
শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » অপরাধ | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তিন দলের বৈঠক: কূটনীতি না কি গোপন রাজনৈতিক সমন্বয়?
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তিন দলের বৈঠক: কূটনীতি না কি গোপন রাজনৈতিক সমন্বয়?
২৩ আগস্ট ২০২৫
বাংলাদেশে দীর্ঘ ১৩ বছর পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর নিঃসন্দেহে একটি কূটনৈতিক ঘটনা। তবে এই সফরের ছায়ায় অনুষ্ঠিত বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির সঙ্গে পৃথক বৈঠকগুলো রাজনৈতিক মহলে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বিশেষত, যখন বৈঠক শেষে কোনো পক্ষই গণমাধ্যমের সামনে বক্তব্য রাখতে রাজি হয়নি, তখন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বাইরে রাজনৈতিক সমন্বয়?
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে জামায়াত ও এনসিপি-যাদের সাংবিধানিক অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ এবং নিবন্ধন সংক্রান্ত জটিলতা রয়েছে-তাদের সঙ্গে একটি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক আলোচনা কি কেবল আঞ্চলিক সহযোগিতার উদ্দেশ্যে? নাকি এটি একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক সমন্বয়ের ইঙ্গিত বহন করে, যা অন্তর্বর্তী সরকারের ছত্রছায়ায় সংঘটিত হচ্ছে?
বৈঠকের বিষয়বস্তু: আঞ্চলিক শান্তি না কৌশলগত পুনর্বিন্যাস?
জামায়াত নেতা আবদুল্লাহ তাহেরের ভাষ্যমতে, সার্ক পুনরায় চালু করা, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং অমীমাংসিত ইস্যু নিষ্পত্তির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এনসিপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোনো আগ্রাসী বা আধিপত্যবাদী মানসিকতা থাকবে না। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়-এই প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের জন্য কী ধরনের কাঠামো বা চুক্তি প্রস্তাব করা হয়েছে? এবং কেন তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি?
গণমাধ্যমের প্রতি নীরবতা: স্বচ্ছতার অভাব
বিএনপির নেতারা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি। এটি একটি গণতান্ত্রিক দলের জন্য অস্বাভাবিক আচরণ, বিশেষত যখন তারা একটি বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করে। এই নীরবতা রাজনৈতিক জবাবদিহিতার ঘাটতি এবং জনআস্থার সংকটকে আরও ঘনীভূত করে।
আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও পানিসম্পদ ইস্যু: বাস্তব নাকি প্রতীকী আলোচনা?
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর মতে, পানিসম্পদ নিয়ে সম্ভাব্য সংকট ও যুদ্ধের ঝুঁকি আলোচনায় এসেছে। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে কোনো যৌথ বিবৃতি বা চুক্তির খসড়া প্রকাশ করা হয়নি। ফলে এটি কতটা কার্যকর আলোচনা ছিল, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।
কূটনৈতিক সফর না রাজনৈতিক পুনর্বিন্যাসের সূচনা?
এই সফরকে পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্কের “মাইলফলক” বলা হলেও, এর অন্তর্নিহিত রাজনৈতিক বার্তা ও দলীয় সমন্বয়ের প্রকৃতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা জরুরি। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে রাজনৈতিক দলগুলোর বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে গোপন বৈঠক গণতান্ত্রিক স্বচ্ছতা ও জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী হতে পারে।
লন্ডন থেকে বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন |