
সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » অপরাধ » বাংলাদেশ আই সিটি ট্রাইব্যুনাল ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার ওয়ারেন্ট জারি করল
বাংলাদেশ আই সিটি ট্রাইব্যুনাল ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার ওয়ারেন্ট জারি করল
(ICT) সোমবার ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার ওয়ারেন্ট জারি করেছে, যাদের মধ্যে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর মুহিউদ্দিন হাসিবুর রশিদও রয়েছেন। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের ওই ট্রাইব্যুনাল মোট ৩০ আসামির চার্জ গ্রহণ করেছে। চারজন-সাবেক প্রোক্টর শরিফুল ইসলাম, সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজান চন্দ্র রায় ও ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী-এখনই কারাগারে রয়েছেন। ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল ১৬ জুলাই ২০২৪: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্কমোর এলাকা থেকে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হন-বাংলাদেশে পুলিশ গুলিতে নিহত প্রথম শিক্ষার্থী হিসেবে এটি ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করে এবং আন্দোলন অব্যাহত রাখে। নিহত আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী ICT-এর প্রসিকিউশন উইং-এ অভিযোগ দায়ের করেন, যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আরও ২৩ জনকে আসামি করা হয়। আর সাব-ইনস্পেক্টর বিভূতি ভূষণ রায়ের FIR-এ দাবি ছিল-প্রতিবাদকারীদের ছোড়া ইট-পাটকেলের আঘাতে সাঈদের মৃত্যু, পুলিশের গুলিতে নয়; ওই FIR-এ বিএনপি ও জামায়াতে কর্মীদেরও উড়িয়ে আনার অভিযোগ তোলা হয়। প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, তদন্তে মোট ৩০ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এ সিদ্ধান্তকে মুহিউদ্দিন ইউনুস নেতৃত্বাধীন অস্থায়ী সরকারের প্রতিশোধমূলক চাল হিসেবে দেখছেন-গত আগস্টে শেখ হাসিনার নির্বাসনের পর তার অনুগামীদের বিরুদ্ধে সমান্তরাল মামলা দায়েরের ধারাবাহিকতার অংশ বলে অভিযোগ করেন তারা। ICT-২ সূত্রে জানা গেছে, মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্যে রাখা হয়েছে ১০ জুলাই, যদিও তা পর্যন্ত আসামিদের উপস্থিতি নিশ্চিতে আরও গ্রেপ্তারি কার্যক্রম চলতে পারে। এ ঘটনাটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কীভাবে প্রভাব ফেলতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বাংলাদেশের রাজনৈতিক চিত্রে সম্ভাব্য প্রভাবগুলো হতে পারে: ১. বিচার বিভাগের বিশ্বাসযোগ্যতা হ্রাস ট্রাইব্যুনালের পদক্ষেপকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বা প্রতিশোধমূলক হিসেবে দেখলে ‘ন্যায্য বিচার’ নিয়ে শঙ্কা দেখা দেবে, যা পুরো বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও স্বাধীনতার ভাবমূর্তি নষ্ট করবে। ২. রাজনৈতিক মেরুকরণ তীব্রীকরণ মুহাম্মদ ইউনুস নেতৃত্বাধীন অস্থায়ী সরকারের ‘প্রতিশোধ’ বলে বিরোধীরা অভিযোগ করলে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী শিবিরের মধ্যে বিদ্বেষ আরও বাড়বে, রাজনৈতিক সমাবেশ ও বিতর্ক আরও ক্ষিদে করে তুলতে পারে3। ৩. দ্বিদলীয় সংঘাতের প্রকোপ বাড়া নির্মম দমন নীতি হিসেবে দেখলে আওয়ামী লীগের সমর্থকরা কঠোর অভিযানের পক্ষে সরে আসবে, বিরোধীরা আবার ‘ন্যায়বিচার’ দাবি চালিয়ে তীব্র সমাবেশ-অবরোধে যাবে, যা সারা দেশে অস্থিতিশীলতা ছড়াতে পারে। ৪. আন্তর্জাতিক সুনাম ও বিনিয়োগে নেতিবাচক শঙ্কা মানবাধিকার ও বিচারের আন্তর্জাতিক মান রক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দ্বিধাগ্রস্ত হবে, বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বে সংশয় প্রবল হবে। ৫. সামাজিক অস্থিরতা ও নতুন বিক্ষোভ শিক্ষার্থী, পেশাজীবী ও মানবাধিকার কর্মীরা আবার প্রতিবাদ মিছিল-অনশন শুরু করতে পারে, রাজপথের পরিবেশ আবার উত্তপ্ত হতে পারে এবং আইন-শৃঙ্খলা হ্রাস পেতে পারে। ৬. নীতি-নির্ধারণে ধীরগতি রাজনৈতিক অশান্তি ও আভ্যন্তরীণ সংঘাত বাড়লে, জনগণের আস্থা কমে গিয়ে উন্নয়ন প্রকল্প ও কর্পোরেট বিনিয়োগ পরিকল্পনায় বিলম্ব দেখা দেবে।