
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » অপরাধ » মালয়েশিয়ায় ইসলামি জঙ্গিবাদে জড়িত ৩৬ বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তার
মালয়েশিয়ায় ইসলামি জঙ্গিবাদে জড়িত ৩৬ বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তার
চন্দন নন্দী ২৭ জুন ২০২৫ প্রতিবেশী বিভাগ:
মালয়েশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা ইসলামি চরমপন্থার সঙ্গে জড়িত ৩৬ জন বাংলাদেশি নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেছে। এই গ্রেপ্তারের আগে মালয়েশিয়ার প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল দাতুক মোহাম্মদ রজালি আলিয়াস ঢাকায় এসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা ডোজিয়ার শেয়ার করেন।
১৬ জুন মধ্যরাতের কিছু পর, বাতিক এয়ারের একটি ফ্লাইটে (OD-162) করে লেফটেন্যান্ট জেনারেল রজালি ও তার চার সদস্যের দল ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই-এর আমন্ত্রণে তারা ঢাকার র্যাডিসন ব্লু হোটেলে অবস্থান নেন।
সকাল ১১:৫৫ মিনিটে মালয়েশিয়ার প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (MDIO) বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে একটি উপস্থাপনা দেয়। এতে তারা জানায়, ৩৬ জন বাংলাদেশি নাগরিক মালয়েশিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে একটি গোপন চরমপন্থী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল চরমপন্থী মতাদর্শ ছড়ানো, অর্থ সংগ্রহ এবং নিজ নিজ দেশে সরকারকে অস্থিতিশীল করা।
এই চরমপন্থী নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ায় তিন ধাপে একটি অভিযান চালানো হয়, যা শুরু হয় ২৪ এপ্রিল সেলাঙ্গর ও জোহর রাজ্যে। অভিযানের শেষে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার দণ্ডবিধি অনুযায়ী মামলা করা হয়, ১৫ জনকে দেশ থেকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেওয়া হয় এবং বাকি ব্যক্তিদের তদন্ত চলছে।
মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (Kementerian Dalam Negeri) ২৭ জুন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, তারা কোনো ধরনের চরমপন্থী কার্যকলাপ সহ্য করবে না এবং এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারা দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
মালয়েশিয়ার ‘কেরাজান মাদানি’ বা নাগরিক সরকার জানিয়েছে, তারা দেশের মাটিতে কোনো বিদেশি উগ্রবাদী গোষ্ঠী বা মতাদর্শের বিস্তার বরদাস্ত করবে না এবং ভবিষ্যতেও চরমপন্থার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান বজায় রাখবে।
এই ঘটনাটি বাংলাদেশের বর্তমান অস্থির রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত, যেখানে একদিকে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা চলছে, অন্যদিকে দেশের বাইরে বসবাসরত কিছু বাংলাদেশি নাগরিক আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে।