সোমবার, ১১ মার্চ ২০১৯
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » ইতিহাস কথা বলে আয়ুব যা করেনি আমরা তা করে দেখালাম
ইতিহাস কথা বলে আয়ুব যা করেনি আমরা তা করে দেখালাম
পক্ষকাল সংবাদ: ডাকসুর সাবেক নেতারা বলছেন, আইয়ুব খানের আমলেও ডাকসু’র গায়ে এমন আঁচড় পড়েনি। এবারের নির্বাচনে যে কলঙ্ক লেগেছে তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ডাকসু’র সুনাম ও সম্মান ধ্বংস করেছে।
২৮ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ- ডাকসু’র নির্বাচন যতটা আশান্বিত করেছিল, ভোট শুরুর মুহূর্ত থেকে একের পর এক অনিয়মের অভিযোগে ততটাই প্রশ্নবিদ্ধ ও কলঙ্কিত হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে বলে মনে করেন তাঁরা।
সাবেক এই নেতারা বলছেন, প্রশাসনের শুভ বুদ্ধির উদয় হলে দ্রুত নির্বাচন বাতিল করে নতুন কমিটির মাধ্যমে নতুন নির্বাচন দেবে। যদিও উপাচার্য ড. মো. আকতারুজ্জামান বলছেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু এবং একইসঙ্গে উৎসবমুখর পরিবেশে হয়েছে।’
সোমবার (১১ মার্চ) সকালে নির্বাচন শুরুর একঘণ্টার মধ্যে খবর আসে বাংলাদেশ- কুয়েত মৈত্রী হলে সিল মারা বস্তা বোঝাই ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে। এরপর একে একে রোকেয়া হল, সুফিয়া কামাল হল, সূর্যসেন হল থেকে আসতে থাকে নানা অভিযোগ। প্রার্থীদের অভিযোগের বাইরে অভিযোগ আসতে থাকে সাধারণ ভোটারদের কাছ থেকেও। সিল মারা ব্যালট, ব্যালট ভর্তি বাক্স, কৃত্রিমভাবে সৃষ্টি করা ভোটারদের লম্বা লাইনসহ বিভিন্ন অভিযোগের মধ্যেই চলতে থাকে ভোটগ্রহণ। একইসঙ্গে একাধিক ভিপি প্রার্থীর ওপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগও আসে।
বেলা একটার দিকে ছাত্রলীগ ছাড়া অন্য সব দল ভোট বর্জনের ঘোষণা দিলে ক্যাম্পাস হয়ে ওঠে উত্তপ্ত। অভিযোগের সত্যতার এত প্রমাণ থাকার পরও ভোট বাতিল না করায় প্রশাসনের সমালোচনা করেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের বর্তমান নেতা ও প্রার্থীরা। তারা বলছেন, এই প্রহসনের নির্বাচন ছাত্রসমাজ মেনে নেবে না।
কেমন হলো নির্বাচন এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি খান আসাদুজ্জামান মাসুম বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে যে ধরনের কলঙ্কজনক ঘটনা ঘটেছে, ডাকসু-কে এর বাইরে রাখা যেত। কিন্তু সেই একই কলঙ্ক ডাকসু’তেও লেপন হলো। এতে নিন্দা জানানো ছাড়া কিছু বলা নেই। যারা ভোট বর্জন করেছে, সেটা আমলে নিয়ে নতুন নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।’
সাবেক ডাকসু নেতা ও সিপিবি’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘সবাই এটাই আশঙ্কা করেছিলাম, সেটি আরও নগ্নভাবে প্রকাশ ঘটতে দেখলাম। এধরনের কলঙ্কজনক ঘটনা আইয়ুব আমলেও ঘটেনি। সেরকম অধঃপতনের মাধ্যমে সারাদেশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্ধকারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। এটা বরদাস্ত করা যায় না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ও ডাকসু’র সম্মান ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইতিহাস এখানেই শেষ হবে না। ছাত্রসমাজের প্রতিরোধের মুখে তাদের সংসদ গঠনের অধিকার অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত হবে। কর্তৃপক্ষের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। তারা নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে নতুন তফসিল দিয়ে নতুন করে মুক্ত পরিবেশে ছাত্রদেরকে তাদের নেতৃত্ব নির্বাচনের সুযোগ করে দেবে।’
৩৭ বছর আগে ১৯৮২ সালে ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন প্রবাসী অধ্যাপক আলী রিয়াজ। তিনি বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের নামে আজ যা ঘটেছে, তাকে নির্বাচন বলার কোনোই যুক্তি নেই। কলঙ্কিত হলেও তো কিছু হয়, এটি হচ্ছে গোটা দেশে নির্বাচনি ব্যবস্থা ধ্বংস করার যে প্রক্রিয়া তারই অংশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং ক্ষমতাসীন দলের অন্ধ সমর্থক শিক্ষকরা বুঝে মশুনেই এটা করেছেন। তাদের যদি সামান্যতম আত্মসম্মান ও দায়িত্ববোধ থাকে, তবে এই মুহূর্তেই এই নির্বাচন বাতিল করে দেওয়া হবে তাদের কাজ। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাকে আমি ১৯৭৩ সালের ডাকসু নির্বাচনের চেয়েও খারাপ মনে করি। কেননা, সেই সময়ে শিক্ষক ও প্রশাসন অন্ততপক্ষে বলতে পারতো ‘আমাদের কিছু করার ছিল না।’ এবার প্রশাসন এই নির্বাচনকে ধ্বংস করেছে। একজন প্রাধ্যক্ষের বরখাস্ত মোটেই যথেষ্ট নয়, প্রশাসনের উচ্চ পদে অসীনদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা উচিত।’
সর্বশেষ ১৯৯০-৯১ সেশনে ডাকসু’র সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন মনে করেন, ডাকসু নির্বাচনকে কলঙ্কিত করার জন্য সরকারকে চরম মূল্য দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনে অনিয়মের আশঙ্কা প্রথম থেকে দেখা দিয়েছে— সব ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি দাওয়াকে উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যখন নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের দিকে যাচ্ছিল, ভিন্ন মতের শিক্ষকদের বাদ দিয়ে নীল দলের শিক্ষকদের দিয়ে নির্বাচন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিলো। ছাত্রলীগ ছাড়া আর সব সংগঠনের দাবি ছিল— ভোটের সময় বর্ধিত করা, হলের বাইরে ভোট কেন্দ্র করা, স্টিলের বদলে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স রাখা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তা কিছুই করেনি। ডাকসু নির্বাচনকে যে কলঙ্কিত করবে, তাদের আচার-আচরণে তা প্রকাশ পেয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তারপরও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ওপরে ভরসা রাখতে চেয়েছিলাম। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয় কৃর্তপক্ষ সরকারের নিয়ন্ত্রণে নয়। ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী তারা স্বাধীন। তারা কারও নির্দেশ মানতে বাধ্য নয়। কিন্তু তাকে (অধ্যাদেশ) এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও ছাত্রলীগ মিলে তা কলঙ্কিত করেছে।’
ডাকসু’র সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘সরকার সমর্থিত সংগঠনকে জিততে হবেই বলে এবারের নির্বাচনে এসব অনিয়ম করা হয়েছে। এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের মানুষের ভোটকে হাইজ্যাক করে নিয়ে গেছে। আমি তো আগেই বলেছি, বিভিন্ন টেলিভিশন ও পত্র-পত্রিকায়ও এসেছে যে, এবার ডাকসু নির্বাচন হবে ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের একটা রেপ্লিকা।’
মান্না আরও বলেন, ‘এর আগে ডাকসু নির্বাচনে এমন অনিয়ম হয়নি। তবে ৭৩ সালে একবার ব্যালট বাক্স হাইজ্যাক করা হয়েছিল।’




“সাম্রাজ্যবাদের পুতুল নয়, প্রকৃত জনগণের সরকার চাই”-বামপন্থী নেতা মোশরেফা মিশু
ভূমি সেবা সত্যিকারার্থে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে: ভূমি সচিব
জরিপ এলাকা গরীব”" সিদ্ধিরগঞ্জে বিডিএস জরিপ’র রেকর্ড হস্তান্তরে সার্ভেয়ার হাফিজ-মারুফ গংদের ঘূষ বাণিজ্য রুখবে কে?
খাগড়াছড়িতে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি
বিএনপি নেতা হাবিবুল্লাহ রানার চাঁদাবাজি ও মামলা বাণিজ্যে অতিষ্ঠ দীঘিনালা উপজেলাবাসী
নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী কেন্দ্র) কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দিল
সেন্ট মার্টিন : পরিবেশ না মানুষ—কাকে বেছে নেবে রাষ্ট্র?
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট এবং বাংলাদেশে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ
তালিবানের ঘোষণা : “বাগরাম বিমানঘাঁটি কখনই মার্কিনিদের হাতে দেওয়া হবে না”