শিরোনাম:
ঢাকা, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২

Daily Pokkhokal
সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | ব্যাংক-বীমা | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি | শেয়ারবাজার » ধনিরা কর দেয় না, কর দেয় গরীবেরা
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | ব্যাংক-বীমা | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি | শেয়ারবাজার » ধনিরা কর দেয় না, কর দেয় গরীবেরা
২২৩০ বার পঠিত
সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ধনিরা কর দেয় না, কর দেয় গরীবেরা

পক্ষকাল সংবাদ -

---

বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা

‘সোমবার -ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট - উত্তরণের পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিতহয় ।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট - উত্তরণের পথ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সোমবার, সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের দ্বিতীয় তলায় জহুর হোসেন চৌধুরী হল-এ জোটের সমন্বয়ক বাসদ নেতা কমরেড বজলুর রশীয় ফিরোজের সভাপতিত্বে ও সিপিবি নেতা আব্দুল্লা হিল কাফী রতনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন, সিপিবির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর জনাব ইব্রাহিম খালেদ, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক এম.এম আকাশ, ক্রেডিট রেটিং কোম্পানি ক্রিসেল এর প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাফ্ফর আহমেদ এফসিএ, অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী)-র সাধারণ সম্পাদক ইকবার কবীর জাহিদ, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, সরকার অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান দিয়ে উন্নয়নের গল্প তৈরি করছে কিন্তু এই পরিসংখ্যানে একটা মিথ্যা লুকিয়ে আছে, যা দিয়ে সত্যকে আড়াল করা হয়। ব্যাংক ব্যবসা এখন খুবই লাভজনক তার চেয়ে বেশি লাভজনক হচ্ছে এমপিগিরি ও রাজনৈতিক ব্যবসা। বাজার অর্থনীতি রাজনীতিকে বাজারনীতিতে পরিণত করেছে। দেশের বেশিরভাগ মানুষের অর্থনীতি ভালো আছে এরকম মিথ্যা তথ্যা যারা প্রচার করছে তাদের সাজা হওয়া দরকার। সম্পদ পাচার থেকে দেশকে বাঁচাতে আমরা ’৭১ সালে অস্ত্র হাতে লড়াই করেছি সেটা ছিল ন্যায় সঙ্গত আর এখন বাংগালী যারা অর্থ পাচার করে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করলে কেন তা ন্যয়সঙ্গত হবে না।
কমরেড খালেকুজ্জামান বলেন, আমাদের সংবিধান অনুসারে আমাদের অর্থনীতিতে রাষ্ট্রীয়, সমবায় ও ব্যক্তি এই তিন ধরনের মালিকানা থাকার কথা আছে, তার মধ্যে ব্যক্তি মালিকানা হচ্ছে সবার শেষে তিন নম্বরে কিন্তু এখন শুধুমাত্র ব্যক্তিমালিনা তথা পাঁচাভাগ লুটেরাদের মালিকানা বজায় রেখে বাকি মালিকানা প্রায় বিলুপ্ত করা হয়েছে। এই নীতি আমাদের সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। রাষ্ট্রের কোন প্রতিষ্ঠানই এখন আর সাধারণ জনগেণের কল্যাণে কাজ করে না তাই এই রাষ্ট্র তার জন্মকালীন ঘোষণার বিপরীতে চলে তার টিকে থাকার যৌক্তিকতা হরিয়েছে। তিনি বলেন, তাই রাষ্ট্র ব্যবস্থা পাল্টানো ছাড়া অর্থব্যবস্থার সংকট দূর করা যাবে না।
ইব্রাহীম খালেদ বলেন, গড় আয় দিয়ে জনণের অর্থনৈতিক অবস্থা নির্ধারণ করা একটা প্রতারণামূলক প্রক্রিয়া। এর মধ্যদিয়ে জনগণের বাস্তব অবস্থা আড়াল করা হয়। ভারতের করযোগ্য আয়ের নি¤œ সীমা যেখানে ৬ লাখ টাকা আর আদায়কৃত করের পরিমাণ জিডিপির ২০ শতাংশ সেখানে বাংলাদেশে করযোগ্য আয়ের নি¤œসীমা আড়াই লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে আর আদায় কৃত করের পরিমাণ জিডিপির ১০ শতাংশ মাত্র। এর মানে বাংলাদেশের করযোগ্য হিসেবে যাদের নির্ধারন করা হয়েছে সেই ধনিরা কর দেয় না, কর দেয় গরীবেরা।
সরকার লুটপাটকারীদের ৯% সুদে ঋণ দিতে আমানতকারীদের সুদের হার কমিয়েছে। দেশে যে উন্নয়ন হয় তার সুফল ভোগ করে ৫ ভাগ ধনীরা, সাধারণ জনগণের জন্য কোন উন্নয়ন হয় না। বাংলাদেশে ধনী বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি ১৯% যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। ধনী বাড়ার হার বাড়লে গরিব বাড়ার হারও বাড়ে। অর্থনীতি আয় বৈষম্য এত বেশি যা এশিয়ার অনেক দেশ এর ধারে কাছেও নেই। সংবিধানে মুুক্তিযুদ্ধের ঘোষণায় ছিল সাম্য প্রতিষ্ঠার। ফলে এই বৈষম্য আমাদের সংবিধান বিরোধী। তার মানে এই সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করে দেশ পরিচালনা করছে।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, দুর্নীতিবাজ ব্যাংক কর্মকর্তা, লুটেরা ব্যবসায়ী এবং দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক নেতৃত্ব এই তিনের মেলবন্ধনেই খেলাপিঋণের নষ্ট সংস্কৃতির ভিত্তি রচনা করেছে। এখন দেশের উন্নয়নের নীতিই হচ্ছে লুটপাট। আমাদের দেশের মন্ত্রীরা বিশ্বের এক নম্বর হওয়ার কারণ হচ্ছে, এরা এখান থেকে লুটপাট করে, অর্থ-সম্পদ পাচার করে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে ভালো রেখেছে। এই কারণে দেশের ব্যাংক-বিমা অর্থখাত ধ্বংসকারী অর্থমন্ত্রী এক নম্বর অর্থমন্ত্রীর স্বীকৃতি পায়। সুন্দরবন তথা পরিবেশ ধ্বংস করে প্রধানমন্ত্রী চ্যাম্পিয়ান অফ দা আর্থ এর পুরষ্কার পায়।
অ্যাপক এমএম আকাশ বলেন, আমাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ জুন ’১৯ পর্যন্ত ১ লাখ ১২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। অর্থনীতির আয়তন অনুপাতে যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ। নিয়ম বহির্ভূতভাবে ঋণ রিসিডিউল না করলে এর আকার দাঁড়াতো দ্বিগুণ। সরকার ঋণখোলাপিদের শাস্তি না দিয়ে কনশেসন দেয়ার নীতি গ্রহণ করেছে এর ফলে খেলাপি ঋণ না কমে ক্রমাগত বাড়ছে। তিনি বলেন, এক অঙ্কের সুদের হারের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আমানতকারী, সুবিধা পাবে লুটেরা ধনি, ব্যাংক ডাকাত ও ঋণখেলাপিরা।
মোজাফ্ফর আহমেদ এফসিএ বলেন, বাংকের মোট টাকার মধ্যে পরিচালকদের হচ্ছে মাত্র ৫% আর আমানতকারীদের হচ্ছে ৯৫% কিন্তু সকল সুবিধা নিচ্ছে ও কর্তৃত্ব করছে ওই ৫%-এর মালিক পরিচালকরা। তারা গোটা ব্যাংকের মালিক সেজে বসে আছে। এটা কোনভাবে গণতান্ত্রিক হতে পারে না, এটা মানা যায় না। এই বিষয়ে রাজনীতিকদেরই বেশি দায়িত্ব নিতে হবে। ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় ব্যয় কমাতে হবে।
অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, অর্থিকখাতের টালমাটাল অবস্থায়ও কেন নতুন ব্যাংক হচ্ছে? কারণ ব্যাংকে যে পরিমাণ লাভ হয় অন্য কোন খাতে এই পরিমাণ লাভ হয় না। গড় হিসেবে ব্যাংক খাতের লাভ ২০০% থেকে ৩০০% পর্যন্ত। সরকার ক্রেতা সেজে লুটপাটকারীদের রক্ষা করে চলছে। এই নীতি চলতে থাকলে এই অরাজকতা থেকে আর্থিক খাতকে রক্ষা করা যাবে না।
বাম জোটের সমন্বয়ক ও আলোচনা সভার সভাপতি বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সংকট লুটপাটের রাষ্ট্র শাসন ব্যবস্থা থেকেই উৎসারিত। ফলে আর্থিক খাতের সংকট কাটাতে হলে রাষ্ট্র শাসন, প্রশাসন ব্যবস্থা পাল্টাতে হবে। বাম গণতান্ত্রিক জোট ব্যবস্থা পাল্টানোর সেই সংগ্রাম করছে। তিনি ব্যাংক ও আর্থিক খাতের অনিময়ম, দুর্নীতি, লুটপাটের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য দেশের সকল বাম প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
আলোচনা শেষে সভাপতি ব্যাংক ও আর্থিক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট বন্ধের দাবিতে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ঐদিন সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জমায়েত শেষে বাংলাদেশ ব্যাংক অভিমুখে ঘেরাও মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বাম জোটের কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড শাহ আলম, মোশাররফ হোসেন নান্নু, রাজেকুজ্জামান রতন, রুহীন হোসেন প্রিন্স, জোনায়েদ সাকি, মানস নন্দী, মোশরেফা মিশু, হামিদুল হক, আকবর খান, সাজ্জাদ জহির চন্দন, অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, মনিরউদ্দিন পাপ্পু, ফখরুদ্দিন কবীর আতিক, জুলফিকা আলী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।



এ পাতার আরও খবর

বাংলাদেশি পণ্যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে ইউনূসকে ট্রাম্পের হাতে হারিকেন ধরানো চিঠি বাংলাদেশি পণ্যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে ইউনূসকে ট্রাম্পের হাতে হারিকেন ধরানো চিঠি
বিশ্লেষণধর্মী মতামত ট্রাম্পের ‘ট্যারিফ ব্লিটজ’: শুল্কের আড়ালে ভূরাজনৈতিক বার্তা বিশ্লেষণধর্মী মতামত ট্রাম্পের ‘ট্যারিফ ব্লিটজ’: শুল্কের আড়ালে ভূরাজনৈতিক বার্তা
সম্পাদকীয় নিবন্ধ “সামাজিক ব্যবসা” রাষ্ট্রের বিকল্প নয়, গণতন্ত্রের বিকল্প নয় বরং এটি অপশাসনের নতুন মুখোশ সম্পাদকীয় নিবন্ধ “সামাজিক ব্যবসা” রাষ্ট্রের বিকল্প নয়, গণতন্ত্রের বিকল্প নয় বরং এটি অপশাসনের নতুন মুখোশ
সামাজিক ব্যবসার আড়ালে নতুন সাম্রাজ্যবাদ আধিপত্য বিস্তার নব্য অপশাসনের ফ্যাসিবাদ সামাজিক ব্যবসার আড়ালে নতুন সাম্রাজ্যবাদ আধিপত্য বিস্তার নব্য অপশাসনের ফ্যাসিবাদ
“সামাজিক ব্যবসা” “এনজিও সাম্রাজ্যবাদের” নতুন সাম্রাজ্যবাদের ফাঁদ -সাংবাদিক কাজল “সামাজিক ব্যবসা” “এনজিও সাম্রাজ্যবাদের” নতুন সাম্রাজ্যবাদের ফাঁদ -সাংবাদিক কাজল
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভাবমূর্তির রক্ষা-জিএমআরবি হুমকির প্রেক্ষাপট প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভাবমূর্তির রক্ষা-জিএমআরবি হুমকির প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশ নৌবাহিনী  চট্টগ্রাম বন্দর – পরবর্তী ৬ মাসের জন্য পরিচালনা করবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী চট্টগ্রাম বন্দর – পরবর্তী ৬ মাসের জন্য পরিচালনা করবে
‘ব্যালট’ প্রকল্পে ৪.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান দেওয়ার ঘোষণা- ‘ব্যালট’ প্রকল্পে ৪.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান দেওয়ার ঘোষণা-
কেএমপি কমিশনারের অপসারণ দাবিতে রূপসা সেতু অবরোধ কেএমপি কমিশনারের অপসারণ দাবিতে রূপসা সেতু অবরোধ
‘সরি টু সে’, আগের গভর্নররা সরকারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন: অর্থ উপদেষ্টা ‘সরি টু সে’, আগের গভর্নররা সরকারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন: অর্থ উপদেষ্টা

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)