
শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » » নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী কেন্দ্র) কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দিল
নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী কেন্দ্র) কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দিল
নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী কেন্দ্র) একটু আগে তাদের কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল।
মাওবাদী কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী নভেম্বরে দলের বিশেষ সাধারণ কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই দলের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হবেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুষ্পকুমার দহল (প্রচণ্ড) একটু আগে জানালেন, তিনি আর দলের প্রধান নেতা নন।
মাওবাদী কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দলের অভ্যন্তরে একটি শক্তিশালী কমিশন গঠন করা হবে। সেই কমিশন দলীয় নেতাকর্মীদের সম্পদের বিষয়ে তদন্ত করবে। নেতাদের সম্পত্তির খতিয়ান জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে।
কেন্দ্রীয় কমিটির সদ্য সমাপ্ত বৈঠকে প্রচণ্ড জানিয়েছেন, তিনি মনে করেন দলীয় নেতৃত্বে বড় সংখ্যক তরুণ নেতৃত্ব (প্রচণ্ড ‘জেন জি’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন) তুলে আনা জরুরি।
নেপালের তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলেই শীর্ষ নেতৃত্বে পরিবর্তন আনার দাবি উঠেছে। দীর্ঘ জনযুদ্ধের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নেতা প্রচণ্ড নেপালের প্রধান তিন রাজনৈতিক নেতার মধ্যে প্রথম ব্যক্তি হিসাবে সেই দাবি মেনে নিলেন৷ নেপালি কংগ্রেস এবং সিপিএন (ইউএমএল) এখনও এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।
নেপালি কংগ্রেসের দ্বিতীয় সারির নেতৃবৃন্দ এবং যুবকর্মীদের একাংশ ইতিমধ্যেই বিশেষ সাধারণ সভা আহ্বানের দাবিতে সই সংগ্রহ শুরু করেছেন। দলের দুজন সাধারণ সম্পাদক গগন থাপা এবং বিশ্ব প্রকাশ শর্মা নেপালি কংগ্রেসের পুর্নগঠন এবং নেতৃত্বে রদবদলের বিষয়ে ভীষণ সরব৷ থাপা জানিয়েছেন, তিনিই প্রথমে পদত্যাগ করে দলীয় সংস্কারের কাজ শুরু করতে চান।
সিপিএন (ইউএমএল) দলেও নেতৃত্ব পরিবর্তনের দাবি উঠেছে। যদিও দলের এক বড় অংশ এখনও কে পি ওলিকেই নেতৃত্বে দেখতে চান৷ দলের সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান, একাধিক ভাইস-চেয়ারপার্সন এবং সম্পাদক-সহ বেশ কিছু নেতা চাইছেন কে পি ওলি দলের সর্বোচ্চ নেতার পদ থেকে সরে গিয়ে অভিভাবক হিসাবে থাকুন৷ তাঁদের অনেক প্রকাশ্যেই এই নিয়ে লেখালিখি করছেন। কিন্তু বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, কে পি ওলি এখনই প্রচণ্ডের পথে হাঁটতে চান না।
নেপালের মোট জনসংখ্যার ৪২.৫ শতাংশই যুবক। কিন্তু সংসদে, সরকারে বা রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে যুবদের সংখ্যা কম। তবে কমবয়সীদের নেতৃত্বে তুলে আনলেই কি সব সমস্যা মিটবে? সে যাই হোক, সিপিএন (মাওবাদী কেন্দ্র) তিনটি বড় দলের মধ্যে প্রথম শক্তি হিসাবে সংস্কারের পথে হাঁটল।
অনেকেই মনে করেছিলেন ‘জেন জি’ আন্দোলনের মাধ্যমে নেপালে বামপন্থীদের কবর রচিত হল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা হয়নি৷ বড় দুই কমিউনিস্ট পার্টি নিজেদের কার্যালয় সংস্কারের পাশাপাশি দলের অভ্যন্তরেও সংস্কারের গুরুত্ব এবং পন্থা নিয়ে আলাপ আলোচনা করছেন৷ কে পি ওলি সেনাছাউনি থেকে বেরিয়ে এসেছেন। তার আগেই ইউএমএল কর্মীরা দলীয় দফতরে লাল পতাকা উত্তোলন করেছেন। মাওবাদী কেন্দ্র নেতা প্রচণ্ড তাঁর দলীয় দফতরে একটির পর একটি সভা করছেন৷ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন।
প্রধান দুটি কমিউনিস্ট পার্টি ছাড়াও অন্য বামপন্থীরাও তাঁদের মতো করে সক্রিয়। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাধব নেপালের দল সিপিএন (ইউনিফায়েড সোস্যালিস্ট) উদ্যোগী হয়েছে মাওবাদী কেন্দ্রের সঙ্গে ঐক্যের বিষয়। ঐক্য আলোচনা শুরু করেছে নেত্র বিক্রম চাঁদ বিপ্লবের নেপাল কমিউনিস্ট পার্টিও (এনসিপি)। রাজতন্ত্রীরাও বলছেন, এখনওই রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। জনজীবনও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। নেপাল আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগামীতে কী হয় দেখা যাক।
Arka Bhaduri
২৬ জুলাই ২০২৫