
বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » » বিদেশি প্রভাব ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিপ্রেক্ষিত
বিদেশি প্রভাব ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিপ্রেক্ষিত
ঢাকা, ৭ আগস্ট ২০২৫ - বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপর বিদেশি প্রভাবের অভিযোগ নতুন মাত্রা পেয়েছে, বিশেষ করে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কূটনৈতিক তৎপরতা নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন ঘিরে। Northeast News-এর অনুসন্ধান অনুযায়ী, মোহাম্মদ ইউনুস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী প্রশাসনের উপদেষ্টাদের নিয়মিতভাবে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তার মাধ্যমে নির্দেশনা দিচ্ছেন মার্কিন কূটনীতিকরা। এই বার্তাগুলোর মধ্যে রয়েছে নীতিগত পরামর্শ, অর্থনৈতিক কাঠামো নির্ধারণের প্রস্তাব এবং বিচার বিভাগের সিদ্ধান্তে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ।
বাংলাদেশে মার্কিন প্রভাবের অভিযোগ
অন্তত পাঁচজন উপদেষ্টাকে পাঠানো বার্তায় মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা সরাসরি নীতিগত দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
একজন সিনিয়র মার্কিন কূটনীতিকের সঙ্গে একজন শীর্ষ বিচারপতির সাক্ষাতের পর জামায়াত নেতার মুক্তি এবং দলটির নিবন্ধন বাতিলের আদেশ স্থগিত হয়।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের স্ত্রী শীলা আহমেদ ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত, যা ব্যক্তিগত সম্পর্কের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তারের প্রশ্ন তোলে।
এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্বার্বভৌমত্ব ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তবে বিদেশি প্রভাব কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়-বিশ্বজুড়েই বিভিন্ন রাষ্ট্রে রাজনৈতিক প্রভাবের নানা ধরন দেখা যায়।
বিশ্বে রাজনৈতিক প্রভাবের ধরন ও উদাহরণ
দেশ প্রভাবের ধরন উদাহরণ
যুক্তরাষ্ট্র লবিং, সাহায্য, কূটনীতি ইউক্রেন, মিশর, বাংলাদেশে নীতিগত চাপ প্রয়োগ
রাশিয়া সামরিক, সাইবার, জ্বালানি ইউক্রেন, জর্জিয়া, ইউরোপে গ্যাস কূটনীতি
চীন অর্থনৈতিক, সফট পাওয়ার BRI প্রকল্প, Confucius Institute, নজরদারি রপ্তানি
ফ্রান্স সাংস্কৃতিক, সামরিক পশ্চিম আফ্রিকায় সামরিক ঘাঁটি, ভাষাগত প্রভাব
ভারত আঞ্চলিক, প্রবাসী কূটনীতি নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কায় সাহায্য ও মিডিয়া প্রভাব
সৌদি আরব ধর্মীয়, তেল কূটনীতি বিশ্বজুড়ে মসজিদ অর্থায়ন, OPEC-এর মাধ্যমে প্রভাব
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তুলনামূলক বিশ্লেষণ
বাংলাদেশে বিদেশি প্রভাবের ধরন অনেকটাই যুক্তরাষ্ট্রের সফট ও শার্প পাওয়ারের সংমিশ্রণ, যেখানে কূটনৈতিক বার্তা, অর্থনৈতিক কাঠামো এবং বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে। এটি রাশিয়া বা চীনের মতো সরাসরি সামরিক বা অর্থনৈতিক বলপ্রয়োগ নয়, বরং নীতিগত ও প্রশাসনিক স্তরে প্রভাব বিস্তারের কৌশল।
এই প্রভাবের ধরন তুলনামূলকভাবে ভারতের আঞ্চলিক প্রভাব বা ফ্রান্সের সাংস্কৃতিক প্রভাব থেকে ভিন্ন, কারণ এখানে সরাসরি নীতিনির্ধারণে হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে, যা গণতান্ত্রিক স্বার্বভৌমত্বের প্রশ্ন তোলে।
জনমত ও ভবিষ্যৎ ভাবনা
এই পরিস্থিতিতে নাগরিক সমাজ, ছাত্র আন্দোলন এবং গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিদেশি প্রভাবের বিরুদ্ধে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের ভিত্তিতে প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা রক্ষা করাই এখন সময়ের দাবি।
বাংলাদেশে বিদেশি প্রভাবের ধরন অনেকটাই যুক্তরাষ্ট্রের সফট ও শার্প পাওয়ারের সংমিশ্রণ, যেখানে কূটনৈতিক বার্তা, অর্থনৈতিক কাঠামো এবং বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে। এটি রাশিয়া বা চীনের মতো সরাসরি সামরিক বা অর্থনৈতিক বলপ্রয়োগ নয়, বরং নীতিগত ও প্রশাসনিক স্তরে প্রভাব বিস্তারের কৌশল।
এই প্রভাবের ধরন তুলনামূলকভাবে ভারতের আঞ্চলিক প্রভাব বা ফ্রান্সের সাংস্কৃতিক প্রভাব থেকে ভিন্ন, কারণ এখানে সরাসরি নীতিনির্ধারণে হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে, যা গণতান্ত্রিক স্বার্বভৌমত্বের প্রশ্ন তোলে।
জনমত ও ভবিষ্যৎ ভাবনা
এই পরিস্থিতিতে নাগরিক সমাজ, ছাত্র আন্দোলন এবং গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিদেশি প্রভাবের বিরুদ্ধে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের ভিত্তিতে প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা রক্ষা করাই এখন সময়ের দাবি।