
বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫
প্রথম পাতা » বিশ্ব সংবাদ » পারস্য উপসাগরে গুচ্ছ গুচ্ছ মাইন! হরমুজ় প্রণালী বন্ধের চেষ্টা ইরানের? উদ্বেগে মার্কিন গোয়েন্দারা
পারস্য উপসাগরে গুচ্ছ গুচ্ছ মাইন! হরমুজ় প্রণালী বন্ধের চেষ্টা ইরানের? উদ্বেগে মার্কিন গোয়েন্দারা
আনন্দবাজার : ০২ জুলাই ২০২৫
সংবাদসংস্থা রয়টার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ১৩ জুন ইরানে ইজ়রায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কিছু সময় পর থেকেই পারস্য উপসাগরে তৎপরতা শুরু করেছিল তেহরান। সেখানকার জাহাজগুলিতে সামুদ্রিক মাইন ভরে দেওয়া হচ্ছিল।
পারস্য উপসাগরের জাহাজগুলিতে গুচ্ছ গুচ্ছ সামুদ্রিক মাইন ভরে রেখেছিল ইরান। ইজ়রায়েলের সঙ্গে সংঘাত চলাকালীন এই প্রক্রিয়া চলছিল। মার্কিন গোয়েন্দাদের হাতে সেই তথ্য আসার পর থেকে তাঁরা উদ্বেগে। মনে করা হচ্ছে, হরমুজ় প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ইরান। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু শেষমেশ পরিকল্পনা তারা বাস্তবায়িত করেনি। পারস্য উপসাগর এবং ওমান উপসাগরের মাঝের অংশ হরমুজ় প্রণালী নামে চিহ্নিত। সারা বিশ্বের বাণিজ্যে এই পথ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকা-সহ বহু দেশের বাণিজ্যিক পণ্যবাহী জাহাজ এই হরমুজ় প্রণালী দিয়ে যাতায়াত করে। এই প্রণালী বন্ধ করা হলে বিশ্বের বাণিজ্যে তার প্রভাব হত ভয়াবহ। ফলে ওই অঞ্চলে ইরানের পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বিগ্ন গোয়েন্দারা।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ১৩ জুন ইরানে ইজ়রায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কিছু সময় পর থেকেই পারস্য উপসাগরে তৎপরতা শুরু করেছিল তেহরান। সেখানকার জাহাজগুলিতে সামুদ্রিক মাইন ভরে দেওয়া হচ্ছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন গোয়েন্দাকর্তারা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন। গোয়েন্দাদের অনুমান, বিশ্বের ব্যস্ততম এই বাণিজ্যপথ স্তব্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল ইরান। সেই কারণেই জাহাজে মাইন ভরা হচ্ছিল। হরমুজ প্রণালীর মুখে জাহাজগুলি প্রস্তুত ছিল। তেহরান থেকে সবুজ সঙ্কেত পেলেই ঘটত বিস্ফোরণ। কিন্তু প্রস্তুতি সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত এই নির্দেশ দেয়নি ইরানের সরকার। যদি তা হত, তবে পশ্চিম এশিয়ার সংঘাত আরও গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছোতে পারত। আরও জোরালো হতে পারত যুদ্ধ।
পরিসংখ্যান বলছে, সারা বিশ্বের বাণিজ্যিক তেল ও গ্যাসের পাঁচ ভাগের এক ভাগ হরমুজ় প্রণালী দিয়ে যাতায়াত করে। তা আটকে গেলে বিশ্ব জুড়ে হু হু করে বেড়ে যেতে পারে জ্বালানির দাম। কিন্তু আদতে তা হয়নি। ইজ়রায়েলের সঙ্গে ইরানের সংঘাতের কয়েক দিনের মাথায় আমেরিকা তাতে যোগ দেয়। ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণুকেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাহিনী। এর পরেই ইরান এবং ইজ়রায়েলের যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করে দেন ট্রাম্প। ফলে পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনা আর বাড়েনি। ইরানে আমেরিকার হামলার পর থেকে বিশ্বের বাজারে জ্বালানি তেলের দাম তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ১০ শতাংশ কমে গিয়েছে।
গত কয়েক বছরে হরমুজ় প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলে একাধিক বার হুমকি দিয়েছে ইরান। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এক বারও সেই হুমকি বাস্তবায়িত হয়নি। ইজ়রায়েলের সঙ্গে সংঘাতের ঠিক কোন পর্যায়ে পৌঁছে পারস্য উপসাগরের জাহাজে মাইন ভরা শুরু করেছিল ইরান, তা নিশ্চিত করতে পারেনি রয়টার্স। মাইনগুলি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে কি না, তা-ও এখনও নিশ্চিত নয়। মনে করা হচ্ছে, উপগ্রহচিত্রের মাধ্যমে এই সংক্রান্ত তথ্য জানতে পেরেছেন মার্কিন গোয়েন্দারা।