শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

Daily Pokkhokal
বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০১৯
প্রথম পাতা » বিশ্ব সংবাদ | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » রুটির দাম বাড়ানোর পর পতন হোল ওমর আল-বশিরের
প্রথম পাতা » বিশ্ব সংবাদ | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » রুটির দাম বাড়ানোর পর পতন হোল ওমর আল-বশিরের
৪৩৯ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

রুটির দাম বাড়ানোর পর পতন হোল ওমর আল-বশিরের

পক্ষকাল ডেস্ক-

সুদানে যেভাবে ওমর আল-বশিরের শাসনামল শুরু হয়েছিল, সেভাবেই সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতা ছাড়তে হলো।
দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আওয়াদ মোহাম্মদ আহমেদ ইবনে আউফ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রয়টার্স জানায়, দেশটির দারফুর অঞ্চলে গণহত্যার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সুদানে প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরের ৩০ বছরের শাসনের অবসান হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। দেশটির সেনাবাহিনী ঘোষণা করেছে দুই বছর সামরিক শাসনের পরে তারা নির্বাচনের দিকে যাবে।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের দেশটির প্রতিরক্ষমন্ত্রী আওয়াদ মোহাম্মদ আহমেদ ইবনে আউফ তিন মাসের রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা, দেশব্যাপী যুদ্ধবিরতি এবং সংবিধান স্থগিতের ঘোষণা দেন। তিনি আরও বলেন, ২৪ ঘণ্টা দেশের বিমানবন্দর বন্ধ থাকবে এবং পরবর্তী নিদের্শনা না দেওয়া পর্যন্ত সীমান্তে চলাচল বন্ধ থাকবে।

আল-বশিরের রাজনৈতিক জীবনকে যুদ্ধ দিয়েই সবচেয়ে ভালোভাবে বর্ণনা করা যায়।

বশিরের জন্ম হয় ১৯৪৪ সালে উত্তর সুদানের একটি খামারি পরিবারে। সে সময় সেই এলাকাটি ছিল মিসরীয় রাজত্বের অংশ। তিনি একটি বেদুইন গোত্রের সদস্য ছিলেন।

তরুণ বয়সে তিনি মিসরীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং ১৯৭৩ সালে ইসরাইলে বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পর কর্মকর্তা পদে উন্নীত হন।
তার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে কমই জানা যায়। তার কোনো সন্তান নেই এবং ৫০ বছর বয়সের দিকে তিনি দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। তিনি সুদানের উত্তরের যুদ্ধ বীর হিসাবে পরিচিত ইব্রাহিম শামস আল-দ্বীনের বিধবা স্ত্রীকে বিয়ে করেন
১৯৮৯ সালে তিনি ক্ষমতায় আসেন এবং শক্ত হাতে দেশ পরিচালনা করেছেন। ২০১১ সালে বিভক্ত হয়ে দক্ষিণ সুদানের জন্ম না হওয়া পর্যন্ত এই দেশটি ছিল আফ্রিকার সবচেয়ে বড় দেশ।
যখন তিনি ক্ষমতা দখল করেন, সুদান তখন উত্তর আর দক্ষিণের মধ্যে ২১ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের মধ্যে রয়েছে।
বশির শক্ত হাতে জবাব দিতে শুরু করেন। তার বিরুদ্ধে দমন পীড়ন এবং যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ আনে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।

তার বিরুদ্ধে ২০০৯ ও ২০১০ সালে দুটি আন্তর্জাতিক গ্রেফতারের পরোয়ানা জারি করা হয়। যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও তিনি ২০১০ ও ২০১৫ সালের দুইটি নির্বাচনে বিজয়ী হন। তার সর্বশেষ নির্বাচন বিরোধীরা বর্জন করে।

এই গ্রেফতারি পরোয়ানার কারণে তার ওপর আন্তর্জাতিক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা তৈরি হয়। তারপরেও বশির মিসর, সৌদি আরব আর দক্ষিণ আফ্রিকায় ভ্রমণ করেন।

২০১৫ সালের জুনে তিনি অনেকটা বিব্রতকর ভাবে দক্ষিণ আফ্রিকা ত্যাগ করতে বাধ্য হন, কারণ দেশটির একটি আদালত বিবেচনা করছিল যে, তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাটি কার্যকর করা হবে কিনা।

ক্ষমতা গ্রহণের আগে সেনাবাহিনীর একজন কমান্ডার ছিলেন বশির। তিনি বিদ্রোহী নেতা জন গ্যারাঙ্গের বিরুদ্ধে বেশিরভাগ অভিযান পরিচালনা করেন।

২০১১ সালের জানুয়ারির গণভোটে ৯৯ শতাংশ দক্ষিণ সুদানিজ ভোটার আলাদা হয়ে যাওয়ার পক্ষে ভোট দেন। ছয় মাস পরে স্বাধীন দক্ষিণ সুদান ঘোষিত হয়।

যখন তিনি দক্ষিণ সুদানের স্বাধীনতার পক্ষে সম্মত হন, তখনো দারফুরের প্রতি তার মনোভাব ছিল আগ্রাসী।

কিন্তু কৃষ্ণাজ্ঞদের ওপর নির্যাতনের কারণে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত আরব জানহাওয়েড মিলিশিয়াদের তিনি সমর্থন করেছেন বলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেসব অভিযোগ করেছে, তা তিনি বরাবরই অস্বীকার করে গেছেন।

ওমর আল-বশিরের বিরুদ্ধে আইসিসির যেসব অভিযোগ রয়েছে, তার মধ্যে আছে গণহত্যা, হত্যা, জোর করে বাস্তুচ্যুত করা, ধর্ষণ, নির্যাতন, দারফুরে বেসামরিক লোকজনের ওপর হামলা, গ্রাম ও শহরে লুটতরাজ করা।

সম্প্রতি দেশটিতে রাজনৈতিক বিক্ষোভ জোরালো হয়ে ওঠে। সরকার তেল ও রুটির দাম বাড়ানোর পর তার ৩০ বছরব্যাপী শাসনামলের মধ্যে গত ডিসেম্বরে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ শুরু হয়।

গত কয়েক বছর ধরে অর্থনৈতিকভাবে সংকটে ভুগছে সুদান, বিশেষ করে দক্ষিণ সুদান আলাদা হয়ে যাওয়ার পর। কারণ দেশের মোট উত্তোলিত তেলের চারভাগের তিনভাগই রয়েছে দক্ষিণ সুদানে।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি এক বছর মেয়াদি জরুরি অবস্থা জারি করেন বশির। তার মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন আনেন এবং দেশের সব স্টেট সরকারের গভর্নরদের সরিয়ে দিয়ে সেখানে সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বসিয়ে দেন।

কোনো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবিও নাকচ করে দেন। তার দাবি, বিক্ষোভকারীরা ২০২০ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে তাকে সরিয়ে দিতে পারবে।

বিক্ষোভকারীদের ওপর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগ ওঠে সরকারের বিরুদ্ধে।

জাতীয় গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বিভাগ জানিয়েছে, তারা সকল রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দিতে যাচ্ছে।

কিন্তু এটা এখনো পুরোপুরি পরিষ্কার নয় যে, সামরিক বাহিনী সুদানের স্থায়ীভাবে থেকে যেতে চাইবে কিনা।

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, তারা চান না, একজন কর্তৃত্ববাদী শাসকের বদলে আরেকজন সেইরকম শাসক ক্ষমতায় আসুক।

সূত্র: বিবিসি বাংলা।



এ পাতার আরও খবর

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পেতে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন : ফখরুল গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পেতে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন : ফখরুল
স্বামীসহ সাঈদা মুনার বিরুদ্ধে বিপুল অর্থ পাচারের অভিযোগ, অনুসন্ধানে দুদক স্বামীসহ সাঈদা মুনার বিরুদ্ধে বিপুল অর্থ পাচারের অভিযোগ, অনুসন্ধানে দুদক
কারাগারে গলায় ফাঁস দিলেন সেই অস্ত্রধারী সুজন, ঢামেকে মৃত ঘোষণা কারাগারে গলায় ফাঁস দিলেন সেই অস্ত্রধারী সুজন, ঢামেকে মৃত ঘোষণা
বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের আইনে উদ্বেগ জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানের বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের আইনে উদ্বেগ জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানের
বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান যুক্তরাষ্ট্র সফরে, ইউনূসের দফতর থেকে রহস্যজনক আদেশ জারি বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান যুক্তরাষ্ট্র সফরে, ইউনূসের দফতর থেকে রহস্যজনক আদেশ জারি
ড. ইউনূস কি অং সান সু চির পরিণতির পথে? নোবেলজয়ীর সম্মান আজ প্রশ্নের মুখে ড. ইউনূস কি অং সান সু চির পরিণতির পথে? নোবেলজয়ীর সম্মান আজ প্রশ্নের মুখে
সেনাপ্রধানের চীন সফরের  আগেই খলিলুর চীন সফরে যাওয়ার ইঙ্গিত কিসের বার্তা দিচ্ছে সেনাপ্রধানের চীন সফরের আগেই খলিলুর চীন সফরে যাওয়ার ইঙ্গিত কিসের বার্তা দিচ্ছে
ভরষা হাউজিং’র নির্মিত সকল বহুতল ভবন বুয়েট কর্তৃক পরীক্ষায় রাজউক’এ অভিযোগ ভরষা হাউজিং’র নির্মিত সকল বহুতল ভবন বুয়েট কর্তৃক পরীক্ষায় রাজউক’এ অভিযোগ
তারেক জিয়া ও ইউনুস ত্রিমাত্রিক রাজনীতির ফাঁদে - এক রম্য বয়ান” তারেক জিয়া ও ইউনুস ত্রিমাত্রিক রাজনীতির ফাঁদে - এক রম্য বয়ান”
গোপন সমঝোতা: রাষ্ট্রীয় চেয়ারের বিনিময়ে সার্বভৌমত্বের আপস গোপন সমঝোতা: রাষ্ট্রীয় চেয়ারের বিনিময়ে সার্বভৌমত্বের আপস

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)