শিরোনাম:
ঢাকা, শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২

Daily Pokkhokal
বৃহস্পতিবার, ১ জানুয়ারী ২০১৫
প্রথম পাতা » বিনোদন » সঙ্গীতায়োজনে এখন ‘টিম ওয়ার্ক’ নেই : আমজাদ
প্রথম পাতা » বিনোদন » সঙ্গীতায়োজনে এখন ‘টিম ওয়ার্ক’ নেই : আমজাদ
৪০৫ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার, ১ জানুয়ারী ২০১৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

সঙ্গীতায়োজনে এখন ‘টিম ওয়ার্ক’ নেই : আমজাদ

---পক্ষকাল প্রতিবেদক: বর্তমান সময়ে যে কজন সঙ্গীতপরিচালক নিজেদের স্বকীয় সঙ্গীতায়োজন দিয়ে একটি সাধারণ গানকে অসাধারণ গানে পরিণত করতে পারেন তাদের মধ্যে অন্যতম আমজাদ হোসেন।

সেই ছোট্টবেলা থেকেই সঙ্গীতের সাথে শুরুহয় তার পথচলা। বড় ভাই চেয়েছেন তার আদরের ছোট ভাইটি একজন কণ্ঠশিল্পী হবেন। তাই ছোটবেলায় আমজাদকে ভর্তি করে দেন গানের স্কুলে। কিন্তু গান থেকে তাকে বেশী টানতো বাদ্যযন্ত্র। তাই গান শেখা ছেড়ে ভাইয়ের অনুপ্রেরণাতেই ছোটবেলা থেকেই তবলা ও অ্যাকুস্টিক ড্রামস শেখা শুরু করেন।

বর্তমানে তিনি গানের সঙ্গীতায়োজন নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কারণ, গানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে এটি। গানকে শ্রবণ উপযোগী করে তোলা কিন্তু চাট্টিখানি কথা নয়। সৃজনশীল এ কাজটি সবার দ্বারা সম্ভবও নয়। অনেক ভালো গান রয়েছে যেগুলো শুধুমাত্র ভালো সঙ্গীতায়োজনের অভাবে শ্রোতাপ্রিয়তা পায় না, এমন নজির আছে বহু।

শুধুমাত্র ভালো সঙ্গীতায়োজন করার মেধা, শ্রম, ভালোবাসা ও পর্যাপ্ত সময় থাকলেই এই কষ্টসাধ্য কাজটি করা সম্ভব। আর এসবই রয়েছে আমজাদের মধ্যে।

মানসম্মত কাজ করায় খুব কম সময়েই তিনি সঙ্গীত সংশ্লীষ্টদের নজর কাড়তে সক্ষম হন।

তবে আমজাদ সঙ্গীতায়োজন করেন ঠিক নিজের স্বকীয়তা বজায় রেখে, নিজের মত করে। আমজাদের সঙ্গীতায়োজনে সবচেয়ে বেশী তালের বৈচিত্র্য পাওয়া লক্ষ্য করা যায়। আর একটি গানের বৈচিত্র্য আসে তখনই যখন গানটিতে থাকে তালের নানান খেলা।

---একটি গান পূর্ণতা পায় গানের কথা, সুর, শিল্পীর কণ্ঠ ও সঙ্গীতায়োজনের মধ্য দিয়েই। সঙ্গীতশিল্পীদের সুন্দর সুন্দর গানের জন্য শ্রোতারা সাধারণত তাদের চেনেন। কিন্তু অসাধারণ সেইসব গান যাদের হাত ধরে পূর্ণতা পায় তারা শ্রোতাদের দৃষ্টির আড়ালেই থেকে যায় সবসময়।

আমজাদের শুরুটা তবলা ও অ্যাকুস্টিক ড্রামস দিয়ে হলেও পরবর্তীতে তিনি আস্তে আস্তে রপ্ত করেন কি-বোর্ড, গীটার ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র। এই সব বাদ্যযন্ত্রে দক্ষতা থাকায় বর্তমানে সঙ্গীতায়োজনের ক্ষেত্রে আমজাদ নতুনত্বের ছোঁয়া রাখতে সক্ষম হচ্ছেন।

বর্তমান সময়েতো অনেক অনেক গান নির্মাণ হচ্ছে, কিন্তু ভালো গান খুবই কম হওয়ার পেছনে কারণ কি?

এমন প্রশ্নের জবাবে আমজাদ বলেন, এখন মূল সমস্যা হচ্ছে সঙ্গীতায়োজনের ক্ষেত্রে ‘টিম ওয়ার্ক’ নেই বললেই চলে। তবে যারা ‘টিম ওয়ার্ক’ বা একসঙ্গে বসে গান করেন, তাদের কাজগুলো অনেক সমৃদ্ধ হয়। গানের জন্য যা সবদিক থেকেই উত্তম। আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে এখন নবীন সঙ্গীতপরিচালকরা অধিকাংশই সফটওয়্যার এর উপর নির্ভরশীল। তারা সবাই লুপ বেইজ কাজ করেন। আর সঙ্গীতায়োজনেও সময় খুব কম দেন। অনেকটা তাড়াহুড়ো করেই গান নির্মাণ করেন। যার ফলে কাজের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য কমে যায়। সব কাজই একই রকম হয়ে যায়।

সঙ্গীতপরিচালকদের দক্ষতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একজন সঙ্গীতপরিচালকের যে সব বিষয় জানতে হবে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে প্রতিটি বাদ্যযন্ত্র বাজানোর স্টাইল জানতে হবে। এরপর প্রতিটি গানের ধরণ, গানের কথা, সুর বুঝতে হবে। আর অনলাইনের এই যুগেতো সবই হাতের কাছে। তাছাড়া সাউন্ড মিক্সিং ও মাস্টারিংয়ের উপর বিভিন্ন বইয়ের সাহায্য নেয়া যেতে পারে। ভালো সঙ্গীতায়োজনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নিজের কান কি বলে সেটা বুঝতে পারা। এই সবের মিশেল ঘটাতে পারলেই তিনি হতে পারেন সৃজনশীল একজন সঙ্গীতপরিচালক।

---বর্তমান সময়ের কণ্ঠশিল্পীদের মধ্যে অধিকাংশই রয়েছেন যারা গানে সময় দিচ্ছেন খুব কম। এটি খুবই আশঙ্কাজনক একটি বিষয়। আবার অনেকে রয়েছেন যারা গান না বুঝে, না শিখেই গান গাইছেন। যার ফলে ঘটছে যত বিপত্তি। এমনই উপলব্ধি আমজাদের।

তিনি জানান, আমরা যখন একটি গানের সঙ্গীতায়োজন পরবর্তী সময়ে শিল্পীর কন্ঠে গানটি রেকর্ডিং করতে যাই, তখন দেখি শিল্পী ঠিকমত গানটি গাইতে পারছেন না। একটি গান ভালো হতে হলে প্রথম শর্ত হচ্ছে শিল্পীর কণ্ঠ ভালো হতে হবে। এর পাশাপাশি গানের রেকর্ডিংয়ে আসার আগে ভালো করে গানটি রপ্ত করে আসতে হবে। কারণ, মানুষ শিল্পীর কণ্ঠ থেকে গানটি শুনবেন। সুতরাং এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

আমাদের গান অন্য দেশের মানুষ না শুনার কারণ হিসেবে তিনি জানান, বর্তমানে আমাদের দেশে যেসব গান ও সঙ্গীতায়োজন হচ্ছে তার মধ্যে অনেক গান ও সঙ্গীতায়োজন হচ্ছে যেগুলো বিশ্বমানের। কারণ অন্য দেশের শ্রোতারা সেসব গান শুনলে আমাদের বেশ প্রশংসা করেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে অন্য জায়গায়। সেটি হচ্ছে, আমাদের গান অন্যদেশের মানুষের কাছ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারছেনা।

কারণ, বিশ্ব মিডিয়ায় আমাদের উপস্থিতি একেবারেই শুন্যের কোঠায়। আর দেখুন আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের যে কোন গানই আমরা শুনছি বা দেখছি। সেটা যে মানেরই হোক না কেন? এটাও মিডিয়ার কল্যাণেই সম্ভব হচ্ছে। যা বর্হিবিশ্বে তাদের গানের প্রচার ও প্রসারে সহায়তা করছে। যে কোন কাজের প্রচার ও প্রসারে মিডিয়া এবং স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব অনেক। মিডিয়ার পাশাপাশি স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের উচিত মানহীনদের প্রমোট না করে ভালো শিল্পীদের প্রমোট করা। আর এভাবেই আমাদেরকে এগুতে হবে। তাহলে আমাদের গানও একসময় সারা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষ শুনবেন।

সঙ্গীতায়োজনের ক্ষেত্রে আমজাদ নিজের স্বকীয়তা বজায় রাখতেই বেশী স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। তিনি বলেন, এতে আমার যত কষ্টই হোক না কেন আমি তাতে কোন আপোষ করিনা।

রক, অলটারনেটিভ রক, ব্লুজসহ নানা ধরণের সঙ্গীতায়োজন করতেই আমজাদের বেশি ভালো। তবে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগা তখনই পূর্ণতা পায় যখন নিজের সবকিছুর সমন্বয় ঘটাতে পারেন তখন।

সঙ্গীতায়োজনে আমজাদের অনুপ্রেরণা হচ্ছে- আয়রন মেইডেন, পিংক ফ্লয়েড। কারণ, তাদের কাজ দেখে তিনি সঙ্গীতায়োজনে অনুপ্রাণিত হন।---

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের কাজ আমার মনে আরো বেশী বৈচিত্র্যময় সঙ্গীতায়োজনের প্রতি আগ্রহী করে তোলে। তবে দেশে-বিদেশে যাদের কাজ ভালো লাগে তারা হচ্ছেন- মাইকেল জ্যাকসন, অ্যালেন পার্সনস, জন মেয়ার, জ্যাসন মার্জ, লাকী আখন্দ, শেখ ইশতিয়াক, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, আলাউদ্দীন আলী, ফুয়াদ আল মুক্তাদির।

নিজের ব্যান্ড ‘মেঘদল’ নিয়ে আমজাদ বলেন, বর্তমানে চলছে মেঘদল’র তৃতীয় অ্যালবামের কাজ। আশাকরি শীঘ্রই শ্রোতারা অ্যালবামটি হাতে পাবেন।

নতুনদের উদ্দেশ্যে আমজাদ বলেন, সিনিয়র অভিজ্ঞ ও মেধাবী সঙ্গীতপরিচালকরা একদিনেই কিন্তু তাদের এই অবস্থানে আসেন নি। তারা অনেক সময়, শ্রম, মেধা, বিনিয়োগ করে লিজেন্ড’দের কাতারে সামিল হয়েছেন। সুতরাং আপনারাও বেশী বেশী সময়, শ্রম, মেধা, বিনিয়োগ করুন। একসময় দেখবেন আপনারাও ভালো কাজ করছেন, আর সে কাজের মাধ্যমে শ্রোতারা আপনাদেরও চিনবেন।

স্বপ্নের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সর্বদা একটি স্বপ্নই দেখি। আর সেটি হল, শিল্পীরা যেন সবসময় আমার কাছে গিয়ে বলেন, ঠিক আপনার মত একটি সঙ্গীতায়োজন চাই।

আমজাদ বর্তমানে ‘মেঘদল’ ব্যান্ড ও ‘এফএনএফ’ এ নিয়মিত অ্যাকুস্টিক ড্রামস বাজিয়ে দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন। তাই সঙ্গীতায়োজনের পাশাপাশি নিজের ব্যান্ডের নানা অনুষ্ঠান নিয়ে থাকেন বেশ ব্যস্ত।

আমজাদের সঙ্গীতায়োজনে সাড়া জাগানো ও আলোচিত গান হচ্ছে ডি-রকস্টার শুভ’র ‘অনেক কিছু’ অ্যালবামের ‘সোনা বন্ধুরে’ গানটি। এছাড়াও শুভ’র সর্বশেষ অ্যালবাম ‘অনেক স্বপ্ন’র ৮টি গান আমজাদের সঙ্গীতায়োজনে হয়েছে। এই অ্যালবামের প্রতিটি গানই শ্রেতাদের মন কেড়েছে।

এ পর্যন্ত আমজাদের সঙ্গীতায়োজনে অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে ১০টি। আরো কিছু অ্যালবামের গানের সঙ্গীতায়োজনের কাজ নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

আমজাদের সঙ্গীতায়োজনে গানের লিংক:
https://www.youtube.com/watch?v=5mSIyluywwM

https://www.youtube.com/watch?v=-vAXcGFGp0k



এ পাতার আরও খবর

সেনা সদরের চিঠির অপব্যাখ্যা করা হয়েছে : আইএসপিআর সেনা সদরের চিঠির অপব্যাখ্যা করা হয়েছে : আইএসপিআর
চরপাড়া টাইমস প্রকাশিত:  প্রতিবেদক: কলমচোর কুদ্দুস চরপাড়া টাইমস প্রকাশিত: প্রতিবেদক: কলমচোর কুদ্দুস
সম্পাদকীয় নিবন্ধ “সামাজিক ব্যবসা” রাষ্ট্রের বিকল্প নয়, গণতন্ত্রের বিকল্প নয় বরং এটি অপশাসনের নতুন মুখোশ সম্পাদকীয় নিবন্ধ “সামাজিক ব্যবসা” রাষ্ট্রের বিকল্প নয়, গণতন্ত্রের বিকল্প নয় বরং এটি অপশাসনের নতুন মুখোশ
ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৭- ইউক্রেনের হামলায়রাশিয়ার ব্ল্যাক সি ফ্লিটের জাহাজ ধ্বংস ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৭- ইউক্রেনের হামলায়রাশিয়ার ব্ল্যাক সি ফ্লিটের জাহাজ ধ্বংস
সাবেক এমপি শিল্পী মমতাজ গ্রেপ্তার সাবেক এমপি শিল্পী মমতাজ গ্রেপ্তার
শিল্পের গলায় শিকল, ন্যায়বিচার কি এখনো চরিত্রভিত্তিক নির্বাচিত হয়? শিল্পের গলায় শিকল, ন্যায়বিচার কি এখনো চরিত্রভিত্তিক নির্বাচিত হয়?
‘স্বর্গ নয়, নরক’, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর কাশ্মীরিদের জন্য কী লিখলেন সলমন খান? ‘স্বর্গ নয়, নরক’, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর কাশ্মীরিদের জন্য কী লিখলেন সলমন খান?
ইসরায়েলি অভিনেত্রী থাকায় সিনেমা নিষিদ্ধ ইসরায়েলি অভিনেত্রী থাকায় সিনেমা নিষিদ্ধ
শাওনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি শাওনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
বস্ত্র শিল্পের ইতিহাস উদযাপন প্রদর্শনী বস্ত্র শিল্পের ইতিহাস উদযাপন প্রদর্শনী

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)