শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২

Daily Pokkhokal
শনিবার, ১২ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » » কবি রফিক আজাদ আর নেই
প্রথম পাতা » » কবি রফিক আজাদ আর নেই
৩৪১ বার পঠিত
শনিবার, ১২ মার্চ ২০১৬
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

কবি রফিক আজাদ আর নেই

 ---

পক্ষকাল প্রতিবেদক : একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও মুক্তিযোদ্ধা রফিক আজাদ আর নেই। শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তিনি মারা যান।

কবির ভাতিজি জামাই মো. রোহান শনিবার দ্য রিপোর্টকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।রোহান জানান, মস্তিস্কে রক্তক্ষরণের কারণে কবিকে এই হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছিল।কবি রফিক আজাদের ভাতিজি শামসুন্নাহার নীরু দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, কবির বড় ছেলে অভিন্ন আজাদ বিদেশে অবস্থান করছেন। তিনি দেশে ফিরলে সোমবার লাশ দাফন করা হবে।

নীরু আরও জানান, লাশ এখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের হিমাগারে রাখা হয়েছে। সোমবার সকালে প্রথমে কবির মরদেহ শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে নেওয়া হবে। সর্বস্তরের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মরদেহ নেওয়া হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে। তারপর বাংলা একাডেমিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হবে।

রফিক আজাদ ১৯৪১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানার গুণী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা সলিম উদ্দিন খান ছিলেন একজন সমাজসেবক এবং মা রাবেয়া খান ছিলেন আদর্শ গৃহিণী। দুই ভাই-এক বোনের মধ্যে তিনি সর্বকনিষ্ঠ। তারা ছিলেন তিন ভাই-দুই বোন। কিন্তু তার জন্মের আগে মারা যায় সর্বজ্যেষ্ঠ ভাই মাওলা ও তারপর আরেক বোন খুকি। রফিক আজাদ যখন মায়ের গর্ভে তখন অকাল প্রয়াত বড় বোন অনাগত ছোট ভাইয়ের নাম রেখেছিলেন ‘জীবন’।

শিক্ষাজীবন: ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি স্কুলের তৃতীয় শেণির ছাত্র রফিক ভাষা শহীদদের স্মরণে বাবা-মায়ের কঠিন শাসন অস্বীকার করে খালি পায়ে মিছিল করেন। ভাষার প্রতি এই ভালোবাসা পরবর্তী জীবনে তাকে তৈরি করেছিল একজন কবি হিসেবে, আদর্শ মানুষ হিসেবে। ১৯৫৬ সালে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র থাকা অবস্থায় একবার বাবার হাতে মার খেয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন বাড়ি থেকে। উদ্দেশ্য, পি সি সরকারের কাছে ম্যাজিক শেখা। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ স্কুলের হেডমাস্টার তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে বাড়িতে পাঠান। কৈশোরে লাঠি খেলা শিখতেন নিকটাত্মীয় দেলু নামের একজনের কাছে। তিনি সম্পর্কে রফিক আজাদের দাদা। দেলু দাদা ছিলেন পাক্কা লাঠিয়াল। গ্রামে নানা কিংবদন্তির প্রচলন ছিল তার নামে। সলিম উদ্দিনের চেয়ে তিনি বয়সে বড় হলেও গা-গতর দেখলে পালোয়ান বলেই মনে হতো। দেলু দাদা খুব আদর করতেন রফিক আজাদকে। এছাড়া গুণী গ্রামের পাশেই মনিদহ গ্রাম। এখানকার ষাট শতাংশ অধিবাসী ছিল নিম্নশ্রেণির হিন্দু সম্প্রদায় ভুক্ত। সুতার, ধোপা, দর্জি, চাষা ইত্যাদি। এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েরাই ছিল রফিক আজাদের শৈশব-কৈশোরের বন্ধু। সাধুটী মিডল ইংলিশ স্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণি পাস করে ভর্তি হলেন কালিহাতি রামগতি শ্রীগোবিন্দ হাই ইংলিশ স্কুলের নবম শ্রেণিতে। বাড়ি থেকে প্রায় তিন-চার মাইল দূরত্বে স্কুল। কালিহাতি সংলগ্ন গ্রাম হামিদপুরের এক দরিদ্র গেরস্থের বাড়িতে পেইং গেস্ট হিসেবে থেকে তিনি পড়াশোনা করেন। হামিদপুরে আগের মতো আর সেই বিধিনিষেধ নেই। কালিহাতি হাইস্কুলে পড়ার সময় বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে সতীর্থ মাঈন উদ্দিন আহমদের সঙ্গে। সে ছিল ক্লাসের ফার্স্ট বয় এবং অত্যন্ত মেধাবী। সাহিত্যপাঠে আগ্রহ ছিল তার। এই মাঈনই রফিক আজাদের আড্ডার প্রথম গুরু। হামিদপুরে তার সঙ্গে শুরু হয় তুখোড় আড্ডা। তার মুখেই প্রথম মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম শোনেন। দিবারাত্রির কাব্য, পুতুল নাচের ইতিকথা, পদ্মানদীর মাঝি প্রভৃতি উপন্যাসের সঙ্গে পরিচিত হন। মাঈন একদিন সন্ধ্যাবেলা ফটিকজানি নদীর তীর ঘেঁষা ডাকবাংলোর বারান্দায় বসে রবীন্দ্রনাথের ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ কবিতাটি পুরো আবৃত্তি করে শুনিয়েছিলেন তাকে। সেই কবিতা শুনে স্বপ্নাবিষ্ট হয়ে পড়েছিলেন কিশোর রফিক আজাদ। অবাধ স্বাধীনতা, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় পড়ে নবম শ্রেণিতে ভালোভাবে পাস করতে পারলেন না আড্ডাপ্রিয় রফিক আজাদ। মাঈনও প্রথম থেকে তৃতীয় স্থানে চলে আসে। আড্ডার অন্য বন্ধুদের অনেকেই একাধিক বিষয়ে ফেল করে বসল। সারা বছর অহেতুক আড্ডা দিয়ে পরীক্ষায় এই দশা। অবশেষে ব্রাহ্মণশাসন হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করেন।

কর্মজীবন: রফিক আজাদ বাংলা একাডেমির মাসিক সাহিত্য পত্রিকা উত্তরাধিকার এর সম্পাদক ছিলেন। রোববার পত্রিকাতেও রফিক আজাদ নিজের নাম উহ্য রেখে সম্পাদনার কাজ করেছেন। তিনি টাঙ্গাইলের মওলানা মুহম্মদ আলী কলেজের বাংলার লেকচারার ছিলেন। রফিক আজাদের প্রেমের কবিতার মধ্যে নারীপ্রেমের একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে। রফিক আজাদ ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা৷ তিনি ১৯৭১ সালে কাদের সিদ্দিকীর সহকারী ছিলেন ৷

প্রকাশিতগ্রন্থ : অসম্ভবের পায়ে, সীমাবদ্ধ জলে সীমিত সবুজে, চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া, পাগলা গারদ থেকে প্রেমিকার চিঠি, প্রেমের কবিতাসমগ্র, বর্ষণে আনন্দে যাও মানূষের কাছে, বিরিশিরি পর্ব, রফিক আজাদ শ্রেষ্ঠকবিতা, রফিক আজাদ কবিতাসমগ্র, হৃদয়ের কী বা দোষ, কোনো খেদ নেই, প্রিয় শাড়িগুলো প্রভৃতি।

পুরস্কারওসম্মাননা : একুশে পদক, (২০১৩), বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ুন কবির স্মৃতি (লেখক শিবির) পুরস্কার (১৯৭৭), আলাওল পুরস্কার (১৯৮১), কবিতালাপ পুরস্কার (১৯৭৯), ব্যাংক পুরস্কার (১৯৮২), সুহৃদ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৯), কবি আহসান হাবীব পুরস্কার (১৯৯১), কবি হাসান হাফিজুর রহমান পুরস্কার (১৯৯৬), বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা (১৯৯৭)।



এ পাতার আরও খবর

হাসিনা ফ্যাসিস্ট নন, বরং প্রতিশ্রুতিতে ব্যর্থ গণতান্ত্রিক শাসক” — তসলিমা নাসরীন হাসিনা ফ্যাসিস্ট নন, বরং প্রতিশ্রুতিতে ব্যর্থ গণতান্ত্রিক শাসক” — তসলিমা নাসরীন
আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ তিতাস গ্যাস পিয়ন হেলাল কি আইনের ঊর্ধ্বে? আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ তিতাস গ্যাস পিয়ন হেলাল কি আইনের ঊর্ধ্বে?
বালাগঞ্জ-গহরপুরে রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের স্বপ্নের মেগা প্রকল্প বালাগঞ্জ-গহরপুরে রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের স্বপ্নের মেগা প্রকল্প
রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত
বেতন-বোনাস’র টাকায় তিতাস গ্যাস পিয়ন হেলাল’র কয়েক কোটি টাকার সম্পদ বেতন-বোনাস’র টাকায় তিতাস গ্যাস পিয়ন হেলাল’র কয়েক কোটি টাকার সম্পদ
“সাম্রাজ্যবাদের পুতুল নয়, প্রকৃত জনগণের সরকার চাই”-বামপন্থী নেতা মোশরেফা মিশু “সাম্রাজ্যবাদের পুতুল নয়, প্রকৃত জনগণের সরকার চাই”-বামপন্থী নেতা মোশরেফা মিশু
ভূমি সেবা সত্যিকারার্থে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে: ভূমি সচিব ভূমি সেবা সত্যিকারার্থে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে: ভূমি সচিব
জরিপ এলাকা গরীব” জরিপ এলাকা গরীব”" সিদ্ধিরগঞ্জে বিডিএস জরিপ’র রেকর্ড হস্তান্তরে সার্ভেয়ার হাফিজ-মারুফ গংদের ঘূষ বাণিজ্য রুখবে কে?
খাগড়াছড়িতে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি খাগড়াছড়িতে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি
বিএনপি নেতা হাবিবুল্লাহ রানার চাঁদাবাজি ও মামলা বাণিজ্যে অতিষ্ঠ দীঘিনালা উপজেলাবাসী বিএনপি নেতা হাবিবুল্লাহ রানার চাঁদাবাজি ও মামলা বাণিজ্যে অতিষ্ঠ দীঘিনালা উপজেলাবাসী

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)