
মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি | সম্পাদক বলছি » মতামত | নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে অধ্যাপক নজরুলের বক্তব্য: প্রশ্নবিদ্ধ আত্মবিশ্বাস না গণতান্ত্রিক দায়?
মতামত | নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে অধ্যাপক নজরুলের বক্তব্য: প্রশ্নবিদ্ধ আত্মবিশ্বাস না গণতান্ত্রিক দায়?
শফিকুল ইসলাম কাজল গুম ভিক্টিম তারিখ: ১৯ আগস্ট ২০২৫
সচিবালয়ে সাংবাদিক
দের প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ঘোষণা দিয়েছেন, “ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, এরপর আমরা বিদায় নেব।” তিনি আরও বলেন, নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব সরকারের, দলের নয়-এবং সরকার এই বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
এই বক্তব্যে একদিকে আত্মবিশ্বাসের ছাপ থাকলেও, অন্যদিকে তা গণতান্ত্রিক শিষ্টাচার ও জনগণের আস্থার প্রশ্নে গভীর উদ্বেগের জন্ম দেয়। কারণ, নির্বাচনকালীন সরকারের কাঠামো, নিরপেক্ষতা এবং গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে এখনও স্পষ্ট কোনো রূপরেখা নেই।
নির্বাচনকালীন সরকার: জনগণের দাবি ও বাস্তবতা
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নির্বাচনকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। জনগণ চায় এমন একটি সরকার, যা নির্বাচনের সময় দলীয় প্রভাবমুক্ত, প্রশাসনিকভাবে নিরপেক্ষ এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে গ্রহণযোগ্য। অধ্যাপক নজরুলের বক্তব্যে সেই কাঠামোর কোনো ব্যাখ্যা নেই-বরং “আমরা ফেব্রুয়ারিতে চলে যাব” জাতীয় মন্তব্যে একটি দলীয় সরকারের আত্মঘোষিত নিরপেক্ষতার দাবি উঠে এসেছে, যা বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
গণতন্ত্রের মানদণ্ডে প্রশ্ন
যে সরকার নিজেই নির্বাচন আয়োজন করবে, নিজেই বিদায় নেয়ার সময় নির্ধারণ করবে, এবং নিজেই সংস্কারের আইন প্রণয়ন করবে-তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক। দুর্নীতি দমন কমিশন ও নির্বাচন কমিশন সংস্কারের কথা বলা হলেও, সেই প্রক্রিয়া কতটা অংশগ্রহণমূলক বা স্বচ্ছ হবে, তা স্পষ্ট নয়।
রাজনৈতিক কথাবার্তা বনাম জনগণের প্রত্যাশা
অধ্যাপক নজরুল বলেছেন, “রাজনৈতিক দল বিভিন্ন উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কথা বলে”-এটি সত্য হলেও, জনগণের প্রত্যাশা রাজনৈতিক কথাবার্তার চেয়ে বেশি। তারা চায় একটি বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক, এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নির্বাচন।
আমাদের অবস্থান
আমরা মনে করি, অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে-যা দলীয় প্রভাবমুক্ত, প্রশাসনিকভাবে গ্রহণযোগ্য এবং সকল রাজনৈতিক দলের আস্থার জায়গা হতে পারে। এই সরকারকে নির্বাচন কমিশনের সংস্কার, ভোটার তালিকা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং পর্যবেক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।
অন্যথায়, “ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন” একটি দলীয় ঘোষণা হয়ে থাকবে-গণতন্ত্রের প্রতিশ্রুতি নয়।