
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » আমি যে যন্ত্রণার কথা বলছি তা কেবল গুম হওয়া ব্যক্তির নয় - পুরো পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি।
আমি যে যন্ত্রণার কথা বলছি তা কেবল গুম হওয়া ব্যক্তির নয় - পুরো পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি।
আমি যে যন্ত্রণার কথা বলছি তা কেবল গুম হওয়া ব্যক্তির নয় - পুরো পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি।
রফিকুল ইসলাম কাজল “গুমের বিচার নয়, গুমের উপর চুনকাম করছে রাষ্ট্র
বাংলাদেশে রাষ্ট্র যখন গুম নিয়ে তথাকথিত ‘তদন্ত কমিশন’ গঠন করে, তখন সেটি যতটা না ন্যায়বিচারের পদক্ষেপ, তার চেয়ে অনেক বেশি একটি *বৈধতা দেয়া নাটকীয়তা*। আজ পর্যন্ত এই গুম কমিশন একটিবারও গুম হওয়া মানুষের পরিবারগুলোর দোরগোড়ায় গিয়ে ন্যূনতম সহানুভূতির হাত বাড়ায়নি।
এই কমিশন আসলে কি জানে না- প্রতিটি গুম ভিক্টিম পরিবারের মা-বাবা, ভাই-বোন, সন্তান ও স্বজনেরা আজও প্রতিদিন আতঙ্কে ঘুমাতে যায়, পুলিশি হয়রানির ভয়ে চুপচাপ বসে থাকে, আর জীবিকার উৎস হারিয়ে *অর্থনৈতিকভাবে চরম নিঃস্ব* হয়ে পড়েছে? রাষ্ট্র যদি সত্যিই বিচার চায়, তবে কেন তারা একবারও প্রকাশ্যে বলেনি- “এই পরিবারগুলো আমাদের দায়িত্ব”?
❝*আমরা তো শুধু একজনকে হারাইনি, আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ, আমাদের মর্যাদা, আমাদের নিরাপত্তাবোধকে চিরতরে হারিয়ে ফেলেছি…*❞ - এমন হাহাকার প্রতিটি গুম ভিক্টিম পরিবারের হৃদয়ে প্রতিধ্বনিত হয়।
এই কমিশনের কোনো প্রতিবেদনে আমরা দেখি না সেই স্বজনহারাদের যন্ত্রণা। দেখি না সেই ভগ্ন হৃদয়, উন্মূল জীবন, নষ্ট হওয়া শিক্ষার স্বপ্ন, অসুস্থ সন্তানের ওষুধের অভাব। আমরা দেখতে পাই শুধু *টেবিল ঘিরে কফির কাপ হাতে কাগজ ঘাঁটা আর রাষ্ট্রীয় ভাষায় লেখা বিমূর্ত রিপোর্ট*।
গুম যেন না হয়, তার প্রতিকার চাইলে, গুম যারা করেছে তাদের নাম নিতে হবে। কমিশনের প্রথম কাজই হওয়া উচিত ছিল - প্রতিটি ভিক্টিম পরিবারের সঙ্গে দেখা করা। একটিবার প্রশ্ন করা, “আপনার কী ক্ষতি হয়েছে, রাষ্ট্র কী ফেরত দিতে পারে?” কিন্তু না, এই কমিশন সেসব এড়িয়ে গিয়েছে। কারণ তারা জানে - তারা *বিচার করতে নয়, ক্ষমতা রক্ষায় নিযুক্ত*।
এই সরকার, এই রাষ্ট্র, আজ যে ‘গুমের বিচার করছে’ বলে প্রচার করছে, তারা কি বলতে পারবে- *একটিবারও কোনো পরিবারের দুঃখ জানার চেষ্টা করেছে?* একটিবারও কোনও শিশুকে জিজ্ঞেস করেছে- “তোমার বাবা কোথায়?” *উত্তর তারা জানে। কিন্তু সত্য বলার সাহস নেই।*
আজ, আমরা চাই না লোকদেখানো তদন্ত। আমরা চাই *মানবতা, দায়িত্ব, বিচার এবং ক্ষমতার আসল জবাবদিহি।* রাষ্ট্র যদি এই দায় স্বীকার না করে - তবে জনগণ একদিন প্রশ্ন করবে, *গুমের রাষ্ট্রের নামে আমরা আর কতকাল ঘুমিয়ে থাকব?*