে নতুন করে উত্তপ্ত করতে পারে। রাষ্ট্রপতির অনুমতি যদি যুদ্ধ বা প্রতিরক্ষার সর্বোচ্চ প্রস্তুতির সংকেত হয়, তবে উপমহাদেশে বড় ধরনের উত্তেজনার দ্বার খুলে যেতে পারে।