
রবিবার, ১০ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » রাজনীতি » ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন, আস্থার সংকটই বড় চ্যালেঞ্জ: সিইসি
ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন, আস্থার সংকটই বড় চ্যালেঞ্জ: সিইসি
২৪ নির্বাচন ডেস্ক | ৯ আগস্ট ২০২৫
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দীন। শনিবার বিকেলে রংপুরে এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “নির্বাচন আয়োজনের চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো-মানুষকে ভোটকেন্দ্রে ফিরিয়ে আনা। ভোটের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে জনগণ, আর সেই আস্থা পুনরুদ্ধার করাই এখন আমাদের প্রধান দায়িত্ব।”
ভোটকেন্দ্রে অনাগ্রহ: একটি মনস্তাত্ত্বিক সংকট
সিইসি বলেন, “মানুষ এখন ভোটের দিনকে ছুটির দিন হিসেবে দেখে। তারা ভাবে, আমি না গেলেও কেউ না কেউ তো ভোট দিয়ে দেবে। এই মানসিকতা আমাদের বদলাতে হবে।” তিনি ভোটকেন্দ্র বিমুখতার পেছনে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও বিশ্বাসহীনতাকে দায়ী করেন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি: চ্যালেঞ্জ থাকলেও নিয়ন্ত্রণে
জুলাই মাসের গণআন্দোলনের পর দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও সিইসি আশাবাদী। তিনি বলেন, “গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলে আরও স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারব বলে বিশ্বাস করি।”
তিনি জানান, নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে এমন পরিবেশ তৈরি করা হবে, যেখানে মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবেন।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও সোশ্যাল মিডিয়া: নতুন যুগের হুমকি
সিইসি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারকে নির্বাচনের জন্য একটি “মারাত্মক অস্ত্র” হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “মানুষের ছবি ও কণ্ঠস্বর ব্যবহার করে ভুয়া বক্তব্য তৈরি করা হচ্ছে, যা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে না। রাতের বেলা মোবাইলে এসব দেখে বিভ্রান্ত হচ্ছে।”
তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন এ ধরনের ডিজিটাল বিভ্রান্তি মোকাবিলায় কৌশল নির্ধারণে কাজ করছে।
প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার: নতুন চিন্তা
সিইসি বলেন, “সব জায়গায় শিক্ষক দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করা হবে না-এখন বিকল্প ভাবনা চলছে। দেশের মানুষ দিয়েই নির্বাচন করতে হবে, তবে তাদের বাছাই ও প্রশিক্ষণে পরিবর্তন আনা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “মানুষ যদি বুঝতে পারে নির্বাচন কমিশন ধান্দাবাজি করছে না, তাহলে তারা আমাদের পাশে থাকবে।”
নির্বাচন আয়োজন: একটি ইমানি দায়িত্ব
সিইসি নাসির উদ্দীন নির্বাচন আয়োজনকে “ইমানি দায়িত্ব” হিসেবে অভিহিত করে বলেন, “আমার সিদ্ধান্ত কারও পক্ষে বা বিপক্ষে যেতে পারে, কিন্তু সেটা আইন অনুযায়ী। আমি যতক্ষণ সচেতন আছি, নিরপেক্ষভাবে কাজ করব।”
সভায় অংশগ্রহণ
রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন মো. দুলাল তালুকদার। এতে রংপুর অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তারা অংশ নেন এবং নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়।