শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২

Daily Pokkhokal
বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » জেলার খবর | শিক্ষা ও ক্যারিয়ার » সাতক্ষীরায় ফ্লাটে ফ্লাটে কোচিং বাণিজ্য
প্রথম পাতা » জেলার খবর | শিক্ষা ও ক্যারিয়ার » সাতক্ষীরায় ফ্লাটে ফ্লাটে কোচিং বাণিজ্য
৫৪৩ বার পঠিত
বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

সাতক্ষীরায় ফ্লাটে ফ্লাটে কোচিং বাণিজ্য

---
আব্দুর রহমান,সাতক্ষীরা :: সরকারি নীতিমালার কোয়াক্কা না করে সাতক্ষীরার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকরা সকাল-সন্ধা বাসায় একাধিক ব্যাচে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। প্রতিটি ব্যাচে পড়ানো হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ জন শিক্ষার্থীকে। নেয়া হচ্ছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। কাগজে-কলমে নীতিমালা থাকলেও সরকারি মনিটরিং না থাকায় দিনের পর দিন ফ্লাট বাড়ি ভাড়া নিয়ে প্রাইভেট পড়াচ্ছে শিক্ষকরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলাকালীন সময়ে প্রাইভেট ব্যাচে পড়ার সময় নির্ধারণ করার কারনে প্রতিষ্ঠান গুলোতে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিত দেখা যাচ্ছে।
এদিকে সাম্প্রতি খুলনা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার আব্দুস সামাদ খুলনা বিভাগের সকাল জেলায় সকাল ৭ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। নির্দেশ মোতাবেক গত ২৯ আগস্ট সাতক্ষীরা জেলার আইনশৃংখলা কমিটির মিটিং এ বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনা মোতাবেক জেলা কোচিং সেন্টার গুলোকে পরিচালনা করার দির্দেশ দেয়া হয়। শহরে বাণিজ্যক ভাবে গড়ে ওঠা কোচিং সেন্টার গুলো নির্দেশনা মেনে সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে কোচিং সেন্টার গুলো সকল ব্যাচ পরিবর্তন করেছে।
অপরদিকে কোচিং সেন্টার গুলো এ নিয়োম মানলেও ফ্লাট বাড়ি ভাড়া নিয়ে নিজ বাসায় প্রাইভেট পড়ানো বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা নীতি মালাকে বৃদ্ধা অঙ্গুল দেখিয়ে একাধিক ব্যাচে সকাল-সন্ধা প্রাইভেট পড়াচ্ছে। প্রতিটি ব্যাচে ৩০ জন থেকে ৫০ জন শিক্ষার্থীকে পড়ানো হচ্ছে। তাদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে পাঁচশত থেকে আটশত টাকা পর্যন্ত। আবার কোন কোন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে যেতে নিরুতসাহী করছে।
নীতিমালা অনুসারে কোচিং সেন্টারের নামে বাসা ভাড়া নিয়ে কোচিং বানিজ্য পরিচালনা করা যাবে না। যদি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত থাকলে তার এমপিও স্থগিত, বাতিল, বেতন ভাতাদি স্থগিত, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত, বেতন একধাপ অবনমিতকরণ, সাময়িক বরখাস্ত ও চুড়ান্ত বরখান্ত ইত্যাদি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করবে। এমনকি কোচিং বানিজ্যের সাথে জড়িত কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালন পর্ষদ প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে ব্যার্থ হলে অথবা ব্যবস্থা না করলে সরকার পরিচালনা পর্ষদ ভেঙ্গে দেওয়াসহ সংশ্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমতি, স্বীকৃত ও অধিভুক্ত বাতলি করতে পারবে।
এছাড়া সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষক কোচিং বাণিজের সাথে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারি (শৃংখলা ও আপীল) বিধি মালা ১৯৮৫ এর অধীনে অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কিন্তু এসব নীতিমালার তোয়াক্কা না করে সাতক্ষীরার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ এলাকা, সরকারি মহিলা কলেজ এলাকা, সাতক্ষীরা সিটি কলেজ এলাকা, সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এলাকা, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এলাকা, কাটিয়া, মুনজিতপুর, মুন্সিপাড়াসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় ফ্লাট বাসা ভাড়া নিয়ে সকাল সন্ধা প্রাইভেট পড়াচ্ছে। সুনামধন্য এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা দিনে পরে দিন নীতিমালার তোয়াক্কা না ফ্লাট বাসা ভাড়া নিয়ে প্রাইভেট পড়ালেও প্রতিষ্ঠান প্রধানরা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
ফ্লাট বাড়ি ভাড়া নিয়ে প্রাইভেট পড়ানো এসব শিক্ষকরা হলেন- সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ রোডে এড. আলাউদ্দিনের বাসার পাশে সরকারি মহিলা কলেজের ভূগোল বিভাগের শিক্ষক মো. হাবিবুল্লাহ, সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপন বিভাগের শিক্ষক মোস্তাজাবুর বাবুল, পুরাতন সমাজসেবা অফিসের পাশে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের রসায়ন শিক্ষক কাজী আসাদ, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের লেকের ধারে সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের প্রদর্শক মো. মনিরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ রোডে আগরদাড়ি কামিল মাদ্রাসার শিক্ষক ইংলিশ প্যারাডাইস কোচিং সেন্টারের পরিচালক মল্লিক হাবিবুর রহমান, সরকারি কলেজে রোডে রাবেয়া ক্লিনিকের পাশের গলি দিয়ে শেষ বাড়িতে জীব বিজ্ঞানের শিক্ষক গৌর পদ মন্ডল, আনন্দ পাড়ার পুলিশ লাইন স্কুলের শিক্ষক (গনিত ও বিজ্ঞান) উজ্বল ব্যানার্জি, পুরাতন সমাজসেবা অফিসের পাশে শহীদ স্মৃতি কলেজের বাংলা শিক্ষক তপন ঘোষ, সরকারি মহিলা কলেজ সংলগ্ন এলাকায় শহীদ স্মৃতি কলেজের শিক্ষক ফরিজুল ইসলাম, করিম মেসের পাশের গলিতে দিবা নৈশ্য কলেজের ইংরেজি শিক্ষক প্রদ্যুত কুমার বিশ্বাস, কাটিয়া শহীদ রিমু মঞ্জিলের সামনে শহীদ স্মৃতি কলেজের উপাধ্যক্ষ দীপক কুমার মন্ডল, কাটিয়া রিমু মঞ্জিলের পিছনে আইসিটি শিক্ষক মাহবুবুর রহমান, সরকারি কলেজ রোডে গ্রামীন টাওয়ারের পাশে পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম, মুন্সীপাড়া মসজিদের পাশে ছফুরননেছা মহিলা কলেজের গনিতের শিক্ষক ভোলানাথ মন্ডল, সরকারি কলেজ রোডে গ্রামীন টাওয়ারের সামনে সিটি কলেজের গনিতের শিক্ষক শামসুর রহমান স্বপন, সরকারি কলেজ রোডে বাংলা শিক্ষক মোশারফ হোসেন, সরকারি কলেজ মোড় থেকে ঝুটি তলা রোডে ঝাউডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজে পদার্থ শিক্ষক মনিরুজ্জামান, কলেজ রোডে ঝাউডাঙ্গা কলেজের জীব বিজ্ঞানের শিক্ষক পরমেকা ঘোরামী, মুন্সীপাড়া প্রাইমারী স্কুলের পিছনে খালেদা জিয়া ডিগ্রী কলেজের ইংরেজি শিক্ষক সদানন্দ, রসুলপুর মন্দিরের পাশে ব্যবস্থাপনা শিক্ষক তরুন কুমার সানা, কদমতলায়  সিটি কলেজের শিক্ষক অরুণ কুমার মন্ডল, এসপি বাংলোর সামনের গলির ভেতরে সিটি কলেজের ইংরাজি শিক্ষক কামরুজ্জামান স্বপন, সিটি কলেজের সামনে ইংরেজি শিক্ষক আলতামুন, কলেজ মোড়ে ইংরেজির আব্দুল আজিজ, গনিতের শিক্ষক নির্মল কুমার, ভালুকাচাদপুর কলেজের ইংরেজি শিক্ষক তাসনিয়া, দিবা নৈশ্য কলেজের পরিসংখ্যান শিক্ষক তাপস, সুধাংকর, মুন্সীপাড়ার খিরোদ, দিবানৈশ কলেজের হিসাব বিজ্ঞানের শিক্ষক মো. খোকন, একাউন্টিং টিচিং হোমের আমিনুর রহমান, মুনজিতপুর ওয়াদুদ সারের বাসার সামনে সিটি কলেজের আইসিটি শিক্ষক মশিয়ার রহমান, সরকারি কলেজ রোড়ে গ্রামীন টাওয়ারের সমনে হ্মমরাজপুর প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক মনিরুল ইসলাম ও কলেজ মোড়ে ড. সাজ্জাদ ভিলায় মনিরুল ইসলাম। এছাড়া ও সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক দেববিন্দু, মতিয়ার রহমান, মাকসুদ স্যার, পলাশ, মাসুম বিল্লাহ, কমলেশ, সমরেশ, হেমন্ত কুমার, কানাই লাল, ও ইকবাল স্যার এবং সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের হারাধন আইচ,  বাবুল সরকার, খোরশেদ, ও আনোয়ার কবির প্রাইভেট পাড়চ্ছেন।
সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা খাতুন বলেন, প্রতিটি শিক্ষককে নীতিমালা মেনে পড়ানোর জন্য নোটিশ করা আছে। আমার যানা মাতে কেউ নীতিমালার বাইরে পড়ায় না। আর পরও যদি পড়ায় জানতে পারলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাতক্ষীরা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ আবু সাঈদ বলেন, ইতোমধ্যে শিক্ষকদের সতর্ক করে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নিয়োম ভেঙ্গে যদি কোন শিক্ষক পড়ায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার মো. ছায়েদুর রহমান বলেন, সরকারি বিধি অনুসারে একজন শিক্ষক অন্য প্রতিষ্ঠানের ১০ জন শিক্ষার্থী পড়ানো যাবে। এর বেশি শিক্ষার্থী পড়ালে অথবা নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী পড়ালে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সুদেব কুমার বিশ্বাস বলেন, আমার জানা মতে কেউ কলেজের বাইরে পড়ায় না। যদি পড়ায় তার দায় তার নিজের।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাসেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, নীতিমালার বাইরে যেয়ে পড়ানোর কোন সুযোগ নাই। আমার বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষকমন্ডলী, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করা হবে। তার পর আমরা বিষয়টি নিয়ে অভিযানে নামবো।



এ পাতার আরও খবর

মেহেন্দিগঞ্জের আদর্শনগর ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ মেহেন্দিগঞ্জের আদর্শনগর ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ
বিসিসি’র চীফ এ্যাসেসর নুরুল ইসলাম ষড়যন্ত্রের শিকার বিসিসি’র চীফ এ্যাসেসর নুরুল ইসলাম ষড়যন্ত্রের শিকার
রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত
বরিশাল সোনালী ব্যাংক: দুর্নীতিতে জর্জরিত, গোপালের পথে হাটছেন জিএম মাহমুদুল হক বরিশাল সোনালী ব্যাংক: দুর্নীতিতে জর্জরিত, গোপালের পথে হাটছেন জিএম মাহমুদুল হক
সাংবাদিকতা নিয়ন্ত্রণ করা কোন সংগঠনের কাজ নয়: বরিশাল অনলাইন সাংবাদিক ইউনিয়ন সাংবাদিকতা নিয়ন্ত্রণ করা কোন সংগঠনের কাজ নয়: বরিশাল অনলাইন সাংবাদিক ইউনিয়ন
খাগড়াছড়িতে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি খাগড়াছড়িতে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি
বিএনপি নেতা হাবিবুল্লাহ রানার চাঁদাবাজি ও মামলা বাণিজ্যে অতিষ্ঠ দীঘিনালা উপজেলাবাসী বিএনপি নেতা হাবিবুল্লাহ রানার চাঁদাবাজি ও মামলা বাণিজ্যে অতিষ্ঠ দীঘিনালা উপজেলাবাসী
ওটরা ইউনিয়ন এর জনগণের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার অঙ্গীকার আসাদুজ্জামান সুজনের ওটরা ইউনিয়ন এর জনগণের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার অঙ্গীকার আসাদুজ্জামান সুজনের
উজিরপুরে ইয়াবা গডফাদার বাবু মুন্সিকে গ্রেফতার দাবি উজিরপুরে ইয়াবা গডফাদার বাবু মুন্সিকে গ্রেফতার দাবি
গণহত্যার বিচার কার্যকর করতে উজিরপুর বাসী কে  ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে - আহম্মেদ শাকিল। গণহত্যার বিচার কার্যকর করতে উজিরপুর বাসী কে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে - আহম্মেদ শাকিল।

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)