শিরোনাম:
ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

Daily Pokkhokal
সোমবার, ৮ জুন ২০১৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর » কুড়িগ্রামে আইএপিপি প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক দূর্নীতি
প্রথম পাতা » জেলার খবর » কুড়িগ্রামে আইএপিপি প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক দূর্নীতি
৩১৬ বার পঠিত
সোমবার, ৮ জুন ২০১৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

কুড়িগ্রামে আইএপিপি প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক দূর্নীতি

---

কুড়িগ্রাম  মোঃ রফিকুল ইসলামঃ কুড়িগ্রাম জেলায় সরকারের জিএএফএসপি’র অর্থায়নে ইন্টিগ্রেটেড এগ্রিকালচারাল প্রোডাক্টিভিটি প্রজেক্ট (আইএপিপি) নামক প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে কোটি কোটি টাকা জেলা সমন্বয়কারি সিরাজুল ইসলাম’র যোগ সাজসে লোপাট করা হচ্ছে বলে মাঠ পর্যায়ের দরিদ্র মানুষে অভিযোগ। এ ব্যাপারে মাননীয় কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে সাধারন মানুষ।

বাংলাদেশ সরকার জিএএফএসপি’র অর্থায়নে ইন্টিগ্রেটেড এগ্রিকালচারাল প্রোডাক্টিভিটি প্রজেক্ট (আইএপিপি) নামক একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পটি দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে চারটি করে মোট আটটি জেলায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় সম্মিলিতভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার পক্ষে বিশ্বব্যাংক প্রকল্পটির বিনিয়োগ অংশ বাস্তবায়নে সহায়তা করছে এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এতে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। প্রকল্পের বাস্তবায়নের জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬৭.৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ প্রায় ৪৯৯.৫০ কোাটি টাকা। এর মধ্যে ৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৩৭০ কোটি টাকা ইউএসএ, কানাডা, স্পেন, দক্ষিণ কোরিয়া, বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনসহ অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীর অনুদানে গঠিত গ্লোবাল এগ্রিকালচার এন্ড ফুড সিকিউরিটি প্রোগ্রাম ট্রাস্ট ফান্ড থেকে দেয়া হচ্ছে। বাকি ১৭.৫ মিলিয়ন ডলার তথা ১২৯.৫০ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার প্রদান করছে। প্রকল্পের মূল উন্নয়ন লক্ষ্য হচ্ছে প্রকৃতি-প্রতিকূল ও অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর এলাকায় কৃষিজ, প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য উপখাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি। যেহেতু প্রকল্প এলাকা মূলত দরিদ্র, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক অধ্যুষিত এবং প্রকল্পে তারাই টার্গেট গ্রুপ সেহেতু তাদের কর্মসংস্থান, খাদ্যা নিরাপত্তা, দারিদ্র হ্রাস ও জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাই মুল উদ্দেশ্য। প্রকল্পটির অন্যতম তিনটি প্রধান অংশ হচ্ছে (১) প্রযুক্তি উদ্ভাবন, (২) প্রযুক্তি প্রসার ও (৩) পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা। প্রযুক্তি উদ্ভাবন অংশে বিভিন্ন প্রতিকূলতা সহায়ক যেমন লবণাক্ততা, খরা ও বন্যায় টিকে থাকতে সক্ষম ফসল ও মৎস্য জাতের উন্নয়ন ও রিলিজ করা । প্রযুক্তি প্রসার অংশে ফসল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপ-খাতে উন্নত ও মানসম্পন্ন বীজের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি, উন্নত ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন পদ্ধতি প্রদর্শনী ইত্যাদি মারফত উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করা । পানি ব্যবস্থাপনা অংশে মূলতঃ ভূ-উপরিভাগের পানি সংরক্ষণ ও সেচ কাজে এর স্থায়িত্বশীল ব্যবহার এবং সেচের পানির উত্তম ব্যবহার অগ্রাধিকার পাবে। এর আওতায় খাল পূন:খনন ও ক্ষুদ্র সেচ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা এবং কৃষক সংগঠনের দক্ষতা বৃদ্ধি করা হবে। প্রকল্প মারফত মোট আটটি জেলায় বরিশাল, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, বরগুনা, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও লালমনিরহাট ২ লাখ ফসল চাষী, ৭৫ হাজার মৎস্য চাষী ও ৭৫ হাজার হাস-মুরগী/গবাদিপশু চাষী সরাসরি উপকৃত হবে। উপকৃত কৃষকরা হবে প্রাম্ভিক ও ক্ষুদ্র কৃষক। মোট উপকার ভোগীর শতকরা ২৫ জন হবে মহিলা। প্রকল্প মারফত কৃষক গ্রুপ গঠন করে এবং কৃষক গ্রুপের ক্ষমতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পের মূল ষ্টেকহোলন্ডার ৮টি জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষক, মৎস্য চাষী, ভূমিহীন, মহিলা ও আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত জনগণ। দ্বিতীয় পর্যায়ের ষ্টেকহোল্ডার বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং অত্র দুই মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন সংস্থা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান। দাতা সংস্থা, জিএএফএসপি এর পক্ষে প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট সুপারভাইজিং এনটিটি বিশ্বব্যাংক ও এফএও এর ষ্টেকহোল্ডার। এ প্রকল্পটি কৃষি খাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, দারিদ্র হ্রাস ও খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধি ইত্যাদি ক্ষেত্রে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রাখবে। ইতিবাচক প্রভাব জোরদার করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যাদি এই ফ্রেমওয়ার্কে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। অথচ কুড়িগ্রাম জেলায় আইএপিপি প্রকল্পের খসড়া সামাজিক ব্যবস্থাপনা ফ্রেমওয়ার্কের সারসংক্ষেপ বাংলা অনুবাদ করে জনগণের অবগতির জন্য উন্মুক্ত স্থানে প্রদর্শন করা হয় নাই। স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকা ও ওয়েব সাইটে এ সকল স্থান ও যোগাযোগের জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসের ঠিকানা বাংলা ও ইংরেজিতে প্রচার করা হয় নাই। সামাজিক ব্যবস্থাপনা ফ্রেমওয়ার্কের অংশ হিসেবে আদিবাসী জনগোষ্ঠি ব্যবস্থাপনা ফ্রেমওয়ার্ক সঠিক ভাবে তৈরী করা হয় নাই। এতে বিশেষতঃ প্রকল্পের তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি ও উপকৃত হওয়ার বিষয়াদি অন্তুভুর্ক্ত হয় নাই; সামাজিক ব্যবস্থাপনা ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় জেন্ডার ব্যবস্থাপনা ফ্রেমওয়ার্ক অন্তুর্ভুক্ত সঠিক ভাবে হয় নাই। সামাজিক ব্যবস্থাপনা ফ্রেমওয়ার্কের সাথে মনিটরিং ও মূল্যায়ন ফ্রেমওয়ার্ক অন্তর্ভুক্ত থাকার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট বাস্তবায়ন প্রতিষ্ঠান ও মন্ত্রণালয় মারফত অভ্যন্তরীণ মনিটরিং ছাড়াও বহিস্থঃ বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান মারফত মনিটরিং ও মূল্যায়নের ব্যবস্থা যথাযথ ভাবে হয় নাই। কুড়িগ্রাম জেলায় আইএপিপি প্রকল্প বাস্তবায়নে শুরু থেকেই ব্যাপক দূর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। হত দরিদ্র মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে আইএপিপি প্রকল্প কোন কাজে আসছে না। বিভিন্ন দপ্তরের সমন্বয়ে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটি কতিপয় সরকারি কর্মকর্তার পেট মোটাতাজা করন প্রকল্পে পরিনত হয়েছে। কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ সিরাজুল ইসলাম গত ২০১২ ইং সালের মে মাসে মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে পেশনে আইএপিপি প্রকল্পে অন্তভুক্ত হন এবং ২০১২ ইং সালের জুলাই মাসে তিনি আইএপিপি প্রকল্পের কুড়িগ্রাম জেলা সমন্বয়কারি হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। আইএপিপি প্রকল্পের কুড়িগ্রাম জেলা সমন্বয়কারি সিরাজুল ইসলাম অফিসে ঠিকমত না এসেও নিয়মিত বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন। প্রায় সময় তার অফিসে গিয়ে তাকে পাওয়া যায় না। মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি মাঠে অথবা রংপুর কিংবা ঢাকায় আছেন বলে জানানো হয়। আইএপিপি প্রকল্পের তথ্য চাইলে তা নেই বলে দাবী করা হয়। সাধারন মানুষ এ ব্যাপারে মাননীয় কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে । অপর দিকে কুড়িগ্রাম জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ হাসান ইমাম জানায়, আইএপিপি প্রকল্পের সকল প্রকার তথ্য কুড়িগ্রাম জেলা সমন্বয়কারি সিরাজুল ইসলাম’র কাছে রয়েছে। জেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের মাধ্যমে আইএপিপি প্রকল্পের যে কাজ গুলি বাস্তবায়িত হয়েছে শুধু ওই তথ্য টুকু তাদের দপ্তরে রয়েছে।এ দিকে কুড়িগ্রাম জেলায় আইএপিপি প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা জেলা সমন্বয়কারি সিরাজুল ইসলাম’র যোগ সাজসে প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে লোপাট করা হচ্ছে বলে মাঠ পর্যায়ের দরিদ্র মানুষে অভিযোগ। তাকে দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে আইএপিপি প্রকল্প সচ্ছতার সাথে বাস্তবায়ন করা এবং দরিদ্র মানুষ জনদের সুবিধা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা সময়ের দাবী হয়ে উঠেছে।
বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আইএপিপি প্রকল্পের কুড়িগ্রাম জেলা সমন্বয়কারি সিরাজুল ইসলাম গতকাল রোববার দুপুরে  মোবাইলে জানায়, আমার কাজটাই মাঠে এ কারনে মাঠেই বেশি সময় থাকি । সাংবাদিকদের দাওয়াত দিয়ে কিছু জানানোর বা ওয়ার্ক সপ করে জানানোর কোন নির্দেশনা মন্ত্রনালয়ের নেই। দুর্নীতির বিষয় গুলি সঠিক নয়।



এ পাতার আরও খবর

নেত্রকোণায় আওয়ামী লীগের নেতাকে কুপিয়ে হত্যা নেত্রকোণায় আওয়ামী লীগের নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
জামালপুরের সরিষাবাড়ী থানা হাজতে আসামির মৃত্যু জামালপুরের সরিষাবাড়ী থানা হাজতে আসামির মৃত্যু
মায়ের কবরের পাশে সমাহিত হলেন সিরাজুল আলম খান মায়ের কবরের পাশে সমাহিত হলেন সিরাজুল আলম খান
সিএমএসডি) কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পিয়ন সোহেল কোটি কোটি টাকা  ও পাঁচ তলা নির্মাণাধীন বাড়ির মালিক। সিএমএসডি) কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পিয়ন সোহেল কোটি কোটি টাকা ও পাঁচ তলা নির্মাণাধীন বাড়ির মালিক।
দ্রব্যমূল্যে আগুন জনগন বেসামাল দ্রব্যমূল্যে আগুন জনগন বেসামাল
কুমিল্লা দাউদকান্দিতে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত কুমিল্লা দাউদকান্দিতে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
প্রাথমিক শিক্ষায় বিশেষ অবদান   দেশের শ্রেষ্ঠ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন মোহাম্মদ আলি প্রাথমিক শিক্ষায় বিশেষ অবদান দেশের শ্রেষ্ঠ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন মোহাম্মদ আলি
সেনাবাহিনীর অর্থায়নে পানছড়িতে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ সেনাবাহিনীর অর্থায়নে পানছড়িতে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ
ভিক্ষুকের কোলে ৬ মাসের ছেলেকে রেখে পালিয়েছে নিষ্ঠুর মা! ভিক্ষুকের কোলে ৬ মাসের ছেলেকে রেখে পালিয়েছে নিষ্ঠুর মা!
লক্ষ্মীপুরে মেঘনা নদীতে দুই মাস  মাছ ধরা নিষেধ লক্ষ্মীপুরে মেঘনা নদীতে দুই মাস মাছ ধরা নিষেধ

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)